খান মুহাম্মদ রুমেলের তিনটি কবিতা
বাংলাদেশে
বাবার হাত ধরে হেঁটে যাওয়া শিশু
হঠাৎ মরে যায়, দেয়াল ধসে
এই বাংলাদেশে!
মাঠে খেলতে যাওয়া অবুঝ শিশু
তলিয়ে যায় অতল পাইপে, ভেসে যায় স্যুয়ারেজ লাইনে
এই বাংলাদেশে!
মুমূর্ষুর অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে বেয়াড়া
পায়ে দলে বেরিযে যায় সদর্পে—বকশিশ কম হলে
এই বাংলাদেশে!
তারপর,
দশ হাজারি বালিশে মাথা রেখে শান্তির ঘুম
আমাদের জানালা ঢাকা থাকে লাখ টাকার পর্দায়।
বাইরের আলো বড্ড বেশি কড়া!
****
কী করুণ
তারপর দত্তেরগাঁও থেকে হাঁটতে হাঁটতে
চলে এলাম আমি—এই নগরীর পেটে
জেগে উঠলো আকাশ ছোঁয়ার বাসনা কখন।
পথে পথে মাড়িয়ে এলাম সবুজ ঘাস কত!
এক বটের ছায়ায় হাত দেখেছিল জ্যোতিষী
বলেছিল, যাসনে ওরে পাগল!
ভেবেছি আমি—গেলে কীসের ভয়?
আমার আছে বুকভরা বারুদ
একটু স্ফুলিঙ্গ পেলেই জ্বলবে দাউ দাউ!
কী করুণ পরিণতি দেখুন, কী করুণ!
একটা দেশলাই কাঠির খোঁজ পেলাম না আজও
অথবা বুকভরা বারুদ সব উড়ে গেছে বাতাস হয়ে!
****
ঠিকানা
আর হয়তো ফেরা হবে না
সেই শ্যামলে!
নাকি হবে—হয়তো হবে শেষ যাত্রায়
একেবারে চির ঠাঁই।
শিশির জমা ঘাসে ঠোকর দিচ্ছে শালিক
একটা ফিঙে বসে আছে লাল ষাঁড়ের পিঠে
জামগাছটার মগডালে অযুত টিয়ের খেলা
ডেঙিভিটার জলজ ভূমিতে হাঁটছে লাজুক ডাহুক!
ফুটেছে নীরব আমগাছে—দুটো ঘুঘুর ছানা।
থাকা হবে কি আর কোনো দিন
সেই সব অমূল্য সুন্দরের সঙ্গী হয়ে?
ঘুড়ি যতই উড়ুক—আকাশ কি কখনো ঠিকানা হয়?
এসইউ/এএসএম