ভিডিও EN
  1. Home/
  2. লাইফস্টাইল

শিশু যদি মিথ্যা বলে

প্রকাশিত: ০৪:৫৫ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

রাতুলের বয়স ৮ বছর। প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরে সে টিফিনের খালি বক্স মায়ের হাতে দেয়। সে সঙ্গে ‘থ্যাঙ্ক ইউ মা’ বলতেও ভোলে না। টিফিন পুরোটাই শেষ করেছে দেখে মা বেশ খুশি। কিন্তু মায়ের ভুল ভাঙল যখন রাতুলের সহপাঠী তিতলির মায়ের সঙ্গে দেখা হল। তিতলিকে স্কুল থেকে আনার পথে রোজই সে দেখে, রাতুল টিফিনবক্সের সব খাবার রাস্তার কুকুরদের খাইয়ে দিচ্ছে, আর নিজে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে ঝালমুড়ি কিনে খাচ্ছে। বাড়ি ফিরে রাতুলকে জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে সে স্বীকার করে না। শেষে রেগে রাতুল বলল, মায়ের তৈরি টিফিন খেতে তার ভালো লাগে না, তাই রাস্তার ‘ডগি’দের খাইয়ে দেয়। আর দাদির কাছ থেকে চেয়েচিন্তে ঝালমুড়ির টাকা জোগাড় করে। শুধু টিফিন ফেলা নয়, এইটুকু বাচ্চা বানিয়ে বানিয়ে কথা বলতে শিখেছে দেখে বুক শুকিয়ে গেল মায়ের।

নির্দোষ অসত্য যেন প্রমাণ আকারের মিথ্যায় পরিণত না হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব অবশ্যই মা-বাবার। আর সত্য-মিথ্যার মধ্যে এই পার্থক্যটা ছোটদের বোঝাতে হবে একেবারে প্রথম থেকেই-

১. যখনই টের পাবেন কোনো কারণে আপনার শিশু মিথ্যা কথা বলছে, প্রথমেই চেষ্টা করুন তার কারণ খুঁজে বের করতে। ও কি নিজেকে কোনো অসুবিধা থেকে বাঁচাতে মিথ্যা কথা বলছে? ও কি ভেবেছে সত্যি কথা বললে শাস্তি পাবে? না কি অভ্যাসবশত অসত্য বলেছে? কারণটা খুঁজে পেলে কিন্তু ওর ব্যবহার সংশোধন করতে সুবিধা হবে।

২. অনেক সময় বাচ্চারা অনেক কথা বাড়িয়ে বলে। হয়তো ছুটিতে বাড়িতেই ছিল, কিন্তু বন্ধুদের কাছে বলল- কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিল। এটা ঠিক মিথ্যা নয়, বরং নিজেকে জাহির করা। বন্ধুদের বা বড়দের অ্যাটেনশন পাবে বলে ওরা এটা করে। এই বানানো গল্প নিয়ে বকাবকি না করে বাচ্চার কল্পনাশক্তিকে ঠিকভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করুন।

৩. যখন বুঝতে পারবেন যে আপনার শিশু কোনো ব্যাপারে মিথ্যা বলছে, তখন জোর করে মেরেধরে তাকে দিয়ে সত্যি কথা বলানোর চেষ্টা করবেন না। এতে তার আরও জেদ চেপে যাবে। ব্যাপারটা থিঁতিয়ে গেলে নরম গলায় তার কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইতে পারেন। সত্যি কথা বলার জন্য তাকে একটা ছোট্ট গিফটও দিতে পারেন।

৪. বাচ্চার মধ্যে ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য বাবা-মা দু’জন মিলে মজার সব অ্যাক্টিভিটি করতে পারেন। বাচ্চাকে কোনো একটা রূপকথা বা শিক্ষামূলক গল্প পড়ে শুনিয়ে জানতে চান যে, এই গল্পটা থেকে সে কী শিখল। দু’জন মিলে গল্পের চরিত্রগুলোর ভূমিকা নিয়ে অভিনয়ও করতে পারেন। এভাবেই সে বুঝতে পারবে কোনটা ভুল আর কোনটা ঠিক। অবসর সময়ে রঙ-বেরঙের পোস্টার বানাতে বাচ্চাকে সাহায্য করুন। প্রতিটি পোস্টারে কোনো একটি কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে মরাল (যা ওকে ভালো হয়ে উঠতে সাহায্য করবে) লিখুন। পোস্টারটা তার পড়ার টেবিলের সামনে ঝুলিয়ে দিতে পারেন, যাতে তার চোখের সামনেই থাকে। বাচ্চাকে ডায়েরি লেখার উৎসাহ দিন যাতে সে রোজ কী ভালো কাজ করেছে তা লিখে রাখতে পারে। সপ্তাহ শেষে ভালো কাজের জন্য তাকে পুরস্কৃত করতে পারেন।

৫. নিজেদের ব্যবহারে পরিবর্তন আনুন। বাচ্চার সামনে কখনও মিথ্যা বলবেন না। যদি বলেও ফেলেন, তাহলে সঠিক ভাষায় তাকে বুঝিয়ে বলুন কেন আপনি সত্যিটা বললেন না।

এইচএন/এমএস