অনন্ত পৃথ্বীরাজের কবিতা
অবিশ্রান্ত বিশ্রামঘর এবং অন্যান্য

অবিশ্রান্ত বিশ্রামঘর
মর্গে যাওয়ার দুর্ভাগ্য যেন কারও না হয়!
শান্তি, এই শব্দটি মানুষের দিলের মধ্যে
লুকিয়ে থাকে।
জন্মেই সবাই কেবল দৌঁড়ায় আর দৌঁড়ায়
পৃথিবী যেন মায়ামৃগের মতো মরীচিকা।
নিদানকাল পেরিয়ে আমাদের শেষ ঠিকানা
অবিশ্রান্ত বিশ্রামঘর।
****
হলফনামা
ক্রৌঞ্চ-ক্রৌঞ্চির চঞ্চু চঞ্চলতা
বুঝেও বোঝে না শিকারি ব্যাধ
যেখানে সৌন্দর্যের মূল্য নেই,
সেখানে
ভালোবাসা পালিয়ে বেড়ায়।
রাষ্ট্র প্রেম নয়, বোঝে অর্থের সার্থকতা।
****
মুদ্রণ খসড়া
কবিতার লাল, নীল রং সবাই দেখতে পায় না;
দোয়াত কালির আবির্ভাব কল্পনাকে জাদুঘরে নিয়ে গেছে
ঈশ্বর কবিতা কী পছন্দ করেন, নাকি খড়খড়ে গদ্য?
একদিন হাঁস হবো বালিহাঁসের ঝার।
ডাহুকির বিল ডাকাতিয়ায় পাথার
উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে দেখবো মানুষ,
তোমরা কেন করছো হাহাকার!
****
আমলাতন্ত্র
আমির হামজা লুডু খেলায় ছক্কা মারে
মই বেয়ে আকাশে উড়ে-
উরুক্কুর কবলে পড়ে পতিত হয় মৃত্তিকায়।
তখন গ্রাসের থাবা বের করে দু’পায়ের দৈত্য আসে
দন্ত-নখর শোণিত ছ্যাপ-চাটা পার্টির পাতি নেতা মোনাই দেখায়
তারা ভাবে সব কিছুই বোধ হয় ভয়ে ঠকঠক!
তবে জেনে নিও হে, এতটা ঠুনকো নয় আমলাতন্ত্র!
****
নিলাম
আমাদের কানের ভেতর শত্রুরা ফিসফিস কথা বলে। জানালায় নল তাক করা। ট্রিগারটা টিপলেই শরীর ভেদ করে গুলি বেরিয়ে যাবে। আমাদের লোকায়ত রুচি। আমসত্ত্ব এখন ক’জনেই বা খায় ভাই! মোরগ পোলাও, খাসির রেজালার সাথে চিনি ছাড়া দধি কেউ কেউ পায়। সুদুল-বুদুল দিয়ে কোনো রকমে একটা টিপসই নিতে পারলেই হলো। দেনার দায়ে সব নিলামে তোলা যাবে। তারপর মাসোয়ারা; এখন আর জমিটা তোমার নাই বাপু। ওটা ছেড়ে দাও।
এসইউ/এএসএম