ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায় কী?
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে ডেঙ্গু আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়ে যায়। এ সময় সচেতন থাকার কোনো বিকল্প নেই। কিছু উপায় অবলম্বন করে বর্ষায় এডিস মশার প্রজনন রোধ করা সম্ভব। ডেঙ্গু প্রতিরোধে এসময় কী কী করবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ছাদ বাগান পানি জমতে দেওয়া যাবে না
ছাদ বাগানে কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। প্রতিটি গাছের পাত্রে ছিদ্র থাকা চাই, যাতে পানি না জমে। যারা ছাদ বাগানে জলজ গাছ করেন, তারা পানি নিয়মিত পরিষ্কার করবেন। প্রতি ৭২ ঘণ্টায় যদি পাত্রের পানি বদলে ফেলতে পারেন, তাহলে আরও ভালো।
প্রয়োজনে পানিতে মটর পাম্প লাগিয়ে তা প্রবাহমান করা যেতে পারে। প্রবাহমান পানিতে মশা ডিম পারে না। গাপ্পি কিংবা গাম্বুসিয়া মাছও ছেড়ে দিতে পারেন। এসব মাছ মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে। ছাদ পরিষ্কারের সময় কীটনাশক ব্যবহারও করতে পারে।
বেলকনির গাছেও পানি জমাবেন না
বেলকনির অল্প জায়গায় যারা অনেক টব রাখেন, তারা সতর্ক থাকবেন। বৃষ্টি পড়লে কোথাও পানি জমলো কি না তা বের করা মুশকিল। এ রকম হলে বিপদ আসন্ন। কারণ পানি জমলেই সেখানে এডিস মশার জন্ম হবে। প্রয়োজনে টব কম রাখুন, কিন্তু সবগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে।
টবের ছিদ্র দিয়ে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায় কি না তা খেয়াল রাখুন। এজন্য পর্যাপ্ত ছিদ্র রাখার পাশাপাশি মাটিতে খানিকটা কোকোপিট অথবা বালু ব্যবহার করা উত্তম। বালু ও কোকোপিট অতিরিক্ত পানি শুষে নেওয়া ও বের হয়ে যেতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন
বাড়ির ভেতর ও কার্নিশ পরিষ্কার রাখুন
দুটি বাড়ির মধ্যে কার্নিশে যেন পানি না জমে, সে বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। জমানো পানিতে এডিস মশা বংশ বিস্তার করে। যে পাত্রগুলোতে জমানো পানি পাওয়া যাবে, সেগুলো ধ্বংস করতে হবে।
পাশাপাশি কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। আইসক্রিম বা দইয়ের খালি পাত্র, টায়ার, ডাবের খোলসহ এমন কিছু যেখানে পানি জমে থাকার সুযোগ আছে। এসব সেখানে ফেলে দেওয়া যাবে না।
খোয়াল রাখবেন যেসব বিষয়
বাড়িতে স্টোর করে রাখা বিভিন্ন ভাঙা জিনিসপত্র, বোতল, পলিথিনের ব্যাগ বিভিন্ন পাত্র ফেলে রাখলে সেখানে থাকতে পারে ডেঙ্গুর বাহক এডিস। কুকুর, বিড়ালের খাবারের সঙ্গে পানির পাত্র রাখলে সেখানে এডিস মশা জন্ম নিতে পারে। ছোটখাটো এসব জিনিস কিন্তু আশপাশেই থাকে, যেখানে এডিস মশা প্রজনন করতে পারে।
যদি কোনো পাত্র রাখতেই হয়, তাহলে সেটি ব্যবহারের পর উল্টে রাখুন। এতে সেখানে পানি জমে এডিস মশার প্রজনন হবে না। অন্যদিকে ঘরের দরজা, জানালায় মশা প্রতিরোধে নেট লাগিয়ে দিন।
এতে অলো ঠিকমতো আসলেও মশা, ধুলাবালি আসবে না। বেলকনিতেও নেট ব্যবহার করুন। শুধু নিজের ঘর নয়, বাসার আশপাশে গর্ত বা কোন কিছুতে পানি জমে থাকলে তা ফেলে দিন। বড় গর্ত থাকলে মাটি বা বালু দিয়ে ভরাট করে দিন।
সাধারণত সকাল ও সন্ধ্যায় মশা বেশি কামড়ায়। এ সময় ঘরে থাকা ভালো। বাইরে বের হলে যতটুকু ঢেকে বের হওয়া যায়, ততই ভালো। মশা প্রতিরোধে নানা রকম ক্রিম কিনতে পাওয়া যায়। সেগুলো হাতে ও পায়ে ব্যবহার করতে পারেন।
জেএমএস/এমএস