আনিস ফারদীনের ছয়টি কবিতা
মাদকতার মুগ্ধতায় তুমি
সময়ের বয়সী স্রোতের সর্পিল প্রতিধ্বনিতে
অলিন্দ নিলয়ের সুস্থির চাওয়া-পাওয়ায়
বেহালায় উঠে আসে হৃদয়ের সমস্ত সুর
স্মৃতির ক্যানভাসে ধরা দাও স্নিগ্ধ মূর্ত তুমি
ধরা দেয় জীবনের সকল অসমাপ্ত কবিতা।
রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে থাকো কল্পলোকের সে তুমি
মগজের আঁকিবুঁকিতে মিশে থাকে লালিত্য স্বপ্ন
আদিম মাদকতার মুগ্ধতায় এগোয় যেন পথ
সব লালিত স্বপ্নের স্নিগ্ধ প্রকাশ নব বারতায়
সব স্নিগ্ধতার প্রতিচ্ছবিতে থাকো শুধু তুমি!
****
কবিতার ব্যঞ্জনা এবং তুমি
কবিতার ব্যঞ্জনারা ধরা দেয় তোমার নামে
কবিতার আদ্যোপান্তে থাকো তুমি
হৃদয়ের সমস্ত ভাষা স্থান পায় কবিতায়
নীরবতার ভাষা পেরিয়ে আমি হয়ে পড়ি কবি।
রোজ কবিতা পাঠাই তোমার ঠিকানায়
রুপালি খামে;
কবিতা পৌঁছাবে বলে অপেক্ষায় থাকি
জানি কবিতা পৌঁছায় রোজ।
তুমি কবিতা পড়, রোজ ভাবো
কিন্তু উত্তর দাও না
কোনো উত্তর মেলে না।
তৃষ্ণার্ত কণ্ঠে আমি হয়ে উঠি চাতক পাখি
প্রতীক্ষার খাম আর ফেরত আসে না
আমি অবাধ্য যাবাবর প্রেমিক হয়ে শুধু স্বপ্ন দেখি
আর তাকিয়ে থাকি ডাকবাক্সের পানে।
****
দীর্ঘ প্রতীক্ষার চুম্বন
অসহিষ্ণু কণ্ঠে ভালোবাসার দ্রোহ
যাপনের অনলে পোড়ে শরীর
কালাকালের লিখনে অমোঘ নিয়তি!
অবরুদ্ধ প্রতিধ্বনিতে সুস্থির স্লোগান
গদগদ ভেজা কণ্ঠে সুভাষণ, আরক্তি
ভাবনার আস্তরণে স্বপ্নের বিচ্ছুরণ।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার চুম্বনে ঝরে স্বস্তির বৃষ্টি
পূজারি মনে বয় প্রশান্তির ঝড়ো নিদ্রা
কাঁক-ভেজা শিশিরে জমে মায়ার মেদ!
কালের চাহনীতে ভাসে সুস্থির প্রতিচ্ছবি
অনাবিল কণ্ঠে বাজে গোপন আলাপন
ভালোবাসার দ্রোহে কাটে বেলা-অবেলা।
****
বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা ও তুমি
কোনো এক বৃষ্টি ভেজা মায়াবী সন্ধ্যায়
তুমি স্মৃতি হয়ে সামনে দাঁড়াও অকপটে;
নীরবে মজ্জা-মগজে এঁকে দাও তোমাকে
স্মৃতির নিখুঁত আল্পনায় যেন শুধু তুমি।
মায়াবী চাহনী, মন মাতানো স্নিগ্ধ হাসি
ভেজা কদমের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা;
বৃষ্টির টুপটাপ শব্দের মুগ্ধতায় চারপাশ
স্মৃতির সহস্র ক্যানভাসে ভাসো শুধু তুমি।
তোমার অগণন পরশ ভাবিয়ে যায় আনমনে
ব্যাকুল হৃদয়ে প্রোথিত অজস্র প্রতিচ্ছবি;
অলিন্দ-নিলয়ের মায়াবী স্মৃতির আল্পনায়
বৃষ্টি ভেজা মায়াবী সন্ধ্যা যেন শুধু তুমিময়।
****
বুকে ফুটন্ত রক্তজবা
তুমি রক্তজবা হয়ে ফুটে আছো এ বুকে
লিখনীতে শত সহস্র পদ্য;
একজীবনে অসাধ্য মুছবো তোমার নাম
তুমি হৃদয় গহীনে অনবদ্য!
মজ্জা মগজ আর বুক পাঁজরের স্থিতিতে
তোমার নামে রচিত কত গদ্য;
শত-সহস্র কাল পেরিয়েও বেঁচে রবে তুমি
তুমি জীবনের পরম আরাধ্য!
****
প্রেমে পড়ি
তোমার ওই দুধে আলতা লাল পেড়ে শাড়িতে
আমি প্রেমে পড়ি-
প্রেমে পড়ি তোমার ওই হাত ভরা চুড়িতে
কানের দুলে, বর্ণিল ঝুমকায়।
প্রেমে পড়ি তোমার খোলা চুলে
বেলি ফুলের সাদাভ খোঁপাতে কিংবা
লাল জবায় জড়ানো মিষ্টি দেহে
অঙ্গে জড়ানো যে কোনো আবরণে।
প্রেমে পড়ি তোমার রক্তিম নেইলপলিশে
কপালের লাল কিংবা কালো টিপে
পায়ের আলতায়, সুর তোলা নূপুরে-
চোখের কাজলে, ঠোঁটের মিষ্টি লিপস্টিকে।
প্রেমে পড়ি গলার কারুকার্য খচিত সেই মুক্তো মালার
নাকের নঁথে-
হৃদয় হরণ করা মাধুর্যে
প্রেমে পড়ি সেই তুমিতে।
এসইউ/জেআইএম