শীতে হার্ট অ্যাটাক এড়াতে যে নিয়ম মানবেন
শীতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন হার্টের রোগীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতে হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ও হার্ট ফেইলিউরের ঘটনা প্রায় ১৪-২০ শতাংশ বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে হার্ট সম্পর্কিত রোগের লক্ষণগুলোও দেখা দেয়।
এই সমস্যাগুলো মূলত ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণেই বাড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনের সংস্পর্শে রক্তনালি সংকুচিত হতে পারে। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। যা পরবর্তী সময়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ হতে পারে।
তাই চিকিৎসকরা বলছেন, আগে থেকেই হৃদরোগ থাকা এমন ব্যক্তিরা শীতে ঝুঁকিতে থাকে। যেমন- বয়স্করা, করোনারি আর্টারি ডিজিজ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন মানুষেরা। তাই শীতে খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে কিছু টিপস মেনে চলুন, যেমন-
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
রক্তচাপ বাড়লে শীতকালে রক্তনালিগুলোর সংকোচন ও অন্যান্য হরমোনের পরিবর্তনের কারণে রক্তচাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তাই শীতে আপনার নিয়মিত ওষুধগুলো কীভাবে পরিবর্তন করা যায় ও ডোজ সামঞ্জস্য করা যায় তা বোঝার জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। আপনি কখনই নিজে থেকে তা পরিবর্তন করবেন না।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ত্যাগ করুন
হরমোনের পরিবর্তনের কারণে শীতকালে সাধারণত খিদে বেড়ে যায়। যা ফলে ভাজা খাবার, চিনিযুক্ত খাবার এবং উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত পদার্থের অতিরিক্ত ব্যবহারে খাদ্যাভ্যাস অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, খাবারকে ঘন ঘন ছোট ছোট অংশে ভাগ করে, কম ক্যালোরিযুক্ত খাদ্য উপাদান যেমন- টাটকা সালাদ, ফল, বাদাম, আখরোট ও চিয়া বীজ দিয়ে তৈরি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস তৈরি করে খেতে পারেন।
কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন
প্রতিবছর শীতকালে হার্ট অ্যাটাকে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেন। এটি রক্তচাপ বাড়ায়, ঠান্ডা আবহাওয়ার সংস্পর্শে আসা ও সম্ভাব্য স্ট্রেসের মাত্রা বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণের সংমিশ্রণের কারণে। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, শীতের আগেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরিকল্পনা করুন। বিশেষ করে যাদের বয়স ৩০ এর বেশি। এই বয়সী ব্যক্তিরা কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করার মাত্রা জানতে পরীক্ষা করুন।
অতিরিক্ত ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন বন্ধ করুন
চিকিৎসকদের মতে, যে কোনো আবহাওয়ায় অতিরিক্ত ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন বিপজ্জনক। এসবের বদলে ঠান্ডায় চা-কফি, স্যুপ ইত্যাদি পান করুন। এগুলো আপনাকে শীত উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
শারীরিক কার্যকলাপ এবং ওজন বৃদ্ধি
শীত আমরা নিস্তেজ ও অলস করে তোলে। যার ফলে শারীরিক কার্যকলাপ কমে যায়। ফলে অতিরিক্ত ক্ষুধা ও ঘুম কমে যাওয়ার ফলে ওজন বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত শীতকালে শারীরিক ক্রিয়াকলাপ ও বাইরের কার্যকলাপ কমে যায়। শীতে চাইলে ঘরেই ট্রেডমিলে জোড়ে হাঁটতে বা দৌড়াতে পারেন।
পাশাপাশি কার্ডিয়াক সমস্যায় আক্রান্ত সকল রোগী, বিশেষ করে এলভি ডিসফাংশন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা আছে, তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। এজন্য নিয়মিত নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা ও পরীক্ষাগুলো করতে হবে। একই সঙ্গে শীতকালে বুক ও ফুসফুসে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই শীতের আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
জেএমএস/এএসএম