রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দূরে রাখুন চিনি
মিষ্টি খাবারের প্রধান উৎসই হলো চিনি। মিষ্টি খেতে যতই ইচ্ছে হোক না কেন, চিনি থেকে দূরে থাকতে হবে এই সময়ে। চিনি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ফলে আমাদের শরীরে নানাবিধ রোগের জন্ম নেয়। চিকিৎসকদের মতে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। সেক্ষেত্রে নিজেকে সুস্থ রাখতে চিনি এড়িয়ে চলা জরুরি।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বের প্রায় সিংহভাগ মানুষ প্রতিদিন প্রায় ২২ চামচ চিনি খেয়ে থাকেন, যা বিপদসীমার থেকে অনেকটাই ওপরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির দিনে মাত্র পাঁচ গ্রামের বেশি চিনি খাওয়া কখনোই উচিত নয়।
চিনি যত কম খাবেন, ততই সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকবেন। কিন্তু আমরা সকলেই এই নিয়ম অমান্য করে সকালের চা থেকে শুরু করে ডিনার, সবেতেই মিষ্টিকে উপভোগ করে থাকি। সামান্য অসতর্কতার কারণে হয়তো অজান্তেই বিপদ ডেকে আনছি। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানাচ্ছে বোল্ডস্কাই-
ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়: এক গবেষণায় জানা গেছে, চিনি খাওয়ার মাত্রা যত বাড়ছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়: মাত্রাতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে প্যানক্রিয়েটিক ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি প্রস্টেট ক্যানসার, ক্ষুদ্রান্তের ক্যানসার, গলা, ফুসফুস, রেক্টাম ও স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ওজন বাড়ায়: মাত্রাতিরিক্ত চিনি খেলে শরীরের ওজন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ওজন বৃদ্ধি পেলেই নানাবিধ রোগের জন্ম নেয়।
কিডনির রোগ: বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনি খেলে কিডনির নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ, চিনি কিডনির কার্যক্ষমতাকে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়।
মানসিক অবসাদ: পাবলিক হেলথ জার্নালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, মাত্রাতিরিক্ত চিনি খেলে মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। কারণ, রক্তে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি হলে মস্তিষ্কের ডোপামিন হরমোনের ক্ষরণ ধীরে ধীরে কমতে থাকে, যা মানসিক উদ্বেগকে বাড়িয়ে তোলে।
দাঁতের ক্ষয়: অনেকেই ভাবেন মিষ্টি জিনিস দাঁতের জন্য ক্ষতিকারক, বিশেষ করে চকোলেট। কিন্তু না, চকোলেট বা মিষ্টি জাতীয় খাদ্য তৈরিতে যে চিনির প্রয়োজন হয়, সেই চিনি দাঁতের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
স্মৃতিশক্তিকে নষ্ট করে: একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দেহের পাশাপাশি চিনির ক্ষতিকর প্রভাব মস্তিষ্কের উপরও পড়ে। যার ফলে শিশুর শেখার ক্ষমতা লোপ পায়।
ফ্যাটি লিভার: গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত চিনি লিভারে মেদ জমাতে শুরু করে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং লিভারের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
এইচএন/এএ/এমকেএইচ