করোনা সম্পর্কে আপনার সন্তানকে সচেতন করবেন যেভাবে
শিশুদের জানার পরিধি বড়দের মতো নয়। তাই যেকোনো বিষয় সম্পর্কে তাদের জানানো এবং সচেতন করার দায়িত্ব অভিভাবকদের। বর্তমানে করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। এ বিষয়ে শিশুকে সচেতন করতে হবে আপনাকেই।
সন্তানের সঙ্গে কথা বলার আগে নিজেকে সঠিক তথ্য জানতে হবে। করোনা নিয়ে প্রচুর ভুল ধারণা ছড়িয়েছে, কাজেই কোনটা সত্যি আর কোনটা ভুল সেটা আগে আপনাকেই জানতে হবে। ঠিকঠাক তথ্য হাতে থাকলে তবেই সন্তানের সব প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারবেন আপনি।
সন্তানকে বোঝাতে হবে একদম তাদের মতো করে। আপনার সন্তানের বয়স যদি পাঁচ বছর হয়, তবে একগাদা ভারী ভারী বৈজ্ঞানিক শব্দ ব্যবহার করে তাকে বিভ্রান্ত করবেন না। গল্পের ছলে তাকে বোঝান পরিস্থিতি এখন কতটা গুরুতর। তবে শিশু যেন অহেতুক ভয় না পেয়ে যায় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
আপনার সন্তান যদি কিছুটা বড় হয়, তাহলে হয়তো নিজের বন্ধুবান্ধবের সুবাদে সে খানিকটা আগে থেকেই জানে। তেমন হলে তার সঙ্গে আরও বিশদে ব্যাপারটা আলোচনা করতে পারেন। সন্তানকে উৎসাহ দিন বইপত্র পড়তে, তবে কোনোভাবেই যেন তার কাছে ভুল তথ্য না পৌঁছায় সেটিও নিশ্চিত করুন।
আপনি গম্ভীর হয়ে থাকলে সেই স্ট্রেস আপনার সন্তানের উপরেও কাজ করবে। শিশু নিজে থেকে করোনাভাইরাস নিয়ে কথা বলতে চাইলে কখনোই এড়িয়ে যাবেন না। তার সঙ্গে কথা বলুন, পৃথিবীর কোন দেশে কী পরিস্থিতি তার সঙ্গে শেয়ার করুন। তবে এমন কোনো ছবি দেখাবেন না যাতে তার মনে ছাপ পড়ে।
হঠাৎ ছুটি পেয়ে আপনার সন্তান দিনের অনেকটা সময় ইন্টারনেটে কাটাতে পারে। খেয়াল রাখুন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যের শিকার যেন সে না হয়। হোয়াটসঅ্যাপ বা অনলাইনে পাওয়া করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য অন্য কোনো বন্ধুকে ফরওয়ার্ড করার আগে যেন সে আপনাকে জানায়, সেটা সন্তানকে বলুন।
ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে কীভাবে আরও অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, কেন ফেক খবর ছড়ানো উচিত নয়, এ ব্যাপারে তাকে বুঝিয়ে দিন। কোন কোন সূত্র থেকে সে আসল খবরগুলো পাবে, তাও জানিয়ে দিতে পারেন।
নিজে সন্তানকে বোঝাতে না পারলে চিকিৎসকের সাহায্য নিন, যিনি আপনাদের কোভিড-19-এর বিপদ সম্পর্কে বোঝাতে পারবেন এবং কীভাবে সেই বিপদ প্রতিহত করা যায়, সে সম্পর্কেও সচেতন করতে পারবেন। সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।
শুধু নিজের জন্যই নয়, সন্তানের জন্যও আশাবাদী থাকুন। আপনার আচরণে নিরাশা ধরা পড়লে তা কিন্তু আপনার সন্তানকেও প্রভাবিত করবে। সারাক্ষণ অসুখবিসুখ আর মৃত্যুর খবর আলোচনা করবেন না। বরং ক’জন মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন, সে নিয়ে কথা বলুন। নিজে স্বাস্থ্য ও আচরণবিধি মেনে চলুন, সন্তানকেও উৎসাহিত করুন।
ফেমিনা/এইচএন/এমকেএইচ