রিক্তা রিচির দুটি কবিতা
দৃশ্যের দরোজা
দুয়ারে রোদের বন্যা
জানালায় শরীর এলিয়ে দিয়েছে দুইটি চড়ুই
দুপুরের ঘাম বেয়ে নেমে আসা
ফোটা ফোটা জল প্রশান্তির ডালা খোঁজে।
করলার মতো সবুজ ভোরে
মক্তবের ছাদ ছুঁয়ে ছুটে আসে শিশুদের হাঁকডাক।
পাশে একটি কড়ই গাছ
কয়েক লক্ষ শীত বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
খানিক দূরেই টং ঘর।
টুংটাং টুংটাং শব্দের রিনিক ঝিনিক।
পাশের মাচানের শিমফুলেরা রোদের ইশারায় প্রেমে মজে
শরীরে সাদা ও বেগুনি রঙের শাড়ি জড়িয়ে নেয়।
দক্ষিণের সবুজ ঘাসের ক্ষেতে দৌড়ে বেড়ায় গলা উচানো হাঁস।
হাঁসের পেছন পেছন দৌড়ে বেড়ায় মক্তব থেকে ফিরে আসা কচিকাঁচা।
ভোর কেটে যায়, বেলা হয়। দিন কেটে যায়। শীত মুছে যায়। ফাগুন আসে। ফাগুন হাসে।
পুঁইয়ের লতার মতো সময়ের চরকা বাতাসে ভাসে। শৈশব বুড়িয়ে যায়। সময় হারিয়ে যায়।
একা দাঁড়িয়ে থাকে কয়েকটি কড়ই গাছ।
****
শুধু তোমাকে ছোঁব বলে
আমি ঠিক এখানে
দাঁড়িয়ে থাকা সন্ধ্যার আকাশ
ডুবে যাওয়া নদীর কিনার।
তুমি এলেই
চায়ের কেটলিতে ঝড় ওঠে
তেজপাতার ঘ্রাণে দুকূল ভাসে।
তুমি এলেই
ভাজ খোলা বাতাসে শীৎকার ওঠে
শাড়ির কুচির মতো ঢেউগুলো গোপনে কানাকানি করে।
আমি চেয়ে চেয়ে দেখি
বোতাম খোলা শার্টের ভেতরে থাকা বুকের নগ্নতা
আলতা রাঙানো পায়ের খুলে পড়া পায়েলের দস্যিপনা
অষ্টাদশী প্রেমিকার তেঁতুল চিবানো কপোল।
তরুণদের ধোঁয়া উঠানো সিগারেট আর চায়ের মাতম।
তুমি এসেই
আমাকে ছুঁয়ে যাও, কখনো মাড়িয়ে যাও
আমি কাকের মতো হা করে থাকি,
শুধু তোমাকে ছোঁব বলে...
এসইউ/এএসএম