রাবিতে ‘চিহ্নমেলা’ শুরু ১৭ অক্টোবর
লেখকদের অন্যতম আসর ‘চিহ্নমেলা’ শুরু হবে আগামী ১৭ অক্টোবর। শেষ হবে ১৮ অক্টোবর। সাহিত্যপত্রিকা ‘চিহ্ন’র আয়োজনে পঞ্চমবারের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলাভবন প্রাঙ্গণে এ আসর বসতে যাচ্ছে।
চিহ্নমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি থাকবেন পশ্চিম বাংলার প্রখ্যাত লিটলম্যাগ ব্যক্তিত্ব সন্দীপ দত্ত, কবি নির্মলেন্দু গুণ, প্রাবন্ধিক ও অর্থনীতিবিদ সনৎকুমার সাহা ও কবি জুলফিকার মতিন।
জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, লেখক শহীদ ইকবালের সম্পাদনায় ‘চিহ্ন’ প্রায় দুই দশক থেকে নিয়মিত বের হচ্ছে। পত্রিকাটি ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো দেশের লেখক-লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক আর বুদ্ধিবৃত্তির মানুষদের নিয়ে আয়োজন করে চিহ্নমেলার। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে দ্বিতীয়বারের মতো, ২০১৬ সালে তৃতীয়বারের মতো, ২০১৯ সালে চতুর্থ এবং এবার ২০২২ সালে পঞ্চমবারের মতো এ আসর বসতে যাচ্ছে।
এবারের ‘চিহ্নমেলা মুক্তবাংলা’ নামে আসরটি বসবে। এ আসরে দেশি-বিদেশি প্রায় দুইশ লিটল ম্যাগসহ চার শতাধিক লেখক-পাঠক-সম্পাদক অংশ নেবেন। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাভাষি প্রায় দেড় শতাধিক লেখক, সম্পাদক ও তাত্ত্বিক এতে অংশ নেবেন।
মেলা আয়োজক পর্ষদের অন্যতম সদস্য সুবিদ সাপেক্ষ জানান, এবার মেলায় দেশের বাইরে থেকে যোগ দিচ্ছেন প্রায় শতাধিক লেখক-সম্পাদক। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় একশর মতো লিটল ম্যাগাজিন মেলায় অংশগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত সম্মতি জানিয়েছে। দেশের ভেতর থেকে প্রায় তিন শতাধিক লেখক-কবি-সাহিত্যিক ও তাত্ত্বিক অংশ নেবেন।
তিনি বলেন, ‘মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় এক বছর আগে থেকে আমরা মেলায় সাম্ভব্য অংশগ্রহণকারীর একটি তালিকা প্রস্তুত করি। তারপর তাদের সঙ্গে প্রাথমিক যোগাযোগ ছয় মাস আগে শুরু করি। মেলার একমাস আগে তাদের কাছে চূড়ান্ত সম্মতি নেওয়া হয়। এবারের আয়োজনের প্রায় ৯০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি, সবার অংশগ্রহণে আমরা এটি সফলভাবে উদযাপন করতে পারবো।’
মেলার আয়োজনের সার্বিক বিষয়ে চিহ্ন পত্রিকার সম্পাদক ও চিহ্নপ্রধান শহীদ ইকবাল বলেন, ‘মেলাটি সবার জন্য উন্মুক্ত। আমাদের আয়োজনের যে পর্বগুলো রয়েছে; সেগুলোতে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবেন। যে কেউ আসতে পারবেন। আমরা সমকালীন লেখালেখি আর বুদ্ধিবৃত্তিক বোঝাপড়ার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করি। প্রতিটি ক্ষেত্রে ওই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ, নতুন চিন্তকদের নিয়ে আলোচনা পর্ব চলে। একধরনের সমাজটাকে, দেশটাকে বোঝার বিষয়টি উঠে আসে। এ ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে সবার অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।’
মেলার মূল অনুষ্ঠানের প্রথমেই স্মরণ করা হবে প্রয়াত প্রতিথযশা লেখকদের। বাংলা একাডেমির পরিচালক আমিনুর রহমান সুলতানের সঞ্চালনায় ‘প্রয়াত-প্রিয়জন’ শীর্ষক পর্বে শঙ্খ ঘোষ, সৈয়দ শামসুল হক, দেবেশ রায়, আনিসুজ্জামান, হাসান আজিজুল হকের স্মৃতিচারণ করবেন নির্মলেন্দু গুণ, সনৎকুমার সাহা, জুলফিকার মতিন, রুহুল আমিন প্রামাণিক, ইমানুল হক এবং অমল সরকার।
এরপর অধ্যাপক, প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ আজম ‘সৃষ্টিশীলতার সমাজতত্ত্ব ও লিটলম্যাগ’ নিয়ে একক বক্তৃতা দেবেন। অনুবাদ প্রসঙ্গ নিয়ে কথাসাহিত্যিক মোজাফ্ফর হোসেনের সঞ্চালনায় কথা বলবেন আলম খোরশেদ, শরীফ আতিক-উজ-জামান, সফিকুল ইসলাম, প্রত্যয় হামিদ ও মুহম্মদ মুহসীন।
মামুন মুস্তাফার সঞ্চালনায় দুই বাংলার কবিতা ও গল্পপাঠে অংশ নেবেন সৈকত হাবিব, আসাদ মান্নান, জফির সেতু, বদরে মুনীর, শামীম হোসেন, নৃপেন চক্রবর্তী, সিরাজদৌলা বাহার, অলোক বিশ্বাস, কামরুল বাহার আরিফ, শিবলী মুক্তাদির, সরোজ দেব, গাজী লতিফ, দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক, মাহবুব বারী, কামরুজ্জামান গোপন, শামস সুমন, কুমার দীপ, অভিজিৎ বিশ্বাস, নাজমুল হাছান সুমন, মাসউদ আখতার, আনিফ রুবেদ, সরকার মাসুদ, মঈন শেখ, সুবন্ত যায়েদ প্রমুখ।
প্রথমদিনের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাঁশি বাজাবেন প্রখ্যাত বংশিবাদক হাসন রাজা, সংগীত পরিবেশন করবেন কাঙ্গালিনী সুফিয়া।
দ্বিতীয় দিনের বিভিন্ন পর্বে অংশ নেবেন লেখক ইমতিয়ার শামীম, হোসেনউদ্দীন হোসেন, গৌতম গুহরায়, আহমেদ শিপলু, কানাই সেন, অনিরুদ্ধ কাহালি, তারেক রেজা, রাহেল রাজিব, মোস্তাক আহমেদ, নারায়ণ রায়, রাজা সহিদুল আসলাম, মনিরুল মনির, মনজু রহমান প্রমুখ।
দ্বিতীয় দিনে চিহ্ন পুরস্কার প্রদান করা হবে। এরপর সন্ধ্যায় বাউল ঘরানার গানের দল ‘মাতাল’র পরিবেশনার মাধ্যমে চিহ্নের দুই দিনের আয়োজনের সমাপ্তি হবে।
এসইউ/এমএস