দৈনিক ভিটামিন সি খেলে শরীরে যা ঘটে?
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি’র এর গুরুত্ব অনেক। বিশেষ করে লেবু ও আমলকিতে থাকে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভিটামিন সি একাধিক উপকার করে। পাশাপাশি এটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের বিরুদ্ধেও লড়াই করে।
পাশাপাশি হাড় ও দাঁতের জন্যও ভিটামিন সি অনেক উপকারী। এটি ত্বকের টিস্যুর গঠনেও সরাসরি অংশ নেয়। যেকোনো ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি সাড়িয়ে তুলতেও এই ভিটামিনের বিকল্প নেই। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে ক্ষতিকর ফ্রি-রেডিকেল থেকেও রক্ষা করে এটি।
ভিটামিন সি’র যত উপকারিতা
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
কোমল, মসৃণ ও সুন্দর ত্বক চাইলে শুধু রূপচর্চাই নয়, পাতেও রাখতে হবে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। ভিটামিন সি ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। কোলাজেন ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ভিটামিন সি খেলে ত্বকের বলিরেখা দূর হয় ও উজ্জ্বলতা বাড়ে।
মস্তিষ্ক ভালো রাখে
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতেও ভিটামিন সি’র ভূমিকা আছে।‘নিউরোট্রান্সমিটার’ উৎপাদনে এই ভিটামিন সাহায্য করে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এই ভিটামিনের ভূমিকা আছে। এছাড়া হতাশা ও উদ্বেগের মতো সমস্যায় মন ভাল রাখতে ভিটামিন সি’র ভূমিকা আছে।
অ্যানিমিয়া রোধ করে
ভিটামিন সি আয়রনের শোষণে সাহায্য করে। অ্যানিমিয়ার সমস্যা যারা ভূগছেন তাদের জন্য আয়রনের বিশেষ প্রয়োজন। তারা খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল ও খাবার অবশ্যই রাখুন।
চোখ ভালো রাখে
ভিটামিস সি সমৃদ্ধ ফল চোখ ভালেঅ রাখতে সাহায্য করে। এই ভিটামিন বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। চোখের প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে ভিটামিন সি অপরিহার্য। এছাড়া দ্রুত ছানি পড়ার সমস্যা প্রতিহত করে এই ভিটামিন।
হার্ট ভালো রাখে
কোলাজেন সংশ্লেষে সাহায্য করে ভিটামিন সি রক্তনালির দেওয়াল দৃঢ় করতে সাহায্য করে। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। হাইপারটেনশনের ঝুঁকি কমে।
ক্ষত সারায়
কেটে-ছিঁড়ে গেলে দ্রুত ক্ষত সারাতে সাহায্য করে ভিটামিন সি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি খেলে ছোটখাটো সংক্রমণ এড়ানো যায়।
ফুসফুস ভালো থাকে
ভিটামিন সি’র অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফুসফুসের প্রদাহ ও সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। ফলে ফুসফুস ভালো রাখতেও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ও খাবার খেতে পারেন।
দিনে কতটুকু ভিটামিন সি খাবেন?
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি’সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি রাখলে সহজেই এর দৈনিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয় বিধায় এটি শরীরে সঞ্চিত থাকে না। এই ভিটামিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।
তাই প্রতিদিনই নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণ করা আবশ্যক। যেমন- শিশুদের ক্ষেত্রে ৩০-৩৫ মিলিগ্রাম, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ৪৫ মিলিগ্রাম, গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ৫৫ মিলিগ্রাম ও প্রসূতি মায়েদের ক্ষেত্রে ৭০ মিলিগ্রাম করে ভিটামিন সি প্রতিদিনই দৈনন্দিন খাদ্যের সঙ্গে গ্রহণ করতে হয়।
ভিটামিন সি’র উৎস কী কী?
লেবু, আমলকি ছাড়াও পেয়ারা, ব্রকোলি, স্ট্রবেরি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, পালং শাকে থাকে ভিটামিন সি। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় টাটকা সবজি ও ফল রাখলে শরীর পর্যাপ্ত ভিটামিন সি পায়।
সূত্র: হেলথলাইন
জেএমএস/জেআইএম