কেয়া তালুকদারের কবিতা
পিতা
তোমার সেই হাসি ভেসে বেড়ায়
আমার হৃদয়ে এখানে ওখানে।
তোমার সেই স্পর্শ
খুঁজে বেড়াই আমি সর্বত্র।
তোমার সেই ভালবাসার রূপ,
পাইনি আমি আজও কারো মাঝে।
তোমার শরীরের সেই গন্ধ
আজ পাইনিগো কোন খানে।
তোমার সেই আগলে রাখার ধরন
নেই কোনো মানবের মাঝে।
তোমার স্মৃতি গুলো আজ নয়
শুধু স্মৃতি আমার কাছে
আজও মনে পড়ে
তোমার সেই হাত ধরে
হাঁটতে নিয়ে যাওয়া,
যে হাত ধরে ছিলে
আমার হাতে আমৃত্যু।
শিখিয়ে ছিলে যে অক্ষর
যা আজ আমার জীবনে
আলোকবর্তীকা রূপে বিরাজমান।
তুমি আমার সেই পিতা
যে দিয়েছিলে আমার জীবনের দিশা
আজও আমি তোমার ভালোবাসার স্বাদ পেতে চাই
শত শত শিশুর পিতার মাঝে।
যা থেকে কেউ পারবেনা
করতে বঞ্চিত
কোন কালে কোন ভাবে।
যেখানে বিধাতার বিধি
হবে অসার।
তোমার সেই আগলে রাখার মুহূর্তকে
আমি জীবন দিতে চাই
শিশুকে তার পিতার আলিঙ্গনেতে।
তোমার সেই কণ্ঠস্বর
আমি খুঁজে নিতে চাই
বাতাসের শন-শন শব্দে।
তোমার সেই পদ চিহ্ন
আমি খুঁজে পেতে চাই
কঁচি ঘাসের উপর এক বিন্দু
শিশির কনার মাঝে।
যা হবে না বিলীন
কোন দিন কোনো কালে
থাকবে সাথে আমার
হৃদয়ের এক কোণে।
সর্বহারা কান্না
হারিয়েছে যে জীবন তরী
ভাসাতে তোমার তরী।
দিয়েছে যে আলো সূর্যের ন্যায়
দিয়েছে অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়।
জীর্ণ শীর্ণ অশ্বথের অনুকরণে।
পেরেছ কি দিতে তারে এতটুকু ভালবাসা?
এখন সে সর্বহারা
সর্বস্ব দিয়েছে যে তোমারেই কারণে।
কখনো সে হয়নিত পিছপা
দিতে তোমায় এতটুকু স্বাচ্ছন্দ্য।
যার এখন স্থান রাস্তায় না হয় বৃদ্ধাশ্রম
তবু সে এখনো স্বপ্নের জাল বুনে
সেখানে তোমার আনাগোনা
এখানে- ওখানে।
তবে কেন তাকে রেখেছ তোমার
অক্ষির অগোচরে?
যেখানে সে পাচ্ছে সদা
আপন কাউকে কাছে না পাওয়ার
ব্যথা।
পারছ কি দিতে উত্তর
নিজেই নিজের কাছে?
এইচআর/এমএস