অতিরিক্ত ঘুম শরীরের যেসব ক্ষতি করে
ঘুম কম হলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আবার ঘুম বেশি হলেও তা শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের ক্ষেত্রে রাতে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। কিন্তু এর বেশি ঘুম বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার জন্য দায়ী। এবার বেশি ঘুমানোর কয়েকটি ক্ষতিকর দিক জেনে নিন-
১. ২০১৪ সালে প্রাপ্তবয়স্ক যমজদের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়। এতে দেখা যায় দীর্ঘ সময় ঘুমালে বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়ে। ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো ব্যক্তিদের ২৭ ভাগের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণ দেখা গেছে। আর যারা ৯ ঘণ্টা বা বেশি ঘুমিয়েছেন তাদের ৪৯ ভাগে বিষণ্নতার লক্ষণ পাওয়া গেছে। ২০১২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে বয়স্ক নারীদের মধ্যে যারা কম বা বেশি ঘুমান, তাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
২. ২০১৩ সালে প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের উপর কোরিয়ায় একটি গবেষণা পরিচালিত হয়। এতে সাড়ে ৬শ’ নারী অংশগ্রহণ করেন। ফলাফলে দেখা যায় যারা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান তাদের ক্ষেত্রে সন্তানধারণের সক্ষমতা বেশি। অন্যদিকে যারা ৯-১১ ঘণ্টা ঘুমান, তাদের ক্ষেত্রে উল্টো। তবে এর কার্যকারণ সম্পর্ক নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয়।
৩. বেশি ঘুমানোর সঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, যারা ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমান ৬ বছরের মধ্যে তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। অন্যদিকে যারা ৭-৮ ঘণ্টার মতো ঘুমান তাদের শরীর কম ঝুঁকিতে থাকে।
৪. গবেষণায় দেখা গেছে বেশি ঘুমানোর কারণ ৬ বছরের মধ্যে ওজন বেড়ে যেতে পারে। যারা ৯-১০ ঘণ্টা ঘুমান তাদের ২৫ ভাগের ওজন বেড়েছে। এমনকি খাবার গ্রহণে সতর্কতা ও শারীরিক কসরত সত্ত্বেও স্থূলতা রোধ করা যায়নি।
৫. ২০১২ সালে আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির মিটিংয়ে জানানো হয়, ঘুমের সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের সম্পর্ক রয়েছে। সেখানে ৩ হাজার ব্যক্তির তথ্য-উপাত্ত নিয়ে পরিচালিত গবেষণা ফলাফল জানানো হয়। এতে বলা হয় যারা রাতে ৮ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ঘুমায় তাদের ক্ষেত্রে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। যারা কম ঘুমায় তাদের চেয়ে এদের টন্সিলাইটিসের ঝুঁকি দ্বিগুণ ও করনারি আর্টারির ঝুঁকি ১.১ গুণ। যা কম বয়সে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
৬. ১৬টি আলাদা গবেষণার উপর একটি রিভিউ প্রকাশ হয় ২০১০ সালে। এতে দেখা যায় যারা প্রয়োজনের তুলনায় কম বা বেশি ঘুমায়, উভয়পক্ষেই মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে। ১৪ লাখের কাছাকাছি ব্যক্তির উপর পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বেশি ঘুমানোর ফলে (৮ ঘণ্টার বেশি) এ ঝুঁকি বাড়ে ১.৩ ভাগ।
এইচএন/পিআর