বিষণ্নতার কবিতা
গোলাম রববানী
আমি হয়তো উদাসবেলা, দাঁড়িয়ে থাকা দুঃখবৃক্ষ
কারোর ইচ্ছে হলে ছায়া মাড়ায়, খানিকটা জুড়ে বসি,
খানিকটা দুঃখ চষি, চলতি পথে পরচর্চা রেখে যাই
ঝরাপাতার মতন ঝরে গিয়ে মাটিতে কামড়ে থাকি
আমি হয়তো ঝরাপাতার বংশধর; ধূলিকণা হায়...
হালকা বাতাসে উড়ে চলে ধূলিপথ মাখছি কোথায়?
আমি হয়তো সমস্ত নদী, উজান-ভাটির সঙ্গী-সাথী
মুমূর্ষুর মতো জলের ছবি-
ব্যথা লাগে না চললে জলযান, কচুর মতো কাটলেও জ্বলে না প্রাণ;
ছুঁই না মহাতরঙ্গ জল তবুও অনন্তকাল ধরে তার পটের ভেতর।
আমি হয়তো একা পাহাড়, একা কান্নার ঝরনার নীরবতা, গলছে ভীষণ, ছুঁইছে পাথর
রাত্রিবেলায় কলকলিয়ে দুরুদুরু বুকের ব্যথা-
নদী ও নারী বোধের মাথা, মন পাব, তবে এখানে না
আমি হয়তো নীলাদ্রিরও ছোঁড়াছুঁড়ির মেঘ না;
হয়তো পাহাড় ছুঁয়ে মেঘ উড়িয়ে ধরা দিই না!
মেঘগুলো সব শুভ্র সাদা; হয়তো স্তনতুল্য হিলচূড়া
নির্বিকারে চেয়ে চেয়ে শূন্যতার এ যে এক গুপ্তব্যথা।
আমি হয়তোবা ক্লান্তিহীন পড়ে থাকা ফসলকাটা মাঠ
গবাদিপশুর মত চরছি; ঝড়-বৃষ্টি, রোদ মাখছি
ঠুসি কিংবা গলায় দড়িছেঁড়া স্বাধীন
সদ্য ওঠানো ফসল বীজ অঙ্কুরিত ঘাসগুলো খাচ্ছি
ফেরার কথা ভুলেই গেছি- পরাধীনতা শুধু টানছে
আমি হয়তোবা পরাধীনতার বংশধর- থেকে যাই
স্মৃতিময়তার ভাঁজে- পড়ে থাকা ধূলিধূসরিত পটে
আমি হয়তোবা বন-বনানীর প্রদীপহীন নরম রাত
কখনো মেঘমল্লার, বাহারি রঙের আকাশের ছোঁয়া
কখনো পাখির কলতান কিংবা অবারিত পানির ধারা
কখনোবা বেলাভূমি, ঝাউবন নির্জন স্বাক্ষর...
আমি হয়তোবা বিষণ্নতার সন্তান কিংবা স্বজন
প্রতিদিন নাড়িছেঁড়া ব্যথায় প্রকম্পিত হয় ভুবন
এসইউ/এমএস