ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সাহিত্য

আবিদ আনোয়ারের কবিতা: হৃদয়ে গভীর অনুরণন

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ | প্রকাশিত: ০২:২৯ পিএম, ২৪ জুন ২০২১

কবিতা কি আসলেই কঠিন? না কি সহজ? কখনো কখনো পড়তে গিয়ে সহজ মনে হয়। আবার কঠিনও মনে হয়। কবিতার ছন্দ, ভাব, ভাষা, শব্দ, বাক্য কবিতাকে সহজ করে তোলে। পাঠকের কাছে প্রাঞ্জল মনে হয়। এসব গুণই আবিদ আনোয়ারের কবিতায় রয়েছে। তার কবিতা পাঠে হৃদয়ের গভীরে ভিন্ন রকম একটি অনুভূতি জন্ম নেয়। তার সমকালীন অনেকের কবিতায় বিষয়টি অনুপস্থিত। ছন্দহীন কবিতা কেমন বা ছন্দযুক্ত কবিতা কেমন দোলা দিতে পারে; তা আবিদ আনোয়ারের কবিতা পড়লে সহজেই অনুমান করা যায়।

তার কবিতায় পৃথিবী, সংসার, মায়া, প্রেম, নারী, স্নেহ, শাসন, যৌবন, ছলনা, সুখ, দুঃখ, জীবন নানাবিধ ব্যঞ্জনায় ধরা দেয়। খুবই আবেগী অথচ সাবলীল বর্ণনায় পাঠকের হৃদয় কেড়ে নেয়। কবি যখন বলেন—
‘খেয়েছি নারীর মধু, এর চেয়ে বেশি তার ছলনার বিষ;
মধ্যবিত্ত মনে গেঁথে স্বামীত্বের বিপুল ব্যর্থতা
সুখের বিবর্ণ মুখে সাধ্যমতো মেরেছি পালিশ,
দুঃখকে নিয়েছি মেনে অনিবার্য রূঢ় বাস্তবতা।’
(যা তুই ফিরে যা পাখি)
নারীর মধু কিংবা ছলনার বিষ কেমন হতে পারে, তা কেবল তিনিই জানেন। তাই তো সুখের বিবর্ণ মুখে পালিশ মেখে টিকে থাকেন জীবনের রূঢ় বাস্তবতা মেনে নিয়ে।

কবি কখনো কখনো ঠান্ডা মাথায় কঠিন স্বরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার কবিতায় উপমার যথার্থ ব্যবহার শব্দকে করে তোলে বিপ্লবী। সামাজিক বাস্তবতার রূপ, রাজনৈতিক চেতনা, ঐতিহাসিক পটভূমি, ঐতিহ্যের রূপায়ণ, স্বদেশপ্রেম, মানবপ্রেম, প্রকৃতি ও আধ্যাত্মচেতনা প্রখর হয়ে ওঠে। কবি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন—
‘মানতের মতো রেখে যায় কারা যার যার প্রিয় ফুল,
পাপড়ির সাথে মাধুরী মেশানো নানা বর্ণের তোড়া:
শহীদ মিনার নিমেষেই দেখে ফাঁকা তার বেদীমূল
একুশের ফুল খেয়ে চলে যায় বাইশের লাল ঘোড়া!’
(বাইশের লাল ঘোড়া)
শহীদ মিনারের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা ফুটে ওঠে এখানে। যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এ চেতনা জাগরুক হয়ে থাকবে।

আবিদ আনোয়ারের কবিতায় প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস-ঐতিহ্য মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। কতশত ক্যানভাস ভেসে ওঠে চোখের সামনে। তখন একেকটি কবিতাকে মনে হয় একেকটি আয়না। যেখানে তাকালেই সব দেখা যায়। অথচ যা কখনোই দেখিনি আমরা। তার শব্দচয়নে তা দীপ্যমান হয়ে ওঠে। কবি বলেন—
‘সাজের টেবিলে-বিছানা-বালিশে,
ফাঁকা করিডোরে-বিরান হেঁসেলে
থেকে থেকে জ্বলে ‘তুমি নেই’ এই সত্যের দাবদাহ।’
(প্রত্নরমণী)
তুমিহীনতার শূন্যতা কবিকে বিমর্ষ করে তোলে। সাজানো সংসারে দাবদাহ পুড়ে পুড়ে অঙ্গার করে তাকে। যা পাঠককেও ভাবিত করে।

তার ‘সুন্দরালি’র যৌথ অবচেতন’ কবিতাটি ভাষায় আঞ্চলিক। একজন মুক্তিযোদ্ধার খেদোক্তি বলা যায় কবিতাটিকে। একদমে পড়ে ফেলার মতো কবিতা। ব্যর্থতা আর অভাবের মাঝেও মানুষ স্বপ্ন দেখে। জীবনের দর্শন কতটা গভীর—কবিতাটি না পড়লে তা বোঝা যাবে না। কবি বলে ওঠেন—
‘একাত্তরের যুদ্ধ করিছি
দেশের জন্যি অস্ত্র ধরিছি
কান ভরি’ হুনি হগলে আমারে মুক্তিযোদ্ধা ডাহে!
যত চিল্লাই ‘চেতনা চেতনা’
নেতায়া পড়িছে গোখরোর ফণা―
চেতনা খা’য়া কি কারো কোনোদিন পেড ভরে কও বাহে?’

তার কবিতার জাদুকরী একটা টান রয়েছে। কী এক পরাবাস্তব আবহ পাঠককে টেনে নিয়ে যায় গভীর থেকে আরও গভীরে। অজানা এক ভালো লাগায় আবিষ্ট করে। কবিতাচ্ছলে যেন একেকটি গল্পের সঙ্গে সংযোগ ঘটে। প্রেমকাতর কবি কত সহজেই প্রেমাবেগ প্রকাশ করেন। তা হয়তো সবার পক্ষে সম্ভব নয়। কবি তাই বলে ওঠেন—
‘ভেজা কিশোরীর শরীরের ঘ্রাণে সম্বিতে ফিরে দেখি
চৈত্রের মতো গদ্যরমণী চোখ ঠারে তার মেকি।’
(উত্তরাধুনিক বৃষ্টিপাত!)

তার বিচূর্ণিভূত স্বপ্নের ছাই ঝড় তোলে প্রতিদিন। নিজেকে তখন নাগিনীর গ্রাসে অর্ধবিলীন ব্যাঙ মনে হয়। যেন কবির আর্দ্র করুণ অন্তিম ডাক জীবনকে অন্য মাত্রায় ধাবিত করে। কবি তাই তো বলেন—
‘মরণের আগে এমনি ক’দিন
বাঁকা হেসেছিলো অমলের বউ
গভীর নিশীথে ডাক দিতো যাকে কদমের ডাল—
দড়ি হাতে নিয়ে জোনাকির ভিড়ে
বিভোর দাঁড়িয়ে সাত-পাঁচ ভেবে
সম্বিতে ফিরে চমকে দেখতো আরেক সকাল!’

কোনো কোনো কবিতায় মনে হয় কবি শব্দকে নিয়ে খেলছেন। আবার কোনো কোনো কবিতায় মনে হয় শব্দ কবিকে নিয়ে খেলে। ফলে পাঠকও শব্দ এবং কবির সঙ্গে খেলার সুযোগ পান। সবাই কাব্যপটু হয়ে ওঠেন। তার এই শব্দ নিয়ে খেলা পাঠকের হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। কবিতার ছন্দ, অন্ত্যমিল, তাল, লয়—পাঠককেও যেন অন্দোলিত করে। কেননা—
‘কোনো শব্দ ফিঙের মতো, ইস্!
লেজ দুলিয়ে চোখের কাছে নাড়ায় প্রলোভন;
টিয়ের মতো তীব্র বেগে পাখায় তুলে শিস
স্বরগ্রামে দেয় দুলিয়ে বোধের মায়াবন।’
(শব্দ)
তাই তো সমালোচকরা বলেন, ‘ছন্দ প্রয়োগে আবিদ আনোয়ারের নিজস্ব কিছু কৌশল রয়েছে। তিনি কখনো কখনো স্বরবৃত্তের পঙক্তিগুলো এমনভাবে বিন্যস্ত করেন, যা পাঠ করার সময় মাত্রাবৃত্তের দোলা লাগে। কখনো কখনো উল্টো চিত্রও রয়েছে। মাত্রাবৃত্তকে তিনি এমনভাবে প্রয়োগ করেন, তাতে বেজে ওঠে স্বরবৃত্তের সুর।’

এবার তবে কবিতায় ফিরে আসি। এখানে দেখি, কবি কখনো কখনো জীবনের প্রতি বিরক্ত। জীবনের কোনো মানে খুঁজে পান না। এমনকি সভ্যতার ওপরও ক্ষোভ ঝারেন অনায়াসে। কবি বলে ওঠেন—
‘চলো বিবি চলে যাই ‘অন্য কোথা অন্য কোনোখানে’
আদ্যোপান্ত করেছি জীবন পাঠ
আজও তার বিন্দুমাত্র বুঝি নাই মানে।’
(আবারও গন্দম খাবো)

কবি অন্যত্র বলেন—
‘কবিকে আঘাত দিয়ে নিজেই দেখো না
দগ্ধ এ-পাখির দশা তোমাদের হবে;
হারবাল-চর্চিত দেহ কুরে খাবে লানতের পোক,
মাখানো উপটানসহ উঠে যাবে লাবণ্যের ছাল,
আর?
মাংসের জ্যামিতি ফুঁড়ে বের হবে বিকট কঙ্কাল!’
(প্রতিশোধ)

আবিদ আনোয়ারের কবিতার নানাবিধ বৈশিষ্ট্য নিয়ে বহু আলোচনা করা যাবে। তার কবিতার বৈচিত্র্য পাতায় পাতায় উজ্জ্বল হয়ে আছে। কবিতায় তিনি দারুণ নাটকীয়তা উপস্থাপন করেন মাঝে মাঝে। নির্মাণ করেন চরিত্র ও দৃশ্যপট। তারই উৎকৃষ্ট প্রমাণ নূরী পাগলি। আবার ‘আমি কার খালু’ কবিতাটি পড়লে গ্রামের দাদা-দাদির কাছে শোনা গল্প মনে হবে। লোককথা মনে হবে। কেননা কবিতায় আছে—
‘জানিও না এই হাটে কে আছেন এমন দয়ালু
আমাকে যাবার আগে ঠিকঠাক বলে দেবে আমি কার খালু!’
পাশাপাশি ‘একটি সনেট’ রচনায়ও পারঙ্গমতার পরিচয় দিয়েছেন আবিদ আনোয়ার। এটি যে সার্থক সনেট হয়ে উঠেছে, তা নিঃসন্দেহেই বলা যায়।

অপরদিকে ‘ফোবিয়া’ কবিতায় চিকিৎসা বিজ্ঞান তুলে এনেছেন অনায়াসে। তবে এই ভয় শুধু মানুষ দেখে। মানুষের ওপর মানুষের কোনো আস্থা নেই এখন। এমন জটিল সমীকরণই ফুটিয়ে তুলেছেন কবিতায়। কবি বলেছেন—
‘না না, কোনো বাঘ দেখে নয়,
রাত-বিরেতে ভূত দেখে নয়,
পুলিশ মিলিটারিকে নয়,
গুণ্ডা-পাজি লোক দেখে নয়,
মানুষ কেবল মানুষ কেবল মানুষ দেখেই আঁৎকে উঠি!’
কবি মানুষ দেখেই আঁৎকে ওঠেন। তার দেখা মানুষগুলো হয়তো মানুষের মতো নয়। মানুষের মুখোশে অন্য কিছু। আঁৎকে ওঠার মতোই কিছু।

কবি ও প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ নূরুল হকের ভাষায়, ‘কবিতা আবিদ আনোয়ারের কাছে কেবল আবেগ প্রকাশের মাধ্যম নয়, প্রজ্ঞা ও মনীষারও স্বাক্ষর। তিনি আধুনিক মানুষের জীবনযাত্রাকে অবলোকন করেছেন গভীর অভিনিবেশের সঙ্গে। উপস্থিতকালের নিষ্ঠুরতা, গতি ও পোশাকি আচরণ তাকে ব্যথিত করেছে সত্য, বিমর্ষ করতে পারেনি। তিনি কল্পনা, পর্যবেক্ষণ, চিন্তা ও মনীষার মিথস্ক্রিয়ায় আধুনিক জীবনের বহুরৈখিক চিত্র এঁকেছেন। সে ছবির রেখা আলোছায়া ও রঙের ব্যবহারে তিনি স্বেচ্চাচারী নন। তাঁর পরিমিতি বোধ ও রুচির আভিজাত্যের ছোঁয়ায় সে ছবিতে দিয়েছেন প্রাণচাঞ্চল্য। তাতে তাকিয়ে থাকার আনন্দ আছে, দৃষ্টির স্বস্তি আছে। বস্তুগত বিষয়ের সঙ্গে নির্বস্তুর যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা আছে। সময়ের প্রধান অসুখ শনাক্ত করে তার চিত্র আঁকার কৌশল তাঁর করায়ত্ত। তিনি যেকোনো বিষয়কে হৃদয়ে ধারণ করার পাশাপাশি করোটিতেও ধারণ করেন। এ কারণেই তাঁর আবেগ নিয়ন্ত্রিত, প্রজ্ঞাশাসিত। কবিতায়ও মিথকথনের স্বাক্ষর স্পষ্ট।’

তারই মিথস্ক্রিয়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কাব্যজমিনে। মাঝি থেকে শুরু করে জীবনানন্দ—কেউ বাদ যান না তার সৃষ্টি থেকে। ‘কদম মাঝির স্বগতোক্তি’ কবিতাটিও আঞ্চলিক ভাষায় রচিত। তার আঞ্চলিক কবিতাগুলো সার্থকতার সাক্ষর বহন করে। কবি বলেন—
‘বিষ্টি শ্যাষ—অহনও হাওয়ার তোড়ে দানবের তেজ
য্যানো কোনো বেলেহাজ কামুক ইতর
নারাজি ছেমড়ির মত
নাওডারে ঠেইল্লা নিবো জলিধান খেতের ভিতর!’
আবার ‘জীবনানন্দের প্রতি’ কবির মমত্ব প্রকাশিত হয়েছে তার কবিতায়। তাকে অনুসরণ করেছেন বলা যায়। তাই তো কবিতায় জীবনানন্দীয় প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। তবে এ প্রভাব ইতিবাচক। দোষণীয় নয়। কবি বলেন—
‘এমন সৌভাগ্য হলে এখনই কুড়াতে চাই মরার দুর্নাম―
আসুক মরণব্যাধি, ঢাকার দুরন্ত ট্রাক, কলকাতার ট্রাম!’

কবিরা তাদের প্রকৃতি গড়ে নিতে পারেন। তার ‘আবহমান’ কবিতা সেই ইঙ্গিত দেয়। কবির ভাষায়—
‘নদী ও বৃক্ষকে বলি: ভেস্তে যাক তোমাদের সব রীতিরীতি
কেবল কবিরা পারে গড়ে নিতে নিজ নিজ দ্বিতীয় প্রকৃতি!’
তার ‘আপন দর্পনে’ কবিতায় ফুটে ওঠে নির্জনতা। তাতে প্রতীয়মান হয়, কবি নির্জনতা পছন্দ করেন। এটা সব কবিই করেন। এই নির্জনতাই আমাদের অনেক কিছু চিনিয়ে দেয়।
আবার ‘মিউটেশন’ কবিতায় জ্বালাতে চান বিপ্লবের মশাল—
‘তেমন বিপ্লবী কই? মশালেও জ্বলে না আগুন;
ধর্মের কাফন পরে গোরে ঢোকে মৃত হুমায়ুন!’

আবিদ আনোয়ারের কবিতায় প্রেম-কাম-চেতনা-বিপ্লব মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকে। তাই তার কিছু পঙক্তি সব সময়ই নাড়া দেয়। পাঠকের ঠোঁটের ডগায় চলে আসে অজান্তেই। বারবার পড়তে ইচ্ছে হয়—
১.
‘কে যেন বলে: গান গাবো হে,
সন্ন্যাসীরা গাজন থামা
তোদের সুরে মন ভরে না
ফক্কা নাচে রঙিন জামা!’
(সন্ন্যাসীরা গাজন থামা)

২.
‘আমি কবি, নবী নই, নিজেরই বয়ান লিখি, দূর হ দেবদূত,
জেনে নে আমার কাছে: কবিতাও সৃষ্টিকর্ম, স্বতস্ফূর্ত কেবল গু-মুত।’
(দূর হ দেবদূত)

৩.
‘মাননীয় বন্ত্রমন্ত্রী, সচিবের ঘুচে যায় ঘুম:
মেশিনে পরখ-করা রীতিমত সার্টিফাইড উম
বিদেশে পাঠানো চাই, এ-দেশের মানরক্ষা অবশ্যই চাই...’
(রপ্তানিবিষয়ক পদ্য)

৪.
‘আমাকেও যেতে হবে, হয় যদি হোক পরপারে―
আমি ফের জন্ম নেবো অন্য কোনো সুতীব্র চিৎকারে।’
(কার্যকারণ)

৫.
‘জীবের সুখাদ্য জীব―এই মর্মে বোঝা যায় ঈগলের খাঁই,
তিনি কেন সর্বভুক যার কোনো ক্ষুধা-তৃষ্ণা নাই?’
(ঈগল ও ঈশ্বর)

এমন অসংখ্য উক্তি অনায়াসেই তুলে আনা যায় তার কবিতা থেকে। তাই তো বলতে হয়, যুগ যুগ ধরে তার কবিতা পাঠ করেও এ তৃষ্ণা নিবারণ করা সম্ভব নয়। নিবারিত হওয়ারও নয়।

আবারও প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ নূরুল হকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলতে হয়, আবিদ আনোয়ার আবেগের প্রকাশ ঘটান সত্য। তবে তা প্রজ্ঞা ও মনীষার অনুশাসনকে মেনেই। তাই তো তার কবিতায় ব্যক্তির অন্তর্বেদনা, একাকীত্ব, নিঃসঙ্গতা, হাহাকার, সর্বস্ব হারানো কিংবা আত্মত্যাগ প্রকট হয়ে ওঠে। কবি এসবের যোগসূত্র আবিষ্কার করেই তবে তা উপস্থাপন করেন। তিনি প্রাকৃতিক ক্ষয়-পূর্ণচক্রের নিয়মের মতোই দেখেন মানুষের হারানো বা প্রাপ্তিকে। যে কারণে বলা যায়―‘বৃক্ষের বাড়ন্ত কোষ দিনে দিনে ঢেকে ফেলে তাবৎ খোড়ল।’ অর্থাৎ প্রাণের অস্তিত্ব নিষ্প্রাণকে মুছে ফেলে। অনেক পুরনো ক্ষতের কষ্টও নতুন প্রাণের চাঞ্চল্য ভুলিয়ে দেয়।’ তবে আমরা তার কবিতা ভুলতে পারবো না। তার সৃষ্টিকর্ম স্বমহিমায় টিকে থাকবে। সাহিত্য গগনে জ্বলজ্বল করবে চিরকাল। সবশেষে কবিকে জন্মদিনের অবারিত শুভেচ্ছা।

এসইউ/এএসএম

আরও পড়ুন