ফল খেলেও হতে পারে বিপদ!
ফল স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কথায় আছে খালি পেটে পানি আর ভরা পেটে ফল খাওয়ার মতো উপকারিতা অন্য খাবারে নেই। ফল ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইবারের দুর্দান্ত উৎস।
তবে চিকিৎসকদের মতে, বেশি পরিমাণে ফল খেলে ক্ষতি হতে পারে, কারণ এতে ফ্রুক্টোজ সুগার বেশি থাকে। পুষ্টিবিদদের মতে, দু’টি ফল খেলে শরীর নিয়ে কমই ভাবতে হবে।
নিয়মিত ফল খেলে ওজন কমে ও ত্বক ভালো থাকে। তবে ফলের সম্পূর্ণ উপকার পেতে হলে তা খেতে হবে সঠিক সময়ে।
উচ্চ ফ্রুক্টোজ গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ফলে থাকে ফ্রুক্টোজ। এতে থাকে প্রাকৃতিক ক্যালোরিযুক্ত মিষ্টি। ফ্রুক্টোজ চিনির চেয়েও মিষ্টি। যা বিভিন্ন ফল মধু ও কিছু সবজিতে থাকে। যদি আপনি উচ্চ মাত্রায় ফ্রুক্টোজ গ্রহণ করেন, তাহলে শরীরে চর্বি জমতে পারে।
অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ গ্রহণে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ে। ফ্রুক্টোজের ১০০ শতাংশই যকৃতে গিয়ে ফ্যাটি অ্যাসিড, ট্রাইগ্লিসারাইড, ভিএলডিএল ইত্যাদি ক্ষতিকর চর্বিরূপে জমা হতে থাকে।
আপনি যদি ১২০ ক্যালোরি গ্লুকোজ খান, দিনের শেষে তা এক ক্যালোরি চর্বিরূপে জমা হয়। তবে ১২০ ক্যালোরি ফ্রুক্টোজের প্রায় ৪০ ক্যালোরি শেষ পর্যন্ত চর্বিতে পরিণত হয়।
যকৃতে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ধীরে ধীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। যা টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভারের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ফ্রুক্টোজ প্রাকৃতিক মিষ্টি। যা অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে ওজন বাড়তে পারে। শরীরে চর্বি বাড়লেই স্থূলতা ও ডায়াবেটিস হতে পারে।
এছাড়াও অত্যধিক ফ্রুক্টোজ গ্রহণের ফলে পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া ও হজমজনিত ব্যাধি যেমন ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) হতে পারে।
ফল কখন ও কীভাবে খাবেন?
আপনি যদি ফলের সবটুকু পুষ্টিগুণ শরীরে পেতে চান তাহলে সকালের নাস্তায় খান। আর যদি স্বাস্থ্য সচেতন হন বা শরীরচর্চা করেন নিয়মিত সেক্ষেত্রে ব্যায়ামের পরে ও শুরুর করার আগে ফল খেতে পারেন।
ফল এবং ফলের রসের মধ্যে পার্থক্য কী?
পুষ্টিবিদদের মতে, ফলের রসের চেয়ে আস্ত ফলই বেশি উপকারী। ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর ও হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষকদের দাবি, আস্ত ফল খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।
আস্ত ফলে থাকে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, মিনারেল ও ফাইটোকেমিক্যাল। এগুলো রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমায়। ক্যানসার ও হার্টের সমস্যা কমায়।
তবে ফলের রসে ভিটামিন, ফাইবার ও পটাসিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। ফলের রসের চেয়ে পুরো ফলে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ২৩-৫৪ শতাংশ বেশি থাকে। চিনির পরিমাণ অন্তত ৩৫ শতাংশ কম থাকে। তাই ফলের উপকারিতা বেশি।
সূত্র: ওয়েব এমডি/ইনসাইডার
জেএমএস/জিকেএস