আয়শা সাথীর দুটি কবিতা
এ তুমি কেমন তুমি
খণ্ড-বিখণ্ড প্রহরগুলোতে
কী প্রবলভাবে অস্থিরতার বান ডাকে
তোমাকে পাওয়ার সুপ্ত বাসনা;
এমন বিশদ অস্থিরতা হয়তো
দুঃস্বপ্নে নিজেকে গুপ্তহত্যা হতে দেখলেই হয়!
চূর্ণ বিচূর্ণ সময়গুলোতেও
কত প্রবলভাবে অফুরান সাধ জাগে
আজন্ম তোমাকে ভালোবাসার;
জানার সৌভাগ্য তোমাকে ছুঁয়ে গেলে
কোনোদিন হয়তো তুমিও অমরত্ব চাইতে নির্দ্বিধায়!
তোমার দৃষ্টিসীমার অন্তর্জালে
আমি হয়তো একগুচ্ছ নিকৃষ্ট বনফুল;
নতুবা তোমার সুস্নিগ্ধ স্পর্শ-সীমায়
কুষ্ঠরোগগ্রস্ত এক বিচ্ছিরি প্রেম-কাঙালি।
তাই তো জানি,
অতৃপ্ত বাসনার গুরুদণ্ডস্বরূপ
নামি-দামি ফুল ফসলে ভরা তোমার হৃদয়ে
আমার যাবজ্জীবন কারাবাস আর হয়ে ওঠেনি।
এ তুমি কেমন তুমি?
****
বেহায়া প্রেমিক হতে চাই
ডুবসাঁতার দিতে চাই তোমার মাঝে;
এতটাই ডুবতে চাই যেন চাইলেই
আমার ব্যক্তিত্ব টেনে ‘বেহায়া প্রেমিক’ নামে
নতুন কোনো উপাধিতে ভূষিত করতে পারো তুমি।
মেনে নেব নির্দ্বিধায়—আমি তো জানি
ভালোবাসার কাঙালরা বরাবরই ‘বেহায়া’।
তীব্র বাসনা মিশে যাই
তোমার অভ্যাসে, তোমার স্বভাবে
যেভাবে চায়ের কাপে নিজের গলনাঙ্ক দেখে
আহ্লাদী হয় এক চামচ বিশুদ্ধ চিনি।
কিংবা হতে পারি তোমার পূজার ফুল;
যাকে সযতনে তুলে এনে সাজাতে পারো
আদরের চাদরে ফুলসজ্জা।
না! না! বনফুল হতেও আমার আপত্তি নেই;
রাগ-অভিমান-তাচ্ছিল্যে যাকে তুমি চাইলেই
পারো ঘৃণার ঢেঁকুর গরলে অন্তিমসজ্জা বানাতে।
কথা দিচ্ছি, দিব্যি মেনে নিবো ওসব।
তোমাকে ভালোবাসি মানে
প্রবল ঝড়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি নির্দ্বিধায়,
গোটা এক পৃথিবী কাগজের ঠোঙায় ভরে
তোমার হাতে তুলে দিয়ে বলতে পারি—
‘আমি তোমাকে ভালোবাসি,
এই নাও তোমার জন্য যৎসামান্য উপহার।’
এসইউ/এমএস