গোলাম রববানীর শীত বিষয়ক কবিতা
শীতবিলাস
শীত হয়ে এসো, নিঃসঙ্গ একা ফুটপাতের মতো
শীতোষ্ণ ব্যথাতুর হৃদয়ে পরিযায়ী পাখিদের মতো,
রংপাখির গল্প হয়ে এসো; পাখির দেশে হাঁসের মতো
শীতভরা শীতে শিশিরে ফোটাও ফুল লিসিয়ানথাসে।
শীত হয়ে এসো, জুলিয়েট রোজে দুঃখীর জীবনে!
দীর্ঘশ্বাস ফেলে অনন্ত আকাশে
স্নেহ-মায়াময় আবেশে।
এসো, এসো, এতটুকু ছায়া হয়ে উষ্ণতার অনুভবে,
বাহারি পিঠার সাথে লতাপাতা জড়িয়ে ভ্রমণমৌসুমে।
শীত হয়ে এসো, প্রিয়জনের হাতে সত্য সৌন্দর্যে;
শীত এসো এসো, শতবার শতরূপে মহাপ্রেমক্রন্দনে।
খোলা আকাশের ওই ভরা ছায়াতলে শান্ত সবুজ কাননে,
শীত হয়ে এসো; ‘শান্তি মৈত্রী সাম্যে জীবনের উন্মেষে।’
শীত হয়ে এসো, এসো শীতবিলাসে মহাসুখ উল্লাসে।
****
সুখ আছে কোথায়?
কষ্ট কোথাও নেই, সুখ আছে কোথায়?
দুঃখের দরজা এঁটে বিশ্রামে আছে সুখসন্তান।
স্বপনে জাগে বিভোর ঘুমপাড়া
সুখ আছো কোথায়?
কুয়াশা অথবা তুষারপাত
ছেয়ে যায় এখানে প্রাণপতনের মতো
হাসিমুখ কালো হাঁড়ির তলা
রঙিন পৃথিবী মেলে- সুখ আছো কোথায়?
দম বন্ধ হওয়া সময় বাকি
জলের গানে হৃদয়ে বসন্ত আমি আনি
কখন জানি সময়ে বারোটা বাজা
সুখ আছো কোথায়?
কষ্ট কোথাও নেই, সুখ আছে কোথায়?
দরজা জানালা কিংবা দুয়ার যেখানে আছে আঁটা!
****
লিরিকগুচ্ছ
এক.
তুমি যদি ঠান্ডা হও বরফের মতো জমে যাবে,
সময় বুঝে গরম হও
দেখ সব বিগলিত হবে।
দুই.
সৃষ্টি বলি আর ধ্বংস বলি কিছুই আর হবে না,
যদি আমি না ডুবি; তোমার চোখের নোনাজলে!
তিন.
যদি সমস্ত ঝড়-ঝাপটা থাকে বুকের ভেতর;
কৃত্রিম বলো আর প্রাকৃতিক বলো কোন ধ্বংসলীলা-
কীভাবে ছোঁয় বলো তোমাকে আর!
চার.
বুকের ভেতর যদি থাকে বরফগলা নদী
হিমালয় কিংবা অ্যান্টার্কটিকার সমস্ত জমাপাথর
গলে যাবে নিমিষেই হয়ে যাবে পানি!
আসলে বুকের ভেতর জ্বলন্ত
দাউদাউ জ্বলা ভালোবাসার এক সুপ্ত গুপ্ত আগুন।
কবি: শিক্ষক, মুহিবুর রহমান একাডেমি, সিলেট।
এসইউ/এমএস