ওজন ঠিক রাখতে মনকে সুস্থ রাখুন

পুরোনো ডেনিমটা কোমরের কাছে টাইট হচ্ছে দেখে নিশ্চয়ই মনে খুব দুঃখ হচ্ছে! খালি ভাবছেন ইস! যদি দশ বছরের আগের চেহারাটা ফিরে পেতাম? ডায়েট, এক্সারসাইজ কতই না সাধনা করেছেন তাও ওয়েট মেশিনের কাঁটা আর ষাট বা সত্তরের থেকে নীচে নামে না।

কিন্তু ভেবে দেখুন তো ফিট থাকার মাপকাঠি কি শুধুই একটা মেশিন? কোনটা ৫০ কেজি দেখালে, ডাক্তারের চেম্বারে ৫৩ কেজি দেখায়। আবার বাড়িতে মাপলে দেখা যায় প্রায় ৫৭ ছুঁই ছুঁই। তা হলেই বুঝুন, এমন একটা যন্ত্রকে বিশ্বাস করবেন, না নিজের শরীরকে? আমি জানি যে আপনারা বলবেন যে কিছু তো একটা মাপকাঠি হওয়া উচিত। না হলে বুঝবেন কি করে রোগা হলেন না মোটা। আপত্তিটা সেখানেই, মোটা-রোগাটা কোনও ফ্যাক্টরই নয়। আসল কথাটা ফিট থাকা।

এই যে সারাক্ষণ মোটা হয়ে গেলাম, এই ভাবনাটাই অসুস্হ করার জন্য যথেষ্ট। মহিলাদের ছোটবেলা থেকেই শেখানো হয় সবার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে, কিন্তু নিজের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা উচিত সেটা মোটেও বলা হয় না। ফলে দিনের পর দিন আমরা শরীরের উপর অত্যাচার করি। কখনও অতিরিক্ত খেয়ে, কখনও না ঘুমিয়ে, কখনও আবার ক্র্যাশ ডায়েটিং করে। আর তারপর যখন শরীর বিদ্রোহ ঘোষণা করে তখনই কপালকে দোষারোপ করি।

আপনি বাড়ির সবাইকে খুশি রাখার যেমন চেষ্টা করেন, তেমনই যদি একটু নিজের যত্ন নেন তা হলে দেখবেন শরীর এমনিই ভাল থাকবে। আচ্ছা একটা উদাহরণ দিই। ধরে নিলাম জীবনে আপনার শাশুড়ির সঙ্গে আপনার ঝগড়া হয়নি, তার মানে কি আপনি আপনার শাশুড়িকে অত্যন্ত ভালবাসেন? নিশ্চয় না। ঠিক যেমন ঝগড়া না হওয়াটা ভালবাসার ইঙ্গিত নয়, তেমনই ওয়েট মেশিনের নম্বর ফিটনেসের মাপকাঠি নয়।

আপনি ফিট কি না সেটা আপনি নিজেই উত্তর দিতে পারবেন। আপনার শরীরই জানান দেবে আপনি ফিট কি না। আর আপনি জানেন কি মন রিল্যাক্স থাকলে ফ্যাটি অ্যাসিড মোবিলাইজ হয় এবং বডি ফ্যাট কমে। কিন্তু তাই বলে ভেবে নেবেন না যে দশ বছরের আগের চেহারাটা আপনি ফিরে পাবেন। কারণ তখনকার পরিস্হিতি আর এখনকার পরিস্হিতির মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ।

স্কুল বা কলেজে পড়ার সময়ে যা খেতেন বা যত অ্যাকটিভ ছিলেন, তার সঙ্গে এখনকার সময় মেলানো মুশকিল। তখন আপনাকে বাড়ির দশটা লোকের খেয়াল রাখতে হত না। তখন কোমরের মাপ ২৬ ইঞ্চি থাকতেই পারে।

কিন্তু এখন আপনার অনেক দায়িত্ব। ভেবেই দেখুন না তখনকার মতো ফুড হ্যাবিট কি আপনি তৈরি করতে পারবেন এখন? আসলে নিজেদের জিনিসকে আমরা ভীষণ অবহেলা করি। তবে শরীরকে যদি আপনি একটু খেয়াল রাখেন তাহলেই দেখবেন আপনি একদম ফিট! শুধু হালটা শক্ত করে ধরুন।