পুরুষের টেস্টোস্টেরন অতিরিক্ত বেড়ে বা কমে গেলে কী হয়?
মো. বিল্লাল হোসেন
টেস্টোস্টেরন নামটির সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। এটিকে আসলে পুরুষের সেক্স হরমোন। এই হরমোন স্টেরয়েডজাতীয় হরমোন, যা প্রধানত কোলেস্টেরল থেকে সংশ্লেষিত হয়ে তৈরি হয়। টেস্টোস্টেরন হরমোন প্রধানত পুরুষ জননতন্ত্রের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে।
তবে এটি হাড়ের ঘনত্ব ও মুড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এসব কথা সম্পর্কে মোটামুটি সম্যক ধারণা হয়তো সবারই আছে। তবে আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন থাকে যদি টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ পুরুষের দেহে অতিরিক্ত বেশি অথবা কম হয়ে যায় সেক্ষেত্রে কি ধরনের সমস্যা হতে পারে?
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক যদি পুরুষদের দেহে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ খুব বেশি বেড়ে যায় তাহলে কি ঘটতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের তথ্যমতে, পুরুষের দেহের টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে-
>> শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়, শুক্রাশয় শুকিয়ে যায় ও যৌন অক্ষমতা বেড়ে যায়।
>> হৃদযন্ত্রের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
>> প্রোস্টেট অস্বাভাবিক হারে বাড়ে ও প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
>> যকৃতের সমস্যা দেখা যায়।
>> পায়ে পানি জমতে পারে ও পা ফুলে যেতে পারে।
>> ওজন বেড়ে যায়।
>> উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়।
>> অনিদ্রা ও মাথাব্যথা বেড়ে যায়।
>> কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে খাটো হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
>> আচরণগত বিভিন্ন ত্রুটি পরিলক্ষিত হয় যেমন- হঠাৎ রেগে যাওয়া বা সব সময় নিশ্চুপ হয়ে থাকা।
কারো দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে উপরোক্ত সমস্যাগুলোর যে কোনোটি দেখা দিতে পারে। তবে কারো দেহে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কমে গেলে কী হতে পারে?
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুরুষের দেহে টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের দেহে অন্ততপক্ষে প্রতিবছর এক-দুই শতাংশ টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কমতে থাকে।
এভাবে টেস্টোস্টেরন কমতে থাকলে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন সেগুলো হলো-
>> দেহ ত্বকের লোম সংখ্যা কমে যেতে পারে।
>> পেশির ঘনত্ব কমে যেতে পারে।
>> অক্ষমতা, ইনফার্টিলিটি কিংবা শুক্রাণু সংখ্যা কমে যাওয়ার মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
>> অমনোযোগী হয়ে ওঠা।
>> মানসিক অবসাদে ভোগা।
>> হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়, ফলে ভেঙে যাওয়া বা ফ্রাকচার হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
লেখক: শিক্ষার্থী, ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ।
জেএমএস/জিকেএস