জোবায়ের মিলনের চারটি কবিতা
১. বট
আধাপাকা চুলগুলো বক-সাদা
বলিরেখা ভাঁজ কাঠ-খোদাই, শত স্পর্শী;
তবুও ফোনের ওপ্রান্তে শুনি একটি স্বর-
খেয়েছিস খোকা?
আজ কী খেলি?
অফিস করিস, রোজ?
ভাঙা গলা, ধরে আসা, কাঁপা কাঁপা।
বলি, সাবধানে থেকো।
আতঙ্ক ছোঁয়া কণ্ঠে ফের-
তুই যেন ভালো থাকিস, বৃষ্টিতে ভিজিস না।
ভাবি, বট; এর নামই জীবন্ত বটের ছায়া।
২. না নদী, না জল
নিংড়ানো কুয়াশা কুচি
চায়ের কাপে তুলসি পাতা
পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে চলে যাচ্ছে মেঘের দিকে
মেঘ বালক ধূমপান ধোঁয়ায়
বেলি ফুল ছিটিয়ে ডাকছে বিগত স্মৃতি...
আমার পাওয়ার কথা ছিল- কাকন ঝঙ্কৃত কনকচাঁপা,
দিবান্তে তাকিয়ে দেখি, জমানো খাতায় আঁকা
না নদী, না জল।
৩. লালু
কিছু কিছু সময় পশুর জন্যও বেদনা জাগে।
পশুত্বহীন পশু নেহাত কম নয় তো;
কুকুর শব্দটি যখন ঘৃণার বিস্ফোরণ
থুতুর শাব্দিক প্রতীক, তখন
লালুকে মনে পড়ে-
লালু, আমাদের পোষা কুকুরের নাম ছিল।
শৈশবে ওটাই ছিল আমার ঘোড়া
কৈশোরে পথের প্রহরী;
এমন নিরীহ কুকুর আমি আর দেখিনি।
এখন সংখ্যাতীত কুকুরের ভিড়ে লালুকে খুঁজি
অহিংস্র। আততায়ীর হাতে তার মৃত্যু
এখনো বেদনা জাগায়।
৪. কোট
সুভদ্র কোটের নিচে যে সাপ শাবক
তা বড় হচ্ছে ধীরে ধীরে
সাপ সবাইকেই কাটে, ওঁঝাকেও ছোবল দেয়।
সাপুরিয়া খেলতে জানে বলে
সাপে কেটে মৃত্যুর রেকর্ড নেই, বলা যাবে না;
কথিত সুশীল, কোটটা ঝাড়া দিয়ে গায়ে দিন
সাপের জিভে বিষ থাকে কিন্তু।
এসইউ/পিআর