জাদীদ রওশনের তিনটি কবিতা
তোমাকেই খুঁজি
পুবের রক্তিম আভা
লাজুক পৃথিবীর ঘোমটা খুলে
যখন লুটোপুটি খায়
আমার আদর বারান্দায়
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি
তুমি এবং তুমি।
ঘন সবুজের অন্তরালে
জোড়া শালিক চোখে চোখ রেখে
ভালোবাসায় একাকার হয়ে
যখন অনন্তের পানে হারিয়ে যায়
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি
তুমি এবং তুমি।
শিউলিমালা পরা শ্যামলা মেয়েটির
লাল পেড়ে শাড়ি যখন এলোমেলো করে
অবাধ্য দখিনা বাতাস
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি
তুমি এবং তুমি।
উদাস চলন বিলে রঙিন মাছরাঙা
যখন শিকারে মগ্ন থাকে
নায়ে চড়ে নাইয়োর যায়
নতুন কোনো বধূ এক বুক স্বপ্ন নিয়ে
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি,
জলের ভেতর থেকে উঁকি দিয়ে
রুপশ্রী তুমি বলো, এই তো আমি
তোমার হৃদয়ে ফোটা লাল পদ্ম।
****
উষ্ণতা আরেকবার
রুপশ্রী, যাবে নাকি ওই দূর পাহাড়ে
ইট পাথর কংক্রিটের শহর ছেড়ে
নীল দিগন্ত যেখানে
ধুসর কুয়াশার সাথে
সঙ্গম করে।
তোমার নরম আঙুল
মেঘ ছুঁয়ে দিলে
বিন্দু বিন্দু বৃষ্টি নামবে
ভিজিয়ে দেবে তোমার দু’চোখ
গোলাপি অধর
অজানা আদর বেয়ে পড়বে
তোমার কোমল শরীরে
উদাসীন বুকে কী আছে আমার
আলিঙ্গনের স্পর্শ ছাড়া।
আঁধার যদি ঘনিয়ে আসে
হিম পবনকে সাথী করে
হারিয়ে যাবো অনন্ত গহ্বরে
নির্বাসন দেব সকল কথন
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে উষ্ণ হবে
লুকিয়ে থাকা গভীর চুম্বন।
****
সন্ধ্যাতীরে অপেক্ষা
সকালের কাঁচা সোনা মাখা রোদ
শরীরে মেখে নেয় সবুজ পাতারা
দখিনা বাতাস ছুঁয়ে যায় খরা বুক
আহত স্বপ্নেরা কড়া নাড়ে মনের দুয়ারে
আমি চুমুক দিই চায়ের পেয়ালায়
তুমিও কি তাই?
ব্যস্ত সময়েকে বন্দি করে পাল্লা দেয়
ভেজা চুলে হেঁটে যাওয়া তোমার চিরুনি
চঞ্চল প্রজাপতি বাসা বাঁধে
সযতনে তোমার শরীরে
অবহেলা পিছে ফেলে ছুটে চলা
তোমার আগের মতোই।
এরই মাঝে একমুঠো রোদ্দুর
আলো ছড়িয়েছে তোমার শিল্পের
নিকোনো উঠোনে
কুড়িয়ে আনা খরকুটো নিয়ে বাবুই গড়ছে
তার শিল্পের কারুকাজ তোমার কার্নিশে
তুমিও কি তাই?
হলুদ সন্ধ্যা নেমে এলে
তুমি বলেছিলে দেখতে যাবে
নীড় ফেরা বলাকা
এরপর কতবার সূর্য ডুবে গেছে
আঁধার ভর করেছে তোমার উঠোনে
দেখা হয়নি তোমার হলুদ সন্ধ্যা
দেখা হয়নি সূর্যাস্ত
আমি এখনো দাঁড়িয়ে সন্ধ্যাতীরে
তোমার অপেক্ষায়।
এসইউ/এমএস