নকশী কাঁথার খোঁজ
কেবল সুঁই আর সুতোর নয় কারুকাজ নয়, এ যেন চিরন্তন বাঙালির ভালোবাসার গল্প। এক একটি নকশী কাঁথা তৈরি করতে কখনো কখনো প্রায় এক বছর সময় লেগে যায়। গ্রামে খাওয়ার পর ক্লান্ত দুপুরে ঘরের সব কাজ সেরে ঘরের বৌ টি বসে নকশী কাঁথা নিয়ে। মুখে পান আর গুনগুন করে গাওয়া গানের তালে তালে সুঁইয়ের নাচন তৈরি করে এক একটি না বলা কথা। কতশত ইতিহাস আর গল্প। গ্রামের বয়স্কদের মুখে শোনা গল্প যেন নতুন করে জন্ম নেয় এই নকশী কাঁথায়।
নকশি কাঁথা সাধারণত দুই পাটের অথবা তিন পাটের হয়ে থাকে। চার-পাঁচ পাটের কাঁথা শীত নিবারণের জন্য ব্যবহৃত হয়। তাতে কোনো কারুকার্য থাকে না। কাঁথাকে মেঝের ওপর বিছিয়ে তার উপরে বসে কাঁথা সেলাই করতে হয়। সাধারণত পুরনো কাপড়ের পাড় থেকে সুতা তুলে অথবা হাট হতে তাঁতিদের কাছ থেকে বাহারি সুতো কিনে যেমন : লাল, নীল, সবুজ, বেগুনি, হলুদ প্রভৃতি সুতো কিনে এনে কাঁথা সেলাই করা হয়।
বিভিন্ন অঞ্চলে ফোঁড়, পাড় ও নকশা অনুযায়ী নকশি কাঁথা ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন: বরকা ফোঁড়, তেজবি ফোঁড়, বাঁশপাতা ফোঁড়, কইতা ও বিছা ফোঁড় ইত্যাদি। পাড়ের নামেও আছে বৈচিত্র্য। যেমন: তোলা পাড়, তাস পাড়, নয়নলতা, নারিকেল পাতা ও নৌকা বিলাসসহ বিভিন্ন নামের নকশি কাঁথা রয়েছে।
বর্তমান বাংলাদেশে নানা রকমের কাঁথা রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নকশি কাঁথা, বিছানার চাদর, ওয়াল ম্যাট, বালিশের কভার ফ্লোর কুশন, পর্দা প্রভৃতি। সুঁই-সুতোর মাধ্যমে আপন মনের ইচ্ছায় পরিবেশের চারপাশের ফুল, পাতা, পাখি, পশু ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র কাঁথায় প্রতিফলিত হয়।
দাম :
নকশী কাঁথার আদলে তৈরি চাদরের দাম শুরু হয় ২৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত, আর কুশন সহ যার দাম পড়ে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত। পর্দার দাম পরবে ২০০০ থেকে ৫৫০০ টাকা পর্যন্ত। পাওয়া যাবে দেশীয় বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে।
এইচএন/এমএস