বৌ-শাশুড়ির যুদ্ধ কেন হয়
বিয়ের পর কোন না কোন কারণে ছেলের বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন শাশুড়ি মা। সব কাজেই খুঁত ধরা বা দোষ খুঁজে বের করা প্রায় নিত্য দিনের ঘটনা।
এমনকি স্বামীর সঙ্গে বাইরে গেলেও মুখ ভার হয় শাশুড়ির। নতুন সংসারে শাশুড়ির এমন আচরণে স্বভাবতই ভেঙে পড়েন নববধূ। কিন্তু কেন শাশুড়িরা এমন ব্যবহার করেন? সকলেই চোখের সামনে শাশুড়ি বউমার খারাপ সম্পর্ক দেখতে পান।
আবার অনেকে বিষয় অদেখা করে দেন বা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রকৃত অর্থে সব শাশুড়িই তার ছেলের বউকে কম বেশি হিংসে করে থাকেন। বিশেষ করে একমাত্র ছেলে হলে তো কথাই নেই। সে কারণেই জেনে নিন শাশুড়ির এই হিংসের আসল কারণ।
১. ছেলের বিয়ে দেওয়ার আগে পর্যন্ত ছেলের জীবনের দায়িত্ব মায়ের উপরেই থাকে। এমনকি ছেলের উপর দখলওদারিত্বও একমাত্র মা করেন। কিন্তু বিয়ের পর ছেলের জীবনের দখল অনেকটা বউয়ের হাতে চলে যায়। ইচ্ছে না থাকলেও এই দখলদরিত্বের রদবদল অনেক ছেলের মা মেনে নিতে পারেন না।
২. ছেলের বিয়ের আগে অবধি গোটা সংসারে কর্তৃত্ব করেন শাশুড়ি। কিন্তু ছেলের বউ ঘরে আসা মানেই ঘর, রান্নাঘর, টাকাকড়ি, নিয়মকানুন অনেকটাই ছেলের বউয়ের অধীনে চলে যায়৷ হঠাৎ এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারেননা শাশুড়িরা। ফলে নিজের অজান্তেই মনের গভীর ছেলের বউয়ের প্রতি রাগ জন্মায়।
৩. ছোট থকে যে ছেলেকে বড় করে এসেছেন হঠাৎ করে তার জীবনে অন্য কারোর গুরুত্ব বৃদ্ধি মেনে নিতে পারেননা মা। ছোটবেলা থেকে ছেলে মায়ের কথা শুনে চলে। হঠাৎ বিয়ের পর মায়ের পরিবর্তে সে বউয়ের কথা শুনছে এটাই মেনে নিতে পারেন না শাশুড়িরা। সে কারণেই তারা বউমার সঙ্গে অহেতুক বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।
৪. কিছু মানুষর স্বভাবই হিংসুটে থাকে। সে কারণেই তারা ছেলের প্রেমিকা, স্ত্রী বা বন্ধুদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এই ধরণের মহিলারা পুত্রবধূর বাড়ির লোকেদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন ও পুত্রবধূর সঙ্গে ঝগড়া করে মানসিক শান্তি লাভ করেন।
৫. সংসারে নতুন সদস্য আসলেই পরিবারের সকলের নজর তার উপরেই থাকে। এই কারণেই হীনমন্যতায় ভোগেন অনেক শাশুড়ি। নিজের সংসারে ছেলে থেকে শুরু করে আত্মীয় পরিজনদের কাছেও ছেলের বউকে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে দেখে তা মনে নিতে পারেননা তারা। সংসারে নিজের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে মনে করে তারা ছেলের বউকে হিংসে করতে শুরু করেন।
৬. মহিলা বারাবরই একটু বেশিই প্রতিযোগিতা পরায়ণ হয়ে থাকেন। এই কারণেই বাড়ির নতুন বউয়ের সঙ্গেও তারা প্রতিযোগিতা শুরু করেন। কম বয়সে তিনি বেশি সুন্দরী ছিলেন, তার বাপের বাড়ির অনের টাকা ছিল, তিনি বিনেদী পরিবারের মেয়ে ছিলেন ইত্যাদি জাহির করে শাশুড়িরা পুত্রবধূকে ছোট করার চেষ্টা করেন। ছেলের বউকে মানসিক কষ্ট দিয়ে শাশুড়িরা নিজেকে সান্ত্বনা দেন।
৭. ছেলের বউকে হিংসে করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল ছেলে হারিয়ে ফেলার ভয়। অনেকই মনে করেন যদি বউমার কথায় তার ছেলে পরিবার ছেড়ে চলে যান তবে শেষ বয়সে তিনি একে হয়ে যাবেন। এই আতঙ্কেই শাশুড়িরা ছেলের বউয়ের সঙ্গে অহেতুক খারাপ ব্যবহার করেন।