রায়হান তারেকের তিনটি কবিতা
অবেলার ডাক
আর কতদূর যাবে এই যাত্রা-
দুশ্চিন্তা আর বিষণ্নতায় কাটবে কত?
তবুও বেঁচে থাকার তাড়নায় সীমাহীন অস্থিরতা
নির্ঘুম রাত দীর্ঘ হচ্ছে-
অবচেতন মনে দুঃস্বপ্নের কঠিন চিত্র
শ্রাবণের মেঘপুঞ্জের বেহিসাবী চলন
বেড়েই চলছে বানের জল, চোখের জল!
সবুজের টানে হাতছানি দেয় মনের ভেতর
অবেলায় যেন ডাক না আসে চলে যাওয়ার!
আবার উঠবে কবে রবি-শশী আগের মতন
গাইবে সে গান করুণ অভিমানে নবরূপে
শ্যাওলার দাগ রিরঞ্জিত হবে; টলমল জলে
জমে থাকা রক্তের দাগ মুছে যাক শুভ্র দলে।
শেষ বিকেলের রোদে লিলির গন্ধে গোধূলীর আগমনে
অপেক্ষা করে আরেকটি মিলনের ভোর
শিউলির শুভ্র-কমলা রঙে
আহ্বানে সাড়া কি দেবে? আছে বড় অভিমানে!
****
অনুরণন
শেষবিকেলের আলো এসে পড়ল আমার ঘরে
মেঘেরা আজ শুভ্র হয়েছে শরতের ডাকে-
বর্ষা বিদায় সন্নিকটে ঘরেতে থাকা যায় না আর
বেরিয়েছি শরৎ দেখবো বলে-
আয় মেঘ! আয় কষ্টের রং! আয় ভালোবাসার রমণী
আজ শোনাব তোমায় প্রকৃতির সুরের বাণী।
তুমি যে আমার কবিতার রাণী!!
এসো
মনের আবরণ খুলে দিয়ে;
জীবনটাকে শুদ্ধ করে;
রুদ্ধতার অবসান ঘটিয়ে-
সুন্দর পৃথিবীটাকে আপনালয় ভেবে
বেঁচে থাকার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে
আগামীর অনুপ্রেরণায় অনুরণিত হোক
আমাদের জীবন।
****
সন্তর্পণে
আকাশের নীলিমার কাছে যেতে চায় মন
শুভ্র মেঘ হয়ে উড়ে যেতে চায় মন
পাখি হয়ে একদল পাখির সঙ্গে
জল হয়ে নদীর কাছে;
শিশির হয়ে ঘাসে।
সবুজ পাতায় গাছে
শুভ্র শরতের কাশফুল কিংবা শিউলি হয়ে
তানপুরার তার কিংবা তোমার গানের সাত সুর।
ঝরনা হয়ে পাহাড়ের কান্না
যেতে যায় মন কোন সুদূরে?
বিজন ছায়ায় একাকী বিষাদে
আবিষ্ট তোমার অসীমে ক্ষণেক পূর্ণতায়।
কল্পনায় অমোঘ প্রেম অম্বরে
জ্যোৎস্নার ছায়া, একি অলীক সংস্রব
যেন মধুর সন্তর্পণে!
কবি: মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
এসইউ/জেআইএম