শরৎ মানেই
শরৎ মানেই সারি সারি কাশফুল
শুভ্রতায় প্লাবিত নদীর দুকূল।
শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা
মেঘের সঙ্গে দুরন্ত শিশুর লুকোচুরি খেলা।
শরৎ মানেই রাখাল ছেলের উদাস দুপুর বেলা
গরু ফেলে বাবলা তলায় কাটাকুটি খেলা।
শরৎ মানেই ব্যস্ত রোগী বাড়ির ভেতর এবং বাহির
সারাদিন চলে প্রতিমা নির্মাণ নেই কোনো অবসর।
বাঁশের গায়ে বিচালি বেঁধে কংকাল হয় তৈরি
কাঁদামাটি মেখে দিলেই মূর্ত হয় অবয়বটি।
রঙের আঁচড় পড়লে পরেই প্রতিমা উঠেন হেসে
সেই হাসিতেই শরতের আকাশ বাতাস যায় ভেসে।
যেই না পড়ে ঢাকেতে কাঠি
প্রতিমা বসেন আসন পাতি।
দূর্গা শিব আর তার পুরো পরিবার
বয়ে নিয়ে আসে যেন আনন্দের বাহার।
অহোরাত্রি বেজে চলে ঢাকের সাথে কাঁসা
পূজো মণ্ডপ সারাদিন দর্শনার্থীতে ঠাসা।
প্রসাদ বিতরণ চলে সারাদিনজুড়ে
শিশুরা খায় হাতের তালু চেটেপুটে।
ধুনো নাচের সাথে উঠেন সবাই একসাথে নেচে
নেচে নেচে দুঃখকে দেন বিদায় দিয়ে।
ধূপের গন্ধে ম-ম করে উঠে পরিবেশ
উৎসবের মুগ্ধতায় মেতে উঠে চারপাশ।
এই আনন্দে পূর্ণতা দিতে হাজির আনন্দমেলা
কলকাতা থেকে ঢাকা সব জায়গায় যেন বসে যায় মেলা।
শারদ সংখ্যা হাতে নিয়ে খোকার বাড়ে ব্যস্ততা
নাওয়া খাওয়া ছাড়াই কেটে যায় যে বেলা।
এভাবেই এসে পরে বিজয়া দশমীর দিন
বিসর্জনের বেদনায় কাতর হয় সবার মন।
বিসর্জনের মধ্যেও দেবী দেন আসার বাণী
‘আসছে বছর আবার হবে’ এটা আমরা জানি।
করোনার এই দুঃসময়েও এসেছে শরৎ তাই
সকল ভেদাভেদ ভুলে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলাই।
দূর্গা পূজা এখনও তাই বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ
যুগ যুগ ধরে চলে আসছে ভ্রাতৃত্বের এই বন্ধন।
শরৎ আসলে আমরা সবাই করি তাই পণ
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে রাখবো সবার মান।
এমআরএম/জেআইএম