অনিরুদ্ধ সাজ্জাদের তিনটি কবিতা
বেলাশেষে
অভাব গোনার নামতা শিখিনি বলে
এখন তোমার অভাবও বুঝতে পারি না,
দিন-রাত গুনে আধো ঘুমে নির্ঘুমে ছুটি,
দৌড়াই জীবিকা বিত্ত শাটলের পিছু;
বেলাশেষে দীর্ঘশ্বাস ফেলার মতো যদি মেলে কিছু।
শূন্য শূন্য সব শূন্যতাবোধের কোলাহলে ডুবে থাকি
শ্বাসরোধ করে চোখ বুজে না দেখার ভান করে থাকি
অসম্ভবের পাহাড় গড়ার স্বপ্ন দেখি না বলে রাখি মাথা নিচু;
বেলাশেষে স্বস্তিবোধের মতো যদি মেলে কিছু।
হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্তি বোঝে না পা, আরও জোরে হাঁটি,
মুদ্রাস্ফীতি পেরোতে পারি না তবু।
চার কোণা স্ক্রিনের আলোয় বুঁদ হয়ে থেকে
তারা দেখার ফুরসত মেলে না, চেপে বসে মায়োপিয়া।
বেলা শেষ হয়, প্রয়োজনও ফুরোয়,
বিকল অবশিষ্টাংশটুকুর নিষ্কাশন ব্যবস্থার নাম কবর;
সাড়ে তিন ফিট পনেরো বছরের বরাদ্দে এক কোটি টাকা।
****
উৎসর্গ
তোমার জন্য তুলে রাখি ফুল, কিছু ভুল
পাতা ঝরা ভোর, ঘুম জড়ানো হাসি
মনের চৌকাঠ পেরিয়ে এসে যদি বলো ভালোবাসি।
যদি সন্ধ্যামালতি খোঁপায় গুঁজে ভাঙাও অভিমান
যদি মধ্যরাতে ফোনের ওপাশে গুনগুনে গাও গান
যদি থাকো পাশে ছায়া হয়ে শিশির মাড়িয়ে পায়ে
যদি থাকো আমার হয়ে, আমারে পাওয়ার অভিপ্রায়ে;
তবে জেনো প্রতি প্রাতঃ সান্ধ্যে তোমারে কেবল স্মরি
দিলাম জীবন তোমারই জন্য উৎসর্গ করি।
****
খোঁজ
এই রাতগুলো ঘুম চোর
এই আলসেমি ভোরে
ঘুমঘোরে রোজ একবার করে
খোঁজ হয়ে যায় তোর।
এই দিনভর জ্বর ছেড়ে
আড়মোড়া ভেঙে ঘর ছেড়ে
দুই ক্রোশ হেঁটে আসা ভুঁইফোড়
বৃষ্টির ফোটা ঝড় ঝেড়ে
কাকভেজা হই বড়জোর,
পথজুড়ে রোজ একবার করে
খোঁজ হয়ে যায় তোর।
এসইউ/