মোবাইল ফোনের নেশা কাটাবেন যেভাবে
ব্যস্ত এই জীবনযাপনে মোবাইল ফোন আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কিন্তু এই ফোনের প্রতি অধিক আকর্ষণ যেন নেশার মতো হয়ে যাচ্ছে অনেকের! আর এটি হতে পারে যেকোনো বয়সীরই। বাড়ির ছোট্ট থেকে পৌঢ় সদস্য, মোবাইলের নেশায় পেয়ে বসছে সবাইকেই!
সারাক্ষণ মোবাইল ঘাঁটতে গিয়ে ভুলে যাচ্ছেন সম্পর্কের চর্চা করতে। মুখোমুখি আলাপ, গল্প কিংবা আড্ডা জমছে না আর। কালেভাদ্রে গল্প জমলেও খানিক পরেই আবার মোবাইলে বুঁদ। অন্তর্জালের দুনিয়া আর বাস্তব দুনিয়ার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন অনেকে। কখনও সেই চাপ এত বেশি হয়ে পড়ছে যে বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ডি টক্সিংয়ের প্রয়োজন হয়৷
ডি টক্সিং মাত্রই তা যে চিকিৎসকের ক্লিনিকে বা হাসপাতালে উপস্থিত থেকে করাতে হবে এমন নয়। প্রথম প্রথম বাড়িতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শুরু করা যেতে পারে এই কাজ। খুব সহজ কয়েকটি উপায় অবলম্বন করলে বাড়িতেও ডি টক্সিংয়ের প্রাথমিক ধাপগুলো শুরু করতে পারেন।
টেকনোলজির জন্য যদি মানসিক চাপ বাড়ে, অশান্তি শুরু হয়, বুঝতে হবে আপনি ব্যাপারটা সামলাতে পারছেন না। তখন কাজের ও ব্যক্তিগত সময়কে আলাদা করে নিন। বন্ধু ও সহকর্মীদের জানান যে একটা সময়ের পর আর আপনাকে ফোনে, মেইলে বা চ্যাটে পাওয়া যাবে না।
সব যোগাযোগ ছিন্ন করতে অসুবিধা হলে আলাদা ফোন রাখুন, জরুরি দরকারে যেখানে যোগাযোগ করা যাবে।
অবসর সময়ে মেইল বা টেক্সট পুরোপুরি এড়ানো সম্ভব না হলে চেষ্টা করুন নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে চেক করতে।
গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সামনাসামনি করার চেষ্টা করুন। কম সময়ে, ভুল বোঝাবুঝি এড়িয়ে সমাধানে পৌঁছতে পারবেন।
ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও টেক্সটিং বা মেইলের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সামনে বসে কথা বলা। এতে স্ট্রেস অনেক কম থাকে। তাই খুব দরকার না পড়লে টেক্সট বা হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে ফোনে কথা বলুন বা সামনাসামনি দেখা করুন।
পরিবার ও নিজের জন্য রাখা সময়ে যেন টান না পড়ে। একঘণ্টা, দুই ঘণ্টা, যতটুকু সময়ই রাখছেন তা যেন যথাসম্ভব কম্পিউটার বা মোবাইল ফ্রি থাকে।
নেটে পড়াশোনা করার পাশাপাশি বই পড়াও বজায় রাখুন।
বিছানায় যাওয়ার অন্তত দু-এক ঘণ্টা আগে থেকে নেট, মোবাইল সব বন্ধ করে দিন। অনিদ্রার প্রকোপ কমবে।
সপ্তাহে অন্তত এক বেলা টেকনোলজিকে যথাসম্ভব বর্জন করে যা করতে মন চায়, তাই করুন। কানে আইপডের তার না গুঁজে শুনুন পাখির ডাক।
আনন্দবাজার/এইচএন/এমকেএইচ