হাবীবাহ্ নাসরীনের তিনটি কবিতা
এসো প্রিয়তম
এসো কবিতায়, তোমাকে জড়িয়ে নিই
বুকের ভেতরে যতটুকু থাকে মন
মনের ভেতরে যতখানি আছ তুমি
তার থেকে বেশি কবিতায় আলোড়ন!
এসো কবিতায়, উষ্ণতা পুষে রাখি
শব্দে ছন্দে একে অন্যকে ঘিরে
তুমি প্রেম হলে আমি তবে ভালোবাসা,
গাঢ় হয়ে ওঠা নিঃশ্বাস ধীরে ধীরে।
এসো আকণ্ঠ কবিতায় ডুবে থাকি
রাত্রি হারাক চিরচেনা সেই পথে
ঘোর কেটে যাক অন্ত্যমিলের ভাঁজে
দেয়া না দেয়ার দ্বিধাহীন দ্বৈরথে।
এসো কবিতার শিরোনাম হয়ে যাও
আবেগে আবেশে তোমাকেই লিখে রাখি
কবিতার গায়ে যতটুকু কাটাকুটি
সবগুলো দাগে ভালোবাসা মাখামাখি।
এসো দুই চোখে, স্বপ্নে ও বাস্তবে
এসো হাত ধরো, কবিতার তালে নাচি
এসো, ভালোবাসো, এসো এসো প্রিয়তম
এসো মুখোমুখি কবিতাকে নিয়ে বাঁচি।
বুকের ভেতর লবণজলের প্রপাত
আর কী আছে, এই তো ভীষণ একলা চলা
এইতো কেমন বইছে নদী বরফ গলা
এইতো কেমন হাসিমুখের ছলচাতুরি
তড়তড়িয়ে বাড়ছে বয়স উনিশ-কুড়ি।
এইতো কেমন কাটছে সময় বিষণ্নতার
একটু তাকাও, যাচ্ছি ডুবে কী শূন্যতায়!
আমার দিকেই হাত বাড়ালে, ধরবো কি হাত
বুকের ভেতর লবণজলের বইছে প্রপাত।
তুমি না হয় একটু দূরেই দাঁড়িয়ে থাকো
মেঘের গাড়ি দুহাত দিয়ে আটকে রাখো।
কাব্য আমার হবে না আর, খুব বুঝেছি
তারচে বরং দগ্ধ চোখেই বৃষ্টি দেখি!
থমকে কেন, সন্দেহ কি খুব প্রগাঢ়
অবিশ্বাসীর জায়গা কোথায়, বলতে পারো!
কে ভেঙেছে কাঁচের চুড়ি, চোখের তারা
মেয়ে আমি উড়নচন্ডি, সর্বহারা!
সামনে তাকাও শূন্য দৃষ্টি খুলে
পেছনে কী আছে, খুব বেশি কিছু নেই
হয়তো জমানো নোনাজল কিছু আর
দীর্ঘশ্বাসের বাড়িঘর সেখানেই
কিছু ব্যথাতুর অনাদায়ী অধিকার।
পেছনে কী আছে, নীল নীল কিছু সুখ
আবেগের তাপে উথলানো অভিমান
ভুলে ভুলে যাওয়া কিছু পরিচিত মুখ
কিছু স্বপ্নের আচমকা অবসান।
পেছনে কী আছে, ঘৃণা আর বিদ্বেষ
দুঃখের মতো হলদেটে কোনো খাম
না লেখা গল্প, কিছু শুরুহীন শেষ,
কখনো না বলা, চেপে যাওয়া কিছু নাম।
সামনে তাকাও শূন্য দৃষ্টি খুলে
মরবার আগে বাঁচার জন্য লড়ো
টিকে থাকবার ভাঙা এই মাস্তুলে
বয়ে বেড়াবার একটা তো কিছু করো!
এইচআর/এমএস