শীতে দাঁতের যত্ন নেবেন কীভাবে?
শীত আসতেই ত্বকের বাড়তি যত্ন নিতে শুরু করেছেন কমবেশি সবাই। তবে দাঁতের কথা ভুলে গেলে কী হবে? শরীরের অন্যান্য অঙ্গের সঙ্গে দাঁতের যত্নও অপরিহার্য।
শীতে দাঁতের পুরোনো রোগগুলো বেড়ে যায়। এ সময় অনেকেরই ঠান্ডা পানির প্রভাবে দাঁতে ব্যথা, শিরশিরানি হওয়া, মাড়ি ফুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: গাজর খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের কী হয়?
এক্ষেত্রে গরম কিংবা ঠান্ডা পানি, এমনকি বাতাসের সংস্পর্শেও দাঁতের ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। এর প্রধান কারণ সেলুলোজ জাতীয় আঁশযুক্ত খাবার খুব সহজে দাঁতের ফাঁকে ও মাড়িতে আটকে যায়।
এই খাবার দীর্ঘ সময় আটকে থাকার ফলে মাড়ি ও দাঁত দুটোই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এতে দাঁতে হাল্কা বা তীব্র ব্যথা হয়ে থাকে।
স্বাভাবিকভাবে শীতের সময় এটা বেশি দেখা যায়। আর তাই শীতের সময় দাঁতের যত্নে কি করবেন? চলুন জানা যাক সে সম্পর্কে-
আরও পড়ুন: ধূমপানে বুদ্ধি কমে, বলছে গবেষণা
> নিয়মিত দু’বেলা দাঁত ব্রাশ করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে ও সকালে নাশতা খাওয়ার পর।
> সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। ব্রাশ সামনে-পেছনে করে দাঁত মাবেন না। এতে দাঁতের ক্ষয় হয়। দাঁত ব্রাশ করতে হবে আস্তে আস্তে ওপরে-নিচে করে।
নিচের পাটির দাঁতের জন্য ব্রাশ দাঁতের গোড়ার দিক থেকে ওপরের দিকে নিতে হবে। ঠিক তেমনি ওপরের পাটির জন্য দাঁতের গোড়ার দিক থেকে নিচের দিকে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: চোখের সামনে কারও হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত যা করবেন
> দেড় থেকে দুই মিনিট দাঁত ব্রাশই যথেষ্ট। এর বেশি করার দরকার পড়ে না। করলে দাঁত ক্ষয় হয়ে যেতে পারে।
> দুপুরে খাওয়ার পর ভালো করে কুলিকুচি করতে হবে।
> প্রতি দু’মাস অন্তর ব্রাশ ও প্রতি ৩ মাস অন্তর টুথপেষ্ট পরিবর্তন করতে হবে।
আরও পড়ুন: শীতে সুস্থ থাকতে ভরসা রাখুন ৫ সুপারফুডে
সমস্যা হলে করণীয়-
> দাঁতের ব্যথা সাময়িকভাবে কমানো কোনো চিকিৎসা নয়। সব সময় দাঁতের যত্নের প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
> মাড়ি থেকে যদি ব্রাশ করার সময় বা অন্য সময়ও রক্ত পড়ে তাহলে দাঁতের স্কেলিং দরকার।
> খাবার পর কিংবা অন্য যে কোনো সময় যদি দাঁত ব্যথা বা শিরশির করে তাহলে দেরি না করে ডেন্টিস্টের সঙ্গে দেখা করুন।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস রোগীরা চোখে ছানি পড়া ঠেকাতে যা করবেন
> সেনসিটিভিটি কমানোর জন্য ফ্লোরাইড জাতীয় ভালো পেস্ট ব্যবহার করতে হবে।
> অনেক সময় ব্রাশ ব্যবহারে অবহেলা ও অতিরিক্ত ব্রাশের কারণে দাঁত ক্ষয়ে যায়। এক্ষেত্রে দাঁতের ক্ষয়ে যাওয়া রোধে ফিলিং ও কোটিং করতে হয়। এতে ক্ষয় পূরণ হয়। বেশি ক্ষয় হয়ে ব্যথা শুরু হলে রুট ক্যানেল চিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে।
> বছরে অন্তত দু’বার ডেন্টিস্টের কাছে দাঁত দেখানো উচিত। এতে আপনার দাঁতে কি সমস্যা হয়েছে সেই অনুযায়ী অল্পতেই সমাধান দেয়া যাবে।
আরও পড়ুন: মুখে যে ৫ লক্ষণ দেখলে ধূমপায়ীরা সতর্ক হবেন
যা পরিহার করতে হবে-
> দাঁত ব্যথা করলে গরম সেঁক দেওয়া উচিত নয়। বরফ দিতে হবে। তবে লবণ গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে।
> দাঁতের পোকা বলে কিছু নেই। তাই ভ্রান্ত ধারণা পরিহার করতে হবে।
> দাঁত দিয়ে নখ কাটা উচিত নয়। এতে দাঁতের ক্ষয় হয়।
> দাঁত দিয়ে কোল্ডড্রিংস জাতীয় বোতলের মুখ খোলা উচিত নয়।
> কোমলপানীয়, পান, নেশা জাতীয় দ্রব্য যতটা সম্ভব পরিহার করতে হবে।
জেএমএস/জিকেএস