কাঁচা আমের গুণাগুণ
উচ্চমাত্রার ভিটামিন এ এবং সি সমৃদ্ধ ফল হলো কাঁচা আম। ভিটামিন এ চোখের জন্য খুব উপকারী। চোখের স্নায়ু ও মাংসপেশি শক্তিশালী করতে এর ভূমিকা অপরিহার্য। ভিটামিন সি ছোঁয়াচে রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। দাঁত, চুল, নখ ভালো হওয়ার জন্য ভিটামিন সি জরুরি। মুখের ভেতরের চামড়া উঠে যাওয়া, মাড়িতে ঘা হওয়া, ঠোঁটের কোণায় ঘা, ঠোঁটের চামড়া ফেটে যাওয়া- এসব অসুখ ভালো হওয়ার জন্য দরকার ভিটামিন এ ও সি কাঁচা আমে যা রয়েছে।
ভিটামিন বি সিক্স বা পাইরিডক্সিনও রয়েছে এই ফলে। পাইরিডক্সিন মানুষের মস্তিষ্কে গাবা নামের এক ধরনের হরমোন তৈরি করে, যা প্রতিরোধ করে স্ট্রোক ও মস্তিষ্কের অন্যান্য জটিল রোগ। এতে রয়েছে কপার নামের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা দেহে রক্ত বাড়াতে সাহায্য করে। প্রি-বায়োটিক ডায়াটারি ফাইবার নামের জরুরি উপাদান রয়েছে কাঁচা আমে, যা পাকস্থলি, কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
আমাদের দেহে রক্তের মধ্যে টক্সিন নামের কিছু উপাদান রয়েছে, যা দেহে রোগ তৈরি করে। এই টক্সিনকে কাঁচা আম ধ্বংস করে। গর্ভবতী মায়েরা কাঁচা আম খেলে বাচ্চার মেধা ভালো হয়, জন্মের পর বাচ্চার সংক্রামক রোগ তুলনামূলকভাবে কম হয়। চর্বি কমাতে, ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে কাঁচা আম। যে কোনো কাটা-ছেঁড়া বা অপারেশনের পরে এই ফল কাটা স্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করবে।
তবে ফল অতিরিক্ত টক হলে খাবেন না। এতে কাটা স্থান পেকে পুঁজ জমতে পারে। হালকা টক খাওয়াই উত্তম। বেশি উপকারের আশায় কাঁচা আম বেশি খেলে ডায়রিয়া হতে পারে। ডায়রিয়া চলাকালে কাঁচা আম খাবেন না। এই ফলে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম রয়েছে। পটাশিয়াম হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য কাঁচা আম সুফল বয়ে আনে। লক্ষ রাখুন, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগীরা কাঁচা আম লবণ বা চিনি দিয়ে খাবেন না। কাঁচা লবণ রক্তচাপ বাড়ায় আর চিনি বা মিষ্টি রক্তের সুগার বাড়ায়।
ডায়াবেটিস রোগীরা এই ফল খেতে পারবেন, কারণ কাঁচা আমে চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই, তাই এই ফল খেলে ওজন বা ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। হৃদরোগীদের জন্য এটি উপযুক্ত ফল। কাঁচা আমে ভিটামিন সি পাকা আমের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। তাই পুষ্টির বিচারে কাঁচা আম হোক আপনার পরিবারের সদস্য। কাঁচা আম সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে খাওয়াই ভালো। রাতে খাবেন না, অ্যাসিডিটি বা গ্যাস হতে পারে। আর কাঁচা আমের আমসত্ত্ব বা আচার যা-ই হোক, দ্রুত খাওয়াই ভাল। কারণ দেরি করে খেলে পুষ্টি কমে যাবে।
এইচএন/এমএস