অণুগল্প স্তবক
।। উপভুক্ত।।
বাস থেকে নেমে বাসায় যাবার রিক্সা ধরলাম। ফ্লাই ওভারের নিচে দিয়ে চকচকে পলিশড্রাস্তা। অজগর সাপের মত এঁকেবেঁকে বড় বড় গাড়িগুলো চলে যায়। মাসের পঁচিশ তারিখে বিদেশী অফিসগুলোতে বেতন হয়ে যায়। সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে হ্যাংআউটের পর মন আজ চনমনা। পেটে মাল, ব্যাগে মাল। তিনের পর চার প্যাগে মাথা খানিকটা ঝিমুতে থাকে। ঘরে ঢুকতে দরোজা খুলে দেবে মা। হুইস্কির গন্ধটা কাটান দিতে স্পাউট চ্যুইংগাম চিবুতে থাকি।
পাখির শীষের শব্দে ব্যাগের জিপ খুলি। এটা নিশ্চয়ই ওর টেক্সট্। পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে সপ্তাহের দু’পাশে শুক্র শনিবারগুলো জোড়া দিলে নয় দিন। বসের টেবিলে ছুটির কাগজটা দিয়ে রেখেছিলাম দু’দিন আগে। এপ্রোভালসহ কাগজটা ফেরত পেয়েছি আজ অফিস ছাড়ার ঠিক আগে। কতদিনের পরিকল্পনা, কাশ্মীর যাবো। ভূস্বর্গ। তাকে জানিয়েছিলাম সাথে সাথেই। ছুটির জন্য ওর কারো এপ্রোভাল প্রয়োজন হয় না। এইমাত্র দুশব্দের ছোট্ট একটা টেক্সট্,
“ওকে সোনা।“
গুনগুন হিন্দি গান ভাঁজছিলাম। নিভানা পারেগা, যো ওয়াদা কিয়া বো নিভানা পারেগা, নিভানা পারেগা। আর মাতাল যাত্রীসহ রিক্সাটিকে ঠিক সেই মুহূর্তই চাঁপা দিয়ে চলে গিয়েছিলো মাতাল ট্রাক। বীভৎসভাবে থেঁতলে গিয়েছিলো আমার মাথার রক্ত মাংস খুলি। মগজের কিছুটা অংশ ছিটকে পরেছিলো রাস্তার পাশে তরল উষ্ণ রক্তসহ। তখনো তার কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়নি। মগজের এমিগডালা অংশটি প্রেম ভালোবাসাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর সেখানে তখনো অনুরণিত হচ্ছিলো তার নাম।
।।কলি পুত্র।।
কাকরাইল থনে রিজাব রিক্সা লইছি আজিমপুরতরি। মামু কয়,
"টাইট অয়া বহেন।"
এমুন গন্ধ ক্যালা! লাগে যেন কেউ রাস্তায় খাড়ায়া টানটাছে। কাটাব্বনের হুমকেও হালায় একই রহম গন্ধ। পুলাপাইনের আইজকাল মারে বাপ! আমার ঠেইলা বমি আহে। নীলখেতের মুড়েও অহন এইকাম চলে! পুলিস উলিস কী নাইক্কা নিহি!! গুল্লি মারি অগরে। বাসার হুমকে নাইমা রিক্সায়ালারে করকইরা একস টেকার নটুন লোট দিলাম।
“রেজগি লাগবোনা বাপ! আইজ আমার দিল দরিয়া।“
লেম্পপুষ্টের তলায় কাম সাইরা যেই দরজায় টোকা লইসি, আব্বার অই বিটকাইলা গন্ধ। যাচ্ছালা! আইজ পুরা ডাকা সহরই টানতাছে। মাগার আমার মাতা জিমজিম করে ক্যালা?
“মাগো, গলা হুকাই গ্যাছেগা। এলা পানি দেও খাই। লাইট বন কর মা, মরার চক্ষে টাইনা ঘুম আহে আইজ....
।।মাংসাশী।।
ক্লান্তিতে তার ঘুম পায়। ঘুম ভাঙলেই ক্লান্ত লাগে। কচি আনারসে নাকি পেটের বাচ্চা মরে। বাচ্চা না রক্তের দলা!! একবাটি কাঁচা আনারস সাবাড় করেও যেই কে সেই। ক্লান্ত লাগে, ঘুম পায়। বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে শুয়ে ক্লান্ত চোখে আরেক চিৎ রাতের কথা মনে পরে চিত্রার।
"খালুজান, ও খালুজান আপনেরও কী আমার মত ঘুম পায়??"
।।নিশা।।
শ্যাষ রাইতে আতর আলী যখন দরজার ঝাপ লাগাইয়া বিছনায় পাশ ফিরা শুইত, তখন তার আধখোলা মুখ থিকা একধরনের ঝাঁঝালো গন্ধ বাইর হইতো। গন্ধটার মইধ্যে নিশা আছে।
রতিকর্মরত আতর আলীর মাথাটা যখন আধলা ইট দিয়া শুষমা মাগীর বুকের উপরেই ফুলমন বানু ফাটাইয়া দিসিলো, তখন মাথার খুলি থিকা গলগলাইয়া বাইর হওয়া রক্তের মইধ্যে একধরনের কটা গন্ধ ছিলো। গন্ধটার মইধ্যে নিশা আছে।
এখন কথা হইলো গিয়া, কুন নিশাটা বেশি তীব্র-এই বিষয় বিবেচনা করার জইন্য ফুলমন বানু বিড়িতে একটা সুখটান দিয়া কলতলায় ঝিম মাইরা বইসা ছিলো।
।।ইনসমনিয়াক।।
রাতুলের ইনসমনিয়াটা ভয়াবহ রকমের বেড়েছে আজকাল। গত তিনদিন একনাগাড়ে ঘুমোয়নি সে। আগে এরকম ছিলোনা। একরাত না ঘুমালে পরদিন ঠিক ঘুমুতো। ধীরে ধীরে মাত্রা বাড়ছে। লক্ষন ভালো না। তিনদিন না ঘুমুলে পাগল হয়ে যাবার কথা। রাতুলের আজ বেশ অস্থির লাগছে। বারিধারার বিশাল এই ফ্ল্যাটটিতে রাতুল একা থাকে। বাবা মা মৃত্যুর পাট চুকিয়েছে অনেক আগে। এক বোন আছে, সে দেশে থাকেনা। এতোক্ষণ রগরগে একটা মুভি দেখছিলো। অস্থিরতা বেশি বেড়ে যাওয়ায় রাতুল সারা ঘরময় হাঁটছে।
রাত তিনটেয় এই বিড়াল আসলো কোত্থেকে! কি পেলব শরীর! হালকা হলুদ লোমগুলো খাড়া খাড়া হয়ে আছে। রাতুল দরোজা বন্ধ করে দেয়। বেড়ালটা পালাবার পথ না পেয়ে মিঁয়া মিঁয়া শব্দ করছিলো।
কাটা গলা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। গরম গরম রক্ত। হাত দিয়ে ছুঁতেই রাতুলের সারা শরীরে অসম্ভব রকম এক তৃপ্তি খেলে যায়। অর্গাজমের মত সুখ। ছোটবেলায় পোষা ময়নাটার গলা টিপে মেরে ফেলার পরও এধনের এক অনুভূতি এসেছিলো শরীরে। উষ্ণ প্রস্রবনের পর থিতিয়ে পরা অঙ্গের মতই শিথিল এখন শরীর। আয় ঘুম!!
মাস ছয়েক ঘুমটা ঠিকঠাকই ছিলো। কদিন থেকে আবার যেই কে সেই। টানা ইনসমনিয়া পাগল করে তুলছে রাতুলকে। ব্যালকনিতে সিগারেট পোড়াচ্ছে একের পর এক। মাথার নিউরনে এলোমেলো কম্পন। কতকিছু খেলে যাচ্ছে!
"আমার ঘুম প্রয়োজন" রাতুল ভাবতে থাকে। মধ্যরাতের বাতাসে রকিং চেয়ারটা মৃদু মৃদু দুলছে। ছোট শিশুর উপর নিচ মাথা ঝাঁকিয়ে রাতুল একটি কথাই ভাবতে থাকে, "আমার ঘুম প্রয়োজন।"
হঠাৎ রবির কথা মনে পরে। গ্রামের ছেলে। সারাদিন রাতুলের ফাই ফরমাশ খাটে। এই বাড়িতেই রাতে ঘুমায়। বয়স আন্দাজ বারো হবে। রবি এখন অঘোরে ঘুমাচ্ছে।
কিচেন লাগোয়া সারভেন্ট রুমের দিকে সন্তর্পণে এগোয় রাতুল। হাতে এক বান্ডিল নাইলন দড়ি আর একটা চকচকে নাইফ।
।।রাঁধা কিংবা রাই।।
আমাদের প্রেমে কোন প্রতিজ্ঞা ছিলোনা, বৈষয়িক অথবা কাছে থাকার। আমরা জানতাম একদিন ছেড়ে যাবো একে অন্যকে। তবু ভালোবেসেছিলাম দুজনেই। সেকি দশদিশ ছাপানো ভালোবাসা!! যেমন আকাশ ছুঁয়ে যায় উঁচুচূড়া পাহাড়কে, তুমি ছুঁয়েছিলে আমায়। ফণাতোলা সমুদ্র যেমন উত্তাল তেমনি ছিলো আমাদের সময়গুলো। যদিও দুজনেই জানতাম একদিন ছেড়ে যাবো একে অন্যকে।
একরাত ফ্রিজে রাখা বেলিফুলগুলো তোমার হাতে তুলে দিয়ে বলেছিলাম, "যাই?"
আমার রিক্সার হুড যত্নে তুলে দিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে শেষবারের মত তুমি বলেছিলে,
"ভালো থেকো রাই।"
আমি ভালো আছি। কারণ আমি জানি, ভালোবাসায় সবসময় প্রতিজ্ঞা থাকতেই হবে- এমন কথা নেই।
।।অপনা মাংস।।
একটা বৃত্তকে ঘিরে নগ্ন কজন মানুষ ঝুলে ঝুলে নাচছে। সকলে সকলের হাতবন্দি। মুখে মৌমাছির মত মৃদু গুঞ্জন। চোখ ঈষৎ বন্ধ। নগ্নিকার চুল আলুথালু।
সুর্যঘড়িতে দুপুর হেলে পড়েছে। বৃত্তের মাঝখানে ধ্যানস্থ তান্ত্রিক। একমনে বিড়বিড় করে মন্ত্র আওড়ে চলেছে। চিড়িক চিড়িক ঠোঁট কেঁপে উঠে। একটা বড়সড় মাটির পাত্র রাখা গনগনে উনুনের উপর। খাঁ খাঁ আগুন জ্বলছে। ধোঁয়াসমেত গুঁড়ো গুঁড়ো আগুন উড়তে উড়তে সূর্যের সাথে মিশে যায়।
তান্ত্রিকের মন্ত্রের শব্দ ক্রমে দীর্ঘলয় হতে থাকে। শুন্যে দুহাত তুলে চিৎকারে বিদীর্ণ করে বালুতট। সমস্বরে আদিম উল্লাসে হুলু লু লু আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হয় নগ্নদেহ নারী পুরুষের কণ্ঠে। আজ পুণ্যভোজ। মাটির পাত্রে সিদ্ধ হচ্ছে মানব শিশু। জন্মের সময় শিশুটির গলায় পেঁচিয়ে ছিলো নাভিরজ্জু। ক্ষণজন্মা, দেবতাপুত্র। ভক্ষণে দী-র্ঘায়ু। দীর্ঘায়ু মানে পৃথিবীতে নিজের অস্তিত্ব দীর্ঘতর করা। এর বেশিকিছু এরা জানেনা।
আগুন নিভে এলে তান্ত্রিক তাতে ছিটিয়ে দেয় কিছু পুণ্য বৃক্ষের বাকল আর ঘাসলতা। সকলে পুণ্য রক্ত মাংস ভক্ষণে মনোযোগী হয়। সদ্য প্রসূত মেয়েটির পাতে পড়ে একটি হাত। কোমল ছোট্ট আঙুলে নখের পরত পরেছিলো, পুরুষ্টু হয়নি তখনো। মুখের কাছে তুলে নিয়েও খাবার দূরে ঠেলে দেয়। মেয়েটির গলার কাছে কিছু একটা আটকে আছে। পেট এবং তার নিম্নাংশের ব্যথাটা তখনো উপলুব্ধ। অনেকগুলো দিন শিশুটির বসত ছিলো তার শরীরের গহনে। শুন্য পেটে হাত রাখে মেয়েটি। হরহর করে বমি করে দেয়।
তারপর বালুতট ধরে দৌড়ুতে থাকে। ক্লান্ত অবসাদগ্রস্ত একটি মেয়ে। মানুষের নাম রাখার চল তখনো শুরু হয়নি।।
।।মিতির নববর্ষ।।
হাঙ্গরের মত দাঁত বের করা নোকিয়া ফোনটা নামিয়ে রেখে বাবা বললো,
"পার্টি বিক্যাশ পাঠায় দিছে, তুই রেডি হয়া মোহাম্মদপুর চলে যা।"
মিতি আলস্য ভেঙে উঠে দাঁড়ায়। টিনের চালা দেয়া ঘর। রোদের উষ্ণ প্রস্রবণে পুড়ছে দুপুর। ঘরের ভেতরে দুজন অচল বৃদ্ধ মানুষ আর একটা মৃত শরীর। মিতি একবার বাবা, মার দিকে তাকায়। কোন ভাবলেশ নেই। মিতি গোসলে যায়।
আজ নববর্ষ। মিতি লাল কামিজ পরে। সাদা সালোয়ার সাদা ওড়না। লাল টিপটা কপালে পরেই মিতি কলে যাবে। কলগুলো বাবাই মেইন্টেইন করে। এ পাড়ায় সবাই জানে মিতি কলেজে যায়। শুধু এ ঘরের তিনজন জানে, মিতি কলে যায়। মিতির বাবার নোকিয়া ফোনে টাকা আসে। শরীর ভাঙালে বিক্যাশ। বিক্যাশ ভাঙালে ভাত, কুঁচো চিংড়ি উচ্ছে ভাজা। মিতি মাঝে মাঝে টিপস পায়। মিতি এটাসেটা কেনে। আজ টিপ পেলে একটা তরমুজ কিনবে। বাহিরটা সবুজ, ভেতরটা গাঢ় লাল।
পাড়ার রিক্সা মোড়ে এসে দাঁড়ায় মিতি। উৎসব। লাল হয়ে উঠেছে উৎসব। কে একজন কানের পাশে বাঁশি বাজিয়ে চলে যায়। নববর্ষে এসব হয়। সকলে আনন্দ করে। সকাল থেকে সন্ধ্যা। রাত থেকে ভোর। কারো কারো রাতের উৎসব অন্য আনন্দের হয়। মিতির বাবার নোকিয়া ফোনে বিক্যাশ আসে। একটা রিক্সা এসে থামে মিতির পায়ের কাছে। মিতি উঠতে যাবে, বদরুল চাচা এসে দাঁড়ায়।
"কই যাও মিতি?"
-"চাচা, কলেজে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আছে। কলেজে যাই।"
বদরুল চাচা স্নেহের হাসি হাসেন। মিতি লাল লিপস্টিক মাখা ঠোঁটে হাসে। স্নেহশীল মানুষকে মিথ্যা বলার জন্য মিতির মনে অনুতাপ আসেনা। মিতি মনে মনে বলে,
-হ্যা চাচা কলেজে যাই। শুধু নিজগুণে বর্গীয় জ কেটে দিয়েন, এ’কারসহ
।।দ্রোহ।।
লাবণ্য আমার ডান হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে আছে। একটু বিরক্ত হই। হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করি। ততক্ষণে ওর হাত আরো চেপে বসেছে আমার হাতের উপর। আমি জানলার বাইরে চোখ রাখি। সন্ধ্যা হবো হবো সময়। রাস্তায় জ্যামের জন্য সেডানটা বেশি গতি নিতে পারছেনা। বেশি কিছু ভাবতে ইচ্ছে করছেনা আর। এক্সস্টেড লাগছে। ব্যস, একটু রিল্যাক্স হওয়া দরকার। কদিনের ঝামেলার পর আজ চূড়ান্ত দিন ছিলো। কতসব অযাচিত ঝামেলা! আমি তৈরি ছিলাম সবটার জন্য। কিন্তু বাস্তবতা ভাবনাকে ছাড়িয়েছে চিরদিন। ড্রাইভারের পাশের সিটে চাচাজি। পেছনে আমরা তিনজন। চাচীমা, আমি আর লাবণ্য।
লাবণ্য আমার ছাত্র। লাবণ্য এবার এগরো ক্লাসে পড়ে। ওকে আমি ম্যাথ করাই। হপ্তাহে তিনদিন সন্ধ্যার পর। লাবণ্যটা দেখতে ভীষণ মায়াবতী। প্রথম যেদিন দেখেছিলাম মনে হয়েছিলো, আমার একটা বোন থাকলে ওর মতই দেখতে হতো।
লাবণ্য সেদিন কাঁদছিলো খুব। আমার কোলের উপর মাথা রেখে। তাঁতের শাড়ি ভিজে যাচ্ছিলো। আমার বুকের ভেতর একটা কু পাখি সর্বনাশা ডাক ডাকছিলো। আমি যখন ওকে বুকে চেঁপে ধরেছিলাম, কানের কাছে সে ফিসফিস করে বলেছিলো,
"পিরিয়ড মিস করেছি। ভয়ে কাউকে বলিনি। আপু আমার সব শেষ।"
আমি ঠিক এই কথাটিই শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। বলেছিলাম,
"আমার চোখের দিকে তাকাও। কিছুই শেষ হয়ে যায়নি। আমি আছি। আমার হাত ধরো লাবণ্য।"
চাচা চাচী কিছুতেই রাজী হননি প্রথমটায়। আমি আমার সব দিয়ে বুঝিয়েছি। থানা পুলিশ। সমাজ সংসার। আমি এগুই তো লাবণ্য পেছোয়। আমি আবার এগুই। দুদিন রিমান্ডের পর আজ সকালে ছেলেটিকে জেলে চালান দেয়া হয়েছে। আমরা প্রসেডিউরগুলো সেরে সবে বাড়ি ফিরছি। স্নানের পর লম্বা একটা ঘুম দেবো আজ অনেক দিন পর। লাবণ্যকে লিফট পর্যন্ত এগিয়ে দেই। লাবণ্যর ঠোঁটে দৃপ্ত হাসির ছোঁয়া। কি মনে করে সে একবার আমার দিকে ফিরে তাকায়। কাছে এসে আঁচল ধরে।
-“আপু তুমি আমায় নতুন জীবন দিয়েছো। আমি ঋণী রয়ে গেলাম”
ঋণী হয়ে থাক লাবণ্য। কখনো সুযোগ এলে শুধিস। আমি তখন তোর মতই ছিলাম। তোর মতই মায়াবতী। তোর মতই প্রতারিত। শুধু সেদিন আমার মত কেউ ছিলোনা আমার হাতটি ধরার জন্য।
।।স্ব-কীয়া।।
সকাল এগারোটার দিকে গ্রামের মানুষ জেনেছিলো ছেলেটি মৃত। গতদিন হাটবার ছিলো। ছেলেটি গত সন্ধ্যায় হাটে গিয়েছিলো। সকাল নটায় খবরটা ছড়িয়ে পড়ে দু’চার গ্রামে। থানা তল্লাশি চলার সময় ছেলেটির সিথানে একটি বিষ ও একটি আলতার শিশি পাওয়া গিয়েছিলো।
এর বেশিকিছু তখনো জানা যায়নি।
এইচআর/জেআইএম