‘উঠে দাঁড়াবার কালে’ কাব্যগ্রন্থে পুরুষতন্ত্রের শেকল ভাঙার কথা
শাহীন কামাল
সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বড় হওয়া কাজী নুসরাত শরমীন কর্মজীবনে একজন লেখক, সাংবাদিক। জাতীয় দৈনিকে কলাম লিখছেন নিয়মিত। তার কবিতা নিয়মিত পড়েছি বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় ও জাতীয় দৈনিকে। একটা লম্বা সময় শিক্ষকতাও করেছেন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে।
ছোটবেলা থেকে আবৃত্তি অন্তঃপ্রাণ এই কবি হৃদয়ে লালন করেছেন দৃশ্যত নানা অসঙ্গতি, ক্ষোভ, দ্রোহ, কষ্ট, ভালোবাসা। জীবনকে দেখেছেন নিজের মতো করে। জীবনবোধের দৃশ্যমান সত্যকে ভেঙে গড়ে কাব্যিক রূপ দিয়েছেন তার কবিতায়। "উঠে দাঁড়াবার কালে" কবির একান্ত অনুভূতির নিপুণ বিন্যাস। যাপিত জীবনের ছোট ছোট ঘটনা প্রবাহের শৈল্পিক বিশ্লেষণ যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা সমাজের বাস্তব চিত্র।
'নারী' কবিতায় তিনি তুলেছেন মহাভারতের কথা, নারীর অবমাননার কথা, পুরান থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে নারী বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেছেন। 'উঠে দাঁড়াবার কালে" কবিতায় পুরুষতন্ত্রের শেকল ছিঁড়ে ফেলার স্বপ্ন দেখেছেন। বেসরকারি শিক্ষকদের অবসরকালীন টানাপোড়েন দেখিয়েছেন 'ব্যানবেইস' কবিতায়। প্রিয়জন হারানোর হাহাকারের সাথেও জীবনের জয়গান করেছেন কবি। জীবনকে ভালবেসে মৃত্যু ভয়ে কবি লিখেছেন, " মৃত্যু আমার আপন ছায়া/ তার সাথে একঘরে থাকি"।
লিখেছেন সমাজের নানা অসঙ্গতির বিরুদ্ধে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন সুনিপুণভাবে। নির্ঝর নৈঃশব্দ্যের প্রচ্ছদে বইটিতে মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রতিক সময়, প্রকৃতি, প্রেম, প্রণয় আরও নানা অনুষঙ্গে ৭২টি কবিতা রয়েছে। শ্রাবণ কর্তৃক প্রকাশিত বইটি কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলেও বেশ পরিপক্কতার ছাপ রয়েছে বইটিতে। কবিতাপ্রেমীদের কাছে বইটি বেশ সমাদৃত হবে বলে মনে করছি। বইমেলার পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রের ২৫ নং প্যাভিলিয়নে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। অনলাইনে রকমারি থেকেও বইটি সংগ্রহ করা যাবে।
কবি কাজী নুসরাত শরমীনের জম্ম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর নদী- সমুদ্র ঘেরা দ্বীপ জেলা ভোলায়। লেখালেখি, সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ বেতার ঢাকা কেন্দ্রের তালিকাভুক্ত শিল্পী। রবীন্দ্র সংগীত তার ভালোলাগার অনুষঙ্গ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নারী জাগরণ নামে তার মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশের অপেক্ষায়। অনুবাদ করছেন আফসান চৌধুরীর লেখা " শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ" বইটি।
এইচআর/এমএস