রোজায় হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়
প্রচণ্ড গরমে অনেকেই হিট স্ট্রোক করে থাকেন। হিট স্ট্রোক হচ্ছে মূলত দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্টি হওয়া জটিলতা। এক্ষেত্রে শরীর একবারেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে।
এবার প্রচণ্ড গরমে রোজা হওয়ার কারণে শরীরে দেখা দিতে পারে পানিশূন্যতা। আর এ কারণেই কিন্তু যখন তখন হিট স্ট্রোক হতে পারে!
রোদে যারা দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করেন; তাদের যেমন হিট স্ট্রোক হতে পারে, আবার বয়স্ক ও শিশুদেরও এমনটি হতে পারে। এ ছাড়াও শরীরে পানিশূন্যতা এবং বিভিন্ন ওষুধের প্রভাবেও গরমে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ
এক্ষেত্রে প্রথমে হিট ক্র্যাম্প হতে পারে। এর ফলে মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল লাগে এবং সবসময় পিপাসা পায়। পরবর্তীতে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব, অসংলগ্ন আচরণ ইত্যাদি দেখা দেয়। এ ছাড়াও শরীরের তাপ বৃদ্ধি পায় ও প্রচুর ঘাম ঝড়ে।
হিট স্ট্রোকের আগাম এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। হিট স্ট্রোক হলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়। ঘাম বন্ধ হয়ে যায়।
ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যায়। এমনকি নিঃশ্বাস দ্রুত হয় ও নাড়ির স্পন্দন কমে আসে বা দ্রুত হয়। রক্তচাপ কমে যায়। খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক আচরণ, হ্যালুসিনেশন, অসংলগ্ন ইত্যাদি। এমনকি রোগী অজ্ঞান হয়েও যেতে পারে।
তাই হিট স্ট্রোক হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ করা উচিত। ঘরোয়া উপায়েই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকে এড়ানো সম্ভব। এজন্য পুষ্টিকর কিছু খাবার খাওয়া প্রয়োজন। জেনে নিন কোন খাবারগুলো গরমে হিট স্ট্রোক থেকে আপনাকে বাঁচাবে-
বাটার মিল্ক: এখন যেহেতু রোজার মাস, আর ইফতারে তো ঠান্ডা পানীয় রাখতেই হয়! তাই ইফতারে রাখতে পারেন বাটার মিল্ক। এটি যেমন আপনাকে ঠান্ডা করবে; ঠিক তেমনি শরীরে পুষ্টিও দেবে।
বাটার মিল্কে থাকে প্রোবায়োটিক, প্রোটিন এবং ভিটামিন। যা আপনার দেশের তাপমাত্রাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
পেঁয়াজের রস: আয়ুর্বেদ অনুসারে, বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর সামান্য মধুর সঙ্গে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পান করার উপকারিতা অনেক।
এতে দেহের তাপমাত্রা হ্রাস পায়। সেইসঙ্গে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে যাবে। অতীতে না-কি গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে অনেকেই পেঁয়াজ পকেটে রাখত।
তেঁতুলের রস: গরম কাটানোর জন্য তেঁতুল অনেক উপকারী। তেঁতুল দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং পানিশূন্যতা কাটাতে সাহায্য করে।
এজন্য পানিতে কয়েকটি তেঁতুল সেদ্ধ করে সঙ্গে গুড় মিশিয়ে পান করুন। এতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে। গরমে শরীরও থাকবে ঠান্ডা।
আমের রস: বাজারে এখন কাঁচা আম সহজলভ্য। কাঁচা আমের জুস খেতে সবাই কমবেশি পছন্দ করেন। কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
গরমে হিট স্ট্রোক থেকেও রক্ষা করে কাঁচা আমে থাকা পুষ্টিগুণ। কাঁচা আম শরীরের তাপ কমাতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর এই পানীয় হাতাশা থেকেও মুক্তি দেয়। সেইসঙ্গে ডায়রিয়াও প্রতিরোধ করে।
ছাতুর শরবত: ছাতু শরীরে শক্তির জোগান দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও ভালো ছাতু। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণও থাকে নিয়ন্ত্রণে।
ছাতু খেলে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক ইত্যাদি খনিজের চাহিদাও পূরণ হয়ে যায়। হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে ও পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় ছাতু। গরমে ছাতু খেলে শরীর ঠান্ডা হয় এবং পানিশূন্যতাও দূর হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জিকেএস