আব্দুল্লাহ নাজিম আল-মামুনের তিনটি কবিতা
একটা রাত জানে
একটা রাত জানে
তার শরীরে আঁধার কত?
অপেক্ষায় থাকে ভোরের।
একটা হৃদয় জানে
ভেঙে পুড়ে বেঁধেছে ক্ষত
সেরে যাবে দুটো হাতের স্পর্শে।
কিছু ক্ষণ জানে
তার ক্ষণের ভেতর কত দুঃখভার?
দূর হবে ছোঁয়া পেলে তোমার।
একটা আকাশ জানে
তার বুকেতে মেঘ জমেছে কত বিষণ্নতার?
কেটে যাবে খানিক বৃষ্টি হওয়ার পর।
একটা সন্ধ্যা জানে
তার বুকেতে তারকা শত
গুনলে তবে দেখতে পাবে একেক করে কত?
একটা মন জানে
তার মনেতে দুঃখ আছে কত?
জানলে তুমি বুঝতে পারবে মনের কথা
দুঃখ সব যত।
****
করুণা করে হলেও চিঠি দিয়ো
আমাদের দেখা হয়েছিল
গত হওয়া সহস্রাব্দ পূর্বে
পৌষের রঙিন বিকেলকে সাক্ষী রেখে
কথা হয়েছিল...
অমরত্ব ভালোবাসা জন্ম দেবো
দুজন দুজনার হাত ধরে।
অনন্ত নির্জনতায়
শরম ভেঙে
তুমি কথা বলেছিলে...
আহা! কী সুন্দর।
খোশগল্পে হাসিখুশি মুখে
মেতে উঠেছিল প্রেম
সুন্দর মনের সর্বনাশে
যেন তোমাকে দেখে পাশ কাটিয়ে যাওয়া
যমদূতও প্রেমে পড়ে যাবে
তারপর তোমাকে নিয়ে গেলো
দেবদূত প্রেমিকা হিসেবে
তুমি চলে গেলে... অদূরে
এখন খুব জানতে ইচ্ছে করে
দূরে... তোমার দিন কেমন কাটে?
যেথায় আছো, যেখানে থাকো
হলুদ খামের ভেতর লাল লেটার দিয়ে
পাঠিয়ে দিয়ো—জানিয়ো...
করুণা করে হলেও চিঠি দিয়ো!
****
সৌন্দর্যের দেবী
তুমি সৌন্দর্যের দেবী, হরীর লক্ষ্মী,
মনের রানি,
তোমাকে না দেখলে... তোমার
সৌন্দর্যের প্রশংসা করি কী করে?
তুমি হাঁটো, বৃন্দাবনে
সৃজনীর পথ ধরে...
তোমার সৌন্দর্যে ফুল ফোঁটে...
তুমি থাকো সুভাষে, কুঞ্জবনে,
প্রেমের সরোবরে...
‘দিব্যি খেয়ে বলছি...
তোমাকে দেখে আমার চক্ষু শীতল হয়ে যাবে’
তোমার সৌন্দর্যের কিরণ ঢুকেছে
মনে... অন্দর মহলে
যেমনি, চন্দ্রের রশ্মি প্রবাহিত হয়
সৃজনঘরে...
তোমার জন্য বিগ্রহ করে, দেবা-শোর
সমুদ্রমন্থনে...
অথচ তোমার অস্তিত্ব-সৌন্দর্য কৃষ্ণের জন্য।
হে সৌন্দর্যের দেবী, ধরণীর রূপসী,
সৃজনঘরের জননী! মহাকাল জানে;
তোমাকে দেখার লাগি...
পূজো দিই সকাল-সন্ধ্যা
তোমাকে না দেখলে... তোমার
সৌন্দর্যের প্রশংসা করি কী করে?
এসইউ/জেআইএম