দীর্ঘ কবিতা: আপনি কোথায়?
আপনার সঙ্গে দেখা হতে পারতো
আগুন মিছিলে অথবা বৈশাখী মেলায়
আমরা বসতে পারতাম ঘন হয়ে
বলতে পারতাম পণ্যমূল্য অথবা বিরহের দাম
অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে গেল কেন?
আমাদের আলাপে উঠে আসতে পারতো
তালেবানের উত্থান অথবা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের নির্বাসন!
ট্রাম্পের বিদায়—বাইডেনের দৃশ্যপটে আসা
কিংবা নানুয়ার দীঘির মণ্ডপকাণ্ড নিয়েও কথা বলতে পারতাম আমরা!
ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ
পরিবহন মালিকদের অব্যাহত হিংস্র আচরণ
জনগণের নিত্য বলি হয়ে যাওয়া
ঘরে-বাইরের প্রবল চাপে মধ্যবিত্তের চিঁড়েচ্যাপ্টা দশা
অথবা গোলাপ বাগানে ফুল ফুটেছে কতটা—
সবই বলতে পারতাম আপনার সঙ্গে দেখা হলে।
নেতার মুক্তি কামনায় সরব রাজনীতি—মানুষের কথা বলে কি না
তাও আপনি বুঝিয়ে দিতে পারতেন
আপনি গলা নিচু খাদে রেখেই অবলীলায়।
নদীর ধারে এক ধবল জোছনা রাতে—
জড়িয়ে ধরলে ঝাটকা মেরে সরে গেল কেন কন্যা
অথবা নদীর গ্রাসে বসত হারিয়ে—ময়মুনা বিবি এখন কোথায় থাকে?
দিতে পারতেন আপনি তারও হদিস!
এবারের শীতে কুয়াশা কেমন হবে
শর্ষে ফুলে মাঠগুলো হলুদ হবে কেমন
তাও জানার ছিল আপনার কাছ থেকে
খাজ্জা বিলের মাছেদের এবারো ধরেছে কি না
মাথা পচে যাওয়া ঘাঁ রোগে
সেটাও বুঝে নিতে পারতাম আপনার কাছ থেকে!
স্কুল মাঠে ওড়ানো পতাকায় স্যালুট করে আজমত রাজাকার
কমান্ডার খোরশেদ তখন এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে পেছনে
চোখের কোণে চিকচিক করে কি তার জল?
বুঝিয়ে দিতে পারতেন আপনি সেই জ্যামিতিও!
নয় মাস পরে উদিত নতুন সূর্য মাথায় বাড়ি ফিরে
সাহেব আলী কেন দেখলো স্তূপ স্তূপ ছাই
আর অনেক খুঁজেও তাবারুনকে কোথাও পেলো না সে
শুধু বাজারের আড়ৎ ঘরে পেলো—ভাঙা চুড়ি কয়েক গাছি
আড়তের মালিক আজমত কি না—
জানাতে পারতেন আপনি সেই সুলুকও!
আফসোস আপনি আজ আর কোথাও নেই!
এসইউ/এএসএম