অতিরিক্ত খাওয়া-পিঠে ব্যথাও হতে পারে বিষণ্নতার লক্ষণ
ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা কখনো কখনো মৃত্যুর কারণও হতে পারে। শারীরিক নানা সমস্যা সারাতে মানুষ যতটা চিকিৎসকের কাছে যান, তার চেয়ে অনেক কমই মনোবিদের পরামর্শ নেন।
আসলে মানসিক বিভিন্ন সমস্যা অনেকেই এড়িয়ে যান। আর এ কারণেই ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা নামক মানসিক ব্যাধি বেড়ে যায়। দুশ্চিন্তা কিংবা বিষণ্নতা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে মনে ও শরীরে।
মনোবিদদের মতে, জীবনে বড় কোনো কিছুর থেকে আঘাত পাওয়া যেমন- ব্যক্তিগত, আর্থিক, বন্ধুবান্ধব, সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, ঘনিষ্ঠ মানুষের মৃত্যু থেকে হতাশার সৃষ্টি হয়। আর সেখান থেকেই ধীরে ধীরে মানসিক রোগের শিকার হন অনেকেই।
বেশ কিছু সমীক্ষা দেখে গেছে, বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে বেশিরভাগ তরুণরাই এখন ডিপ্রেশনে ভুগছেন। এক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীরা আরও বেশি মানসিক অবসাদের শিকার হন।
বেশ কয়েকটি লক্ষণ আছে যেগুলো ডিপ্রেশনের ইঙ্গিত দেয়। পিঠে ব্যথা থেকে শুরু করে অতিরিক্ত শপিং এমনকি বেশি খাওয়াও কিন্তু হতে পারে ডিপ্রেশনের লক্ষণ। তাই সবারই সতর্ক থাকা উচিত।
বিষণ্নতার লক্ষণ কী কী?
ভুলে যাওয়া
বিষণ্নতা বা ভুলে যাওয়া ডিপ্রেশনের আরও একটি সাধারণ লক্ষণ হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক চাপের কারণে শরীরে কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত ছোট বা বড় বিষয় ভুলে যাওয়ার সমস্যা অবহেলা করবেন না।
অতিরিক্ত খাওয়া ও স্থূলতা
২০১০ সালে আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এই গবেষণায় দেখা গেছে, বিষণ্নতায় ভোগা বেশিরভাগ মানুষই অতিরিক্ত ওজনে ভোগেন। যা বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের ঝুঁকি। অন্যান্য গবেষণা অনুসারে, যারা ডিপ্রেশনে ভোগেন তারা খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। বিশেষ করে মধ্যবয়সী লোকদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়।
পিঠে ব্যথা
গবেষণায় দেখা গেছে, বিষণ্নতার কারণে দীর্ঘস্থায়ী পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা হতে পারে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথায় আক্রান্ত ৪২ শতাংশ ব্যক্তিরাই বিষণ্নতা অনুভব করেছেন।
অতিরিক্ত আবেগ
হঠাৎ করেই খুশি হওয়া, কান্না করা অথবা রেগে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো সাধারণভাবে নেবেন না কখনো। কারণ এগুলো হতে পারে ডিপ্রেশনের লক্ষণ। এমন ব্যক্তিদের মেজাজ দ্রুত পরিবর্তন হয়।
ধূমপান
হতাশাগ্রস্ততা ধূমপানের ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। সিডিসির তথ্য অনুসারে, দিনে এক প্যাকেটের বেশি ও ঘুম থেকে ওঠার ৫ মিনিটের মধ্যেই সিগারেট খাওয়া হতাশাগ্রস্ত ধূমপায়ীদের মধ্যে সাধারণ অভ্যাস।
এমন ব্যক্তিরা সহজে ধূমপান ছাড়তে পারেন না। এমন ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বিহেভিয়ারাল থেরাপি বা অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ দিয়ে থাকেন রোগীকে।
নিজের খেয়াল না রাখা
বেশিরভাগ হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিরাই নিজের বিষয়ে উদাসহীন থাকেন। নিজের পরিচর্যা করতে আলসেমি বোধ করেন তারা। যেমন- দাঁত ব্রাশ না করা, চুল না আচড়ানো, ত্বকের যত্ন না করা, পরিষ্কার কাপড় না পরা ইত্যাদি বিষয়গুলো ফুটে ওঠে তাদের মধ্যে।
এমন ব্যক্তিরা নিজের অসুখ নিয়েও চিন্তিত থাকেন না। এসব লক্ষণের যে কোনো একটিও যদি আপনার সঙ্গে মিলে যায়, তাহলে দেরি না করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
সূত্র: ওয়েব এমডি
জেএমএস/জেআইএম