ফেরদৌস জান্নাতুলের পাঁচটি কবিতা
অন্তরালে
ঢাকনা খুলে দেখি নিজের চোখ
খোলসের গা জুড়ে ছোপ ছোপ অশ্রুকণায়,
ঝুলন্ত বিবেক চাবুক মারে;
যখন ছুটে বেড়াই এই শহরে।
কী এই মানবজনম!
অজানা আকুতির ভোরে পা বাড়িয়ে হাঁটি
ঘাসের বুক চিড়ে সবুজের হাহাকার শুনি
****
সন্ধান
পেছনে কাতরায় দিশাহীন ন্যাংটো বোধ,
কাঁধ কচলায় মস্ত হা-ওয়ালা পৃথিবী
রক্তচোখে কেবলি নেশা
ছুটে চলে আর খুঁটে মরে,
আমি হা করে চোখ বুজে কেবলি শুঁকি।
****
ত্রিকাল খোঁজের মহড়া
চলছে ভাটফুলের মৌসুম,
কপাট খুলে গন্ধ শুঁকি যার।
কালের হাটে হাঁটতে এসে- ভুলে গেছি যৌবনের নবান্ন প্রহর; রঙিন শৈশব।
গোধূলি থেকে গ্লাসে গ্লাসে চুমুক দিতে থাকা বর্ণিল আবির,
এক অলীক সন্ধানে হাঁটে বুকের শহরে।
হাতের আদিম রেখা তুলে দিতেই দেখি
এক অচেনা কপাট, আরেক কাল সামনে যার
খোলার অপেক্ষায়
****
যাপন
যাকে জীবন্ত বলি-
পতপত করে উড়তে থাকা অভ্যাস,
দৈনন্দিন রুটিন-অঙ্কুরিত প্রতিটি ভোরের সাদা মলাট।
যাকে ভবিতব্য ভেবে জাপটে ধরি-
সেখানে বসেই পড়ন্ত রোদ খেলা করে।
আমরা একটি একটি করে প্রশ্ন তুলি, আমরা চাই, আমরা সাজাই;
ঘর, সংসার, একটু একটু করে মায়ার নদী।
আলো চাই, প্রস্ফুটিত ঘননীল আলোর চাদর-
আমাদের এই পথ থেকে শুরু করে ফের সে পথেই জিজ্ঞাসার উত্তর।
****
ক্ষুধা
পাখিদের ক্ষুধা ফুরালে ঘরে ফেরে,
মানুষের ক্ষুধা মিটে গেলে তীব্র চেঁচায়।
আকাশমুখো হাত সূর্যকে পুঁতে ফেললে,
আলোশূন্য চাঁদের যৌবনে চলে অশুভ দহন।
হাতঘর ভাতঘরে টোপঘর সাজায়,
পাহাড়ি ক্ষুধায় চলে ভারী মেকআপ;
প্রকট পারফিউমে ক্লান্ত ফুসফুস
ধীরে ধীরে রাত নামায়।
এসইউ/এমএস