জান্নাতুল নাঈমের একগুচ্ছ কবিতা
মুক্তি
তুমি বলেছিলে, মুক্তি চাও
আমি তোমাকে চিরতরে মুক্তি দিয়েছি
পাখির মতো উড়ে গিয়ে ফিরে এসেছো বটে
আমি আর ভালোবাসায় নেই
মুক্ত বিহঙ্গটা আমিই হয়েছি
কোথা থেকে যে উড়েছি কিছুই মনে পড়ে না।
তুমি বলেছিলে, একাকী থাকতে চাও
কিছুদিন পর আবার তুমি আসবে
বনফুল, ঘাসফুলের মতো একাকী হাসতে শিখেছি
দূরের মেঠোপথের পিষে যাওয়া দুর্বাঘাসের মতো বাঁচতে শিখেছি
এখন তুমি আমাকে চাও
অথচ আমি একাকিত্বের সুখেই ভেসে গেছি।
****
ভীষণ ভালোবাসি
তোমায় ভীষণ ভালোবাসি
এই ভালোবাসা আকাশের মতো স্থির
মাঝেমধ্যে মনটা আকাশের মতোই রঙিন হয়
তোমার বিরহে আকাশের মতো বিদীর্ণ হয়ে চোখে জল নামে
তোমায় দেখার সুখে মনটা বর্ণিল রঙে সাজে
তোমার না দেখার যাতনার ঝলসানো শস্যের মতো মন পুড়ে যায়।
তোমায় ভীষণ ভালোবাসি
আমি আজন্মকাল তোমাকেই চাই
পৃথিবীর সমস্ত মুখে তুমি ভেসে ওঠো
ভাবনার অনন্তকাল কল্পনার প্রতিটি লাইনে তুমি আসো
তোমার শূন্যতার আকালে রোজ নিঃসঙ্গ রাত্রির মতো ক্রমশ আঁধার নামে
তোমার মুখখানি চোখেই লেগে গেছে
আমার শহরের প্রতিটি দেওয়ালে তোমার মুখ দেখি।
আমি তোমার প্রেমে মাতাল
এই মাতাল প্রেমের সুখে আমি তোমায় রোজ ভালোবেসে যাই।
****
একদিন
একদিন আমাদের এক গ্রীষ্মের ভাপসা গরমে দেখা হবে
ব্যস্ত শহরের অগণিত মানুষের ভিড়ে,
কয়েক মাইল পেছনে ফেলে এক ক্লান্তি শেষে দু’জনেই সম্মুখে আসবো
তীব্র গরমেও আমাদের হৃদয়ে শীতলতা নামবে
আমাদের এক জনমের হৃদয়েয় বিতৃষ্ণা মুহূর্তেই নেমে যাবে।
একদিন আমাদের বর্ষার তীব্র বর্ষণে দেখা হবে
দূরত্বের বেদনারা চোখের জলে শ্রাবণের জলে মুছে যাবে
একজোড়া ভেজা কদম ফুল তোমার হাতে তুলে দেবো
প্রকৃতির ঝড় বৃষ্টিতে একাকিত্বের ঘূর্ণিঝড় থামবে
এক জনমের না পাওয়া মুহূর্তেই থামবে।
একদিন আমাদের শীতের তীব্র ঠান্ডায় দেখা হবে
সেদিন আমাদের হৃদয়ের সমস্ত কুয়াশা সরে যাবে
শীতের মিষ্টি রোদের মতো প্রাণোচ্ছ্বল হাসিতে আমরা হাসবো
পুরোনো সব রংহীন স্বপ্ন হলদে সর্ষে ফুলের মতো রঙিন হবে
এক জনমের দূরত্ব মুহূর্তেই ঘুচে যাবে।
কবি: স্নাতকোত্তর শেষ পর্ব, সমাজকর্ম বিভাগ, চাঁদপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর।
এসইউ/জেআইএম