জান্নাতুল নাঈমের কবিতা
অনেক দুঃখিত বলার আছে এবং অন্যান্য
অনেক দুঃখিত বলার আছে
আমার তোমার কাছে অনেক দুঃখিত বলার আছে
তুমি ভীষণ ক্লান্ত
ঘুমে ঢুুলুঢুলু করে তোমার চোখ
ক্লান্ত, অবসাদে, ঘুমে তুমি নিস্তেজ হয়ে পড়
তখনো আমি জোর করে জাগিয়ে গল্প করতে থাকি
অপ্রয়োজনীয় গালগল্প শুরু করি
তখনো তুমি সব রেখে আমাকেই শুনতে থাকো
সত্যি ছেলে, আমি অনেক দুঃখিত।
আমার তোমার কাছে অনেক দুঃখিত বলার আছে
দুপুরের রোদে ভীষণ ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরো
ঘর্মাক্ত শরীরে ক্লান্তি তোমার চোখে ভেসে ওঠে
কেমন করে বিছানায় গা এলিয়ে দিতে চাও
তখনো আমি বকবক করতেই থাকি
তুমি তখনো ক্ষণিক আনন্দ নিয়ে কথা শোনো
সত্যি ছেলে, আমি ভীষণ দুঃখিত।
****
গোপন ছেলে
একটা গোপন ছেলে রোজ আমায় ডাকে
আমার হৃদয়ের পাশে বসতে চায়
আমার চোখে চেয়ে থাকার জন্য বহুকাল বৃক্ষ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
আমার জন্য বহুকাল অপেক্ষারত যাত্রী হয়ে আছে
ছেলেটি রোজ আমাকে ভালোবাসতে চায়
হয়তো একদিন ছেলেটিকে মুঠো চেপে বলবো
চলেন সংসার করি।
একদিন গোপন ছেলে রোজ বাক্যের সমহারে কথা বলে
ভীষণ ব্যস্ততায় আমার মুখটুকু দেখতে উদগ্রীব হয়ে পড়ে
আমার মুখপানে চেয়ে সকাল-সন্ধ্যা কাটাতে চায়
সমস্ত বেদনায় আমার সঙ্গ পেতে অস্থির হয়ে ওঠে
জীবনের রাস্তায় আমার হাত ধরে সুুুুখে মাততে চায়
হয়তো একদিন ছেলেটির চোখে তাকিয়ে বলবো
চলেন সংসার করি।
****
অবশ্যম্ভাবী
অনেক দূর হাঁটতে হাঁটতে ভীষণ ক্লান্ত
যেন নিজের ভেতরটুকু সোনালি শস্য মাঠের কৃষকের মতো হয়ে উঠেছি
শ্রাবণের সন্ধ্যার মতো কত বৃষ্টি ঝরিয়েছি
অন্ধকারের পথিকের মতো দিকহীন হয়েছি
এতটা ক্লান্ত যে তোমার আমার দেখা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে
অথচ আজও তুমি আমি অচেনা পথের পথিক।
অনেক দূর ভাসতে ভাসতে ভীষণ ক্লান্ত
জীবনের নদীতে সাঁতার কেটে অনেক পথ পাড়ি দিয়েছি
বর্ষা-বাদলের মতো বহুকাল কাটিয়েছি
জীবনে বহুবার পিচ্ছিল রাস্তায় একাকী হেঁটেছি
এতটা ক্লান্ত যে তোমার আমার দেখা জরুরি হয়ে উঠেছে
অথচ এই শতাব্দিতে আজও কেউ কাউকে দেখিনি।
এসইউ/এমএস