হাসান মাহমুদ শুভর দুটি কবিতা
পাপী ছায়া
বোবা জানালা,
নিত্য জোড়া ছায়া উঁকি দেয়
কপাট খুলতে নিমিষেই চিহ্নহীন।
অলস চিন্ত গাঁ ঝারা দিলো হঠাৎ
কেন, কীভাবে, কে—শত প্রশ্ন
ভাবনারা দমবন্ধ করার মতো চেপে ধরেছে।
সেই সময় কাকের ঠোঁট কিছু বলে
রিকশা নেই তবু টুংটাং শব্দ
ছেড়া হেডফোন যেন শোনাতে চায় গান,
দেওয়ালে টিকটিকি রং গুনছে একাধারে
মাকড়সা রাখছে হিসাব জালের
গ্লাসে জল কাঁপছে মৃদু ভয়ে,
চিরকুট কাঁদছে জেদি অক্ষরের বায়নায়!
ভাবুক মৌমাছি বলছে ভাঙা কণ্ঠে,
এই তো সেই ঘর!
এক শান্ত মেয়ে যে হয়েছিল শিকার
নিশ্চুপ আত্মহত্যার,
পূর্ণ প্রেম দিয়েছিল শূন্য জীবন।
পাপী মহাপাপের পাপী
থামে না রাত্রিদিন অভিশাপী ক্রন্দন!
মৃত্যু সময় ছিল ওই ঘড়ির কাঁটা
এগারোটা বাজার দশ সেকেন্ড পূর্বে,
ঘড়িটা তার।
ফিরিয়ে দাও, আসবে না আর আসবে না!
তুমি তো নব ভাড়াটিয়া।
****
জিজ্ঞাসা
হিমাদ্রীর ধবল শিখর থেকে
খুঁজতে খুঁজতে শ্রান্ত আমি
দেখেছি অজস্র সুন্দর
আকণ্ঠ নেশায় শুধু তোমাকেই পেতে
ভেঙেছি যাতনার নরকের বাধা।
তারপর তোমাকে পেয়ে
মরুর তৃষা নিয়ে ছুটে যাই
তোমার সম্মুখে—মোহনিয়া দিলে ধরা
নিজেকে সঁপে দিলে, পেলাম স্বপ্ন কুমারী
ছল করে অযুত অজস্র সোহাগ
ততদিনে চিনলে আমায়
অভিমানে ঘৃণায় ফেরালে মুখ
প্রণয় দহনে হারালে নিজেরে।
কিন্তু তখন, তোমার অঙ্গে অঙ্গে আমার পরশ—
হঠাৎ যখন দেখবে প্রেমের বিষাক্ত
দংশনে লাশ আমি!
তখন বেহুলার মত ভাসাবে কি ভেলা—
মৃত্যু ফেরাতে যাবে কি ইন্দ্রপুরী?
কখনো যদি দেখো অসহায় প্রেমিক
সমাজের বিষাক্ত শর নিক্ষেপে
ভীস্ম দেবের মত শরশয্যায়
যন্ত্রণা লাঘবে আনবে কি গঙ্গা
মৃত্যু অমৃত দানে দেবে কি অনন্ত জীবন?
কবি: শিক্ষার্থী, এমবিবিএস, ৩য় বর্ষ, ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, গাজীপুর। ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এসইউ/জেআইএম