সমস্যা যখন গলা বসা
গলা বসে যাওয়া সমস্যাকে সাধারণ সমস্যা মনে হলেও এটি আসলে সাধারণ সমস্যা নয়। কারণ একটু বেখেয়ালে কিংবা উদাসীন হলে এই সমস্যা থেকে দেখা দিতে মারাত্মক কোনো অসুখ। গলার মধ্যের সামান্য উঁচু অংশ, যাকে এদাম অ্যাপল বলে এবং স্বরযন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের গলার স্বর তৈরি হয়। এর মাধ্যমেই গলার স্বরের পিচ ও ফ্রিকোয়েন্সি নির্ধারিত হয়। স্বরযন্ত্রের দুই দিকে দুটি ভোকাল কর্ড থাকে যা কথা বলার সময় ভাইব্রেট করতে থাকে।
ছেলেদের ক্ষেত্রে প্রতি সেকেন্ডে ১৫০-২০০ বার এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রতি সেকেন্ডে ২০০-২৫০ বার ভোকাল কর্ড ভাইব্রেট করে। এটি কিছু মাংসপেশি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
আরও পড়ুন: ব্যথা দূর করার সহজ উপায়
যদি কোনো কারণে ভাইব্রেটে অসামঞ্জস্য হয় তাহলে ভোকাল কর্ডে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং আমাদের কথা বলতে অসুবিধা হয় বা গলার স্বর বসে যায়। পরিবেশের দূষণ ও ধোঁয়া, নাক বন্ধ থাকা, মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়া, পেটের এসিড গলার ভেতর চলে আসা, ধূমপানকারী, গলা খাকারি দিয়ে গলা পরিষ্কার করার চেষ্টা করলেও এ সমস্যা হয়ে থাকে।
ভোকাল কর্ডে রক্ত জমাট বেঁধে নডিউল, গলার পাতলা আবরণ বা মিউকাস ফুলে গিয়ে পলিপ, স্বরযন্ত্রের পানি জমে ইডিমা এমনকি স্বরযন্ত্রে টিবি বা সিফিলিস হলেও গলার স্বর বসে যেতে পারে। ঠান্ডা গলা ও ইনফেকশন থেকেও এ সমস্যা হয়। গলার ক্যান্সার থেকেও এই সমস্যা হয়।
লবণপানি দিয়ে গড়গড়া করাটা সবচেয়ে সাধারণ এবং একই সঙ্গে কার্যকর পদ্ধতি। দিনে অন্তত চারবার লবণপানি দিয়ে গড়গড়া করতে হবে।
ভাঙা গলায় হালকা গরম লেবুপানি ও আদা বেশ কার্যকর। শুকনো আদায় ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী উপাদান রয়েছে, যা গলার বসে যাওয়া স্বরকে স্বাভাবিক করে তুলতে পারে।
আরও পড়ুন: সর্দি থেকে রক্ষা পেতে যা করবেন
গলা ভাঙা উপশমে ভালো আরেকটি পদ্ধতি হলো গরম বাষ্প টানা। ফুটন্ত পানির বাষ্প যদি দৈনিক অন্তত ১০ মিনিট মুখ ও গলা দিয়ে টানা হয়, তবে উপকার হবে।
গলাকে সম্পূর্ণ বিশ্রাম দিতে হবে। ফিসফিস করেও কথা বলা যাবে না। এনডোসকোপি করে গলার ভেতর থেকে চিকিৎসা করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে যায়। বারবার সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
এইচএন/জেআইএম