তাইজুল ইসলামের অনুগল্প: সহানুভূতি এবং শাকপাতা
সহানুভূতি
তুলনার বয়স এগারো বছর। সে প্ল্যাস্টিকের তালা সদৃশ ব্যাংকটা ভেঙে বসেছে। টিফিন ফির খুচরো বাঁচানোয় শ’পাঁচেক টাকা জমেছে ব্যাংকটায়।
‘হ্যাঁ রে মা, পাঁচশ’য় ভালো একটা ড্রেস হবে নিশ্চয়ই, কী বলিস?
‘না কাকু। আজ স্কুল থেকে ফেরার সময় দেখলাম, পুরোনো সাঁকোটার নিচে এক মা তার ছেলেকে বুকে জড়িয়ে জবুথবু হয়ে শুয়ে আছে। একটা কম্বল পেলে মায়ে-ছেলে একটু শান্তিতে ঘুমোতে পারবে। আমায় তো বাবাই সব কিনে দেন। ওদের কে কিনে দেবে বলো তো?’
****
শাকপাতা
‘শাক নেবে শাক? কচু-কলমি-হেলেঞ্চা-মালঞ্চ! টাটকা টাটকা শাক আছে! মাত্র পাঁচ টাকা আঁটি!’
বাজারের শেষ মাথায় বসে থুত্থুরে এক বুড়ি হাক পাড়ে। রূপম চাইলেই এড়িয়ে যেতে পারতো। কিন্তু যায় না। বরং বুড়ির হাতে একশ টাকার একটা নোট গুঁজে দিয়ে ক’মুঠো শাক থলেতে পুরে নেয়। এরপর তাড়াতাড়ি বাড়ির পথ ধরে।
বাড়ি ফিরতে দেরি দেখে অরুণিমা বেজায় চটেছে। তারচেয়ে বেশি চটেছে, কারণ রূপম আজ আবার একগাদা শাক নিয়ে হাজির হয়েছে।
‘বলি বাজারে গেলে কি মাথার হুঁশ খেয়ে আসো?’
রূপম মুখ লুকিয়ে মুচকি হাসে। অরুণিমার এই রোজকার বকুনি সয়ে গেছে তার। আসলে শাকপাতার এই গল্পটা তো আর অরুণিমা জানে না।
এসইউ/এমএস