আপেল সাইডার ভিনেগার যাদের জন্য বিপজ্জনক
দ্রুত ওজন কমাতে আপেল সাইডার ভিনেগার পানের বিকল্প নেই। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপসহ দীর্ঘমেয়াদি নানা সমস্যার সমাধান রয়েছে ভিনেগারে। জানেন কি? দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত আপেল সাইডার ভিনেগার পান করলে শারীরিক নানা সমস্যা হতে পারে।
ত্বকে পোড়াভাব, দাঁত ক্ষয়, পাকস্থলির সমস্যাসহ হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বাড়ায় আপেল সাইডার ভিনেগার। এ ছাড়াও রয়েছে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-
>> আপেল সাইডার ভিনেগার অ্যাসিডযুক্ত পানীয়। অতিরিক্ত অ্যাসিডিক খাবার দাঁতের এনামেলকে দুর্বল করে, এতে দাঁত ক্ষয় হতে থাকে। ডেন্টাল অ্যান্ড ক্রানিয়োফেসিয়াল রিসার্চে জানানো হয়, নিয়মিত আপেল সাইডার ভিনেগার পান করলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পাশাপাশি মিষ্টি ও অধিক ঠান্ডা খাবার খাওয়ায় দাঁতের মাঝে গর্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে তা ফিলিং করার প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত আপেল সাইডার ভিনেগার পান করলে জিহ্বায় ক্ষত হতে পারে।
>> বোস্টনের হার্ভার্ড মেডিসিন স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবার্ট এইচ শর্মলিংয়ের মতে, আপেল সাইডার ভিনেগার শরীরের পটাশিয়ামের মাত্রা কমিয়ে ফেলে। শরীরের পটাসিয়াম লেভেল কমে গেলে হয় হাইকোক্লেমিয়া। দীর্ঘদিন এ সমস্যায় ভুগলে পেশী দুর্বল হয় এবং পক্ষাঘাত হতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তি পেশীর সমস্যা বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
>> অপরিশোধিত আপেল সাইডার ভিনেগার পান করলে হজমজনিত সমস্যা হতে পারে। যার ফলে পরবর্তীতে আলসারের ঝুঁকি বাড়ে। অনেকেই খাবারের পর আপেল সাইডার ভিনেগার পান করতে গিয়ে বমি ও বদহজমের শিকার হয়েছেন বলে এক গবেষণায় জানা যায়। তাই অবশ্যই খাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে ভিনেগার পান করুন।
>> ভিনেগার যেহেতু অ্যাসিডিক, তাই সরাসরি ত্বকে ব্যবহারের ফলে জ্বলুনির সৃষ্টি হতে পারে। ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টক্সিক সেন্টারের মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী, আপেল সাইডার ভিনেগার ত্বকে ব্যবহার করলে চামড়া পুড়েও যেতে পারে। ক্লিনিক্যাল অ্যান্ট অ্যাসথেটিক ডার্মাটোলজি জার্নালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, এক তরুণ তার নাকের উপরের তিল অপসারণের জন্য আপেল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করেছিলেন। এরপর সেখানকার চমড়া উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
>> চিকিৎসক ও গবেষক ডেভিড এল কাটস বলেছেন, আপেল সাইডার ভিনেগার গ্রহণের ফলে কিছু ওষুধের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া ঘটতে পারে। বিশেষ করে ডায়ুরিটিকস, রেবেস্টিকস এবং ইনসুলিন গ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীরা ইনসুলিনের পাশাপাশি যদি ভিনেগার গ্রহণ করেন; তবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (ব্লাড সুগার কমে যায়) হতে পারে। এজন্য আপেল সাইডার ভিনেগার খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
যেভাবে আপেল সাইডার ভিনেগার খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত থাকবেন-
১. কম পরিমাণে আপেল সাইডার ভিনেগার খেতে হবে।
২. ভুলেও ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে না।
৩. দাঁতে যেন সরাসরি না লাগে, এর জন্য স্ট্র দিয়ে পান করতে পারেন।
৪. দিনে ১৫ মিলিলিটারের বেশি ভিনেগার পান না করাই ভালো।
৫. হজমজনিত সমস্যা, পটাশিয়াম কমে যাওয়া ও ডায়াবেটিস রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
হেলথলাইন/এভরিডে হেলথ/জেএমএস/এসইউ/জিকেএস