ফাল্গুনের দুটি কবিতা
ফাল্গুনী গান
দখিনা বাতাসে জড়তা ভাসে
প্রকৃতি হেসে উদ্ভাসে!
অপরূপ বর্ণাঢ্য দৃশ্য আরাধ্য
জনতার চিত্ত উল্লাসে!
বসন্ত আয় সুরের খেয়ায়
নাতিশীতোষ্ণ হাওয়ায়;
প্রাণে লাগে দোলা ধরণী উতলা
ফাল্গুনী গান গায়!
ডালে ডালে নব কিশলয়
বাতাস চুমিয়ে নাড়ে!
প্রকৃতি যৌবনা উর্বশী আনমনা
সবার নজর কাড়ে!
বাহারি ফুলে চিত্ত দোলে
কোকিল উল্লাসে গায়!
বাসন্তি উন্মাদনায় শরীর চুমায়
তনুমনে নাচে হায়!
সেজেছে বাহারি পুষ্প-মঞ্জরি
রূপসী বাংলাদেশে!
বাউলের গলায় সুর মূর্ছনায়
সুর তরঙ্গের নির্যাসে!
মুকুলের গন্ধে মাতাল মৌমাছি
পথে ঘাটে ভ্রমরের গুঞ্জন!
বাগে সৌরভে প্রজাপতি নাচে
ঘরে ঘরে শুনি শিঞ্জন!
কোকিলের তানে পাপিয়ার গানে
বাংলার জনপদ মুখরিত!
গোধূলি বেলায় রাঙা আভায়
জগলুর গান সুললিত!
ফাল্গুনী ধারায় সবাই হারায়
সরবে নীরবে গৌরবে!
এ দৃশ্যপট অনবদ্য সম্পদ
শুধু বাঙালি অনুভবে!
ফাল্গুনী গান চলুক অফুরান
ভাসুক জরা ক্লান্তি!
হিংসা দ্বেষ বিবাদ বিদ্বেষ
নির্মূলে হোক প্রশান্তি!
****
ফাগুনের প্রথম দিনে
প্রেমিক হৃদয় সতত উথলায়
ফল্গুধারার প্রান্তরে!
চৈতী তৃষায় বিরহী ছটফটায়
প্রেমের শিখা অন্তরে!
মাস যায় বছর গড়ায়
যুগ হারায় মহাকালে!
হঠাৎ মুঠোফোনে সেই কণ্ঠ
ফাগুনের সাত সকালে!
প্রিয়ার ফোনে জগলু চনমনে
কী এক মহেন্দ্রক্ষণে!
আসবে সে অবশেষে
ফাগুনের প্রথম দিনে!
সবুজে, লালে, হলুদে, নীলে
সেজেছে বাংলার প্রান্তর!
কবি, বাউল, ভাবুক, জগলুর
খুশিতে উথাল অন্তর!
গাঁদা ফুলের হলুদ শাড়িতে
সাজাবে আপন কায়!
শিমুল কিংশুকের লাল রঙে
আঁচল জড়াবে গায়!
নীল টিপ কপালে এঁটে
বসবে কোমল ঘাসে!
ছোট্ট আয়নায় মুখটি দেখে
ভাসবে লাজে সহাস্যে!
দখিনা হাওয়া কুর্নিশ করে
বলবে তাঁকে যেচে!
কৃষ্ণচূড়া মিনতি করেছে
তশরিফ নিতে নিচে!
ধন্য ফাগুন ধন্য ঘাস
ধন্য কৃষ্ণচূড়ার তল!
ফল্গু হাওয়া চরম ধন্য
উড়িয়ে প্রিয়ার আঁচল!
সোনা রোদে সোনার কন্যা
যেন ঠিক বন-পরি!
তার কাছে সব তুচ্ছ
স্বর্গের দেবী অপ্সরী!
দূরে দেখেই প্রেয়সী ডাকে
কোমল হাতের ইশারায়!
লাল করতলে চুমু বিলিয়ে
প্রিয়কে স্বাগত জানায়!
ফাগুনের আগুন লাগা
দিনের দ্বি-প্রহরে!
বন পলাশের ছায়াতলে
আমিত্ব বিলীন চিরতরে!
এসইউ/এএসএম