সাবেরা তাবাসসুমের কবিতা
সহোদরা
“কাপড় সরিয়ে দিয়ে যে মেয়েটি দিয়েছিল বুক
সে আমার সহোদরা, পুষে রাখে আপন অসুখ”
এক.
পরিষ্কার নরম একটা বগল
শর্ত একটাই- কালচে নীল জুবুথুবু কোঁচকানো না
হবে নরম সাদা টানটান
নাকটা জিভটা যেখানে বিশ্রী রকম খোঁচার হাত থেকে বাঁচবে
সারা দুনিয়া অন্ধকারে ঢেকে গেলে সুহাসিনী মোম কামাইয়ে বসে
দাঁতে দাঁত চেপে বাড়তি তাপ আর আচমকা টান শুষে নেয়
রুমালে বরফ পুরে ছোলা জায়গাটা ঘষে- টের পায় আরাম
লোকটা বলছিলো, বাড়তি পয়সা
একটা পরিষ্কার নরম বগলের জন্য
বাড়তি একশ টাকা
এক হালি নেপালি সাগর কলা
এক পাতা বড়ি
ছেলেটার মুখে কয়েক ফোঁটা দুধ- আহ্!
দুই.
কুমু, কাছে আয়
ঠিকঠাক আমার কাছে আয়
দেখেছিলাম তোরে কুমু, ঝলমলে আলেয়া অপেরায়।
কুমু, ভুলে গেলি
ভুলিস বলেই বেঁচে থাকা, বল?
কোলে-ভোলে একাকার- জনে জনে বিনিময় সহজ সরল।
কুমু, কাছে বোস
শুনব না কসম তোর গপ্প সরস
রমিজ ভরসায় বুক টিপে গুঁজে দেয় টাকা খালি দশ।
কুমু, নেচেছিলি
বগল তুলে, সায়ার কুঁচি খুলে খুলে
কুমু, বাতে ধরা কোমর আর একচক্ষু সাপ ওঠে দুলে।
কুমু, গালে জ্বর জরি
থাম এবার, খুব কি অসম্ভব?
পর্দার পিছে বমি করে পায়ের কাছে ভাসালি রে সব।
কুমু, তোকে চায়
কে না চায়, চামড়ায় চামড়া ঘষে ঘষে
সুধা দিলি জনে জনে- খামাখা পড়লি তবু দেবতার রোষে।
রটালো কে রে কুমু
বিরস কোমর তোর, গলায় ভাসে অশরীরী গান
অসুখ কোথায় গেল আর সব প্রেমিকেরা- তাদের জবান?
শরীর কি সব, কুমু?
আরো কিছু পাবি তুই, একমুঠো দুইমুঠো রোদ
কিছু পানি কিছু মাটি ভাগে আর আকাশ অবোধ
হেসে বেঁচে ওঠ কুমু,
আগুন গিলে নিয়ে গাইতে পারি এখনো আমরণ
চিরকাল নুন খাই, ভাতের গুণ গাই মিছামিছি আমরা দুবোন!
তিন.
লোকটার অসৎ চোখ ম্যাড়মেড়ে নিস্পৃহ বদামিতে ভরা-
‘এই প্রথম আমি কোনো এক নম্বর মেয়েমানুষকে খেলাচ্ছি’
জিপারে হাত রেখে বললো সে।
তার বলা না বলায় মেয়েটির কিছু আসে যায় না
আজ খুশিকরা-দিন
আজ ভালো কিছু প্রসাধন পোশাক
আজ মখমল আর আতর ভুরভুরে রাত
একটা বুক মেলে ঈষৎ ঝুঁকে দাঁড়ায় মেয়েটি ।
লোকটা ঠা ঠা হেসে এক দলা থুথু ছুঁড়লো মুখে।
মেয়েটি সাত দিনে জেনে গেছে সব
এইসব সাধু ও শয়তান- ইশারার বিপুল সমাদর
ভাতের বদলে ছোলা-রুটি
বুক মালিশ- শরীরে ঋজুতা
আজ বোনি হবে দোপাটি ফুল
বোনি হবে এক্কাদোক্কা রোদ- শুভ্রতা!
এইচআর/আরআইপি