চকলেট খেলে শরীরে যা ঘটে
চকলেট নামটি শুনলে ছোট-বড় সবার জিভেই পানি চলে আসে। পুরো বিশ্বেই আছে চকলেটের কদর। যদিও বেশি চকলেট খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়, এমনকি চকলেট খেলে না-কি দাঁতে পোকা ধরে! এ ধারণা আছে অনেকেরই।
জানলে অবাক হবেন, সারা বিশ্বের প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন চকলেট খায়। তবে অন্যান্য চকলেটের চেয়ে স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী হলো ডার্ক চকলেট। এতে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, ফসফরাস, জিংক ও সেলেনিয়াম।
ডার্ক চকলেট গ্রহণের পরপরই শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বের হয়ে যায়। ফলে দেহের ক্যানসার সেল জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়া ডার্ক চকলেট খেলে শরীরে কী কী ঘটে, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
মানসিক সুস্থতা মেলে
মানসিক সুস্থতাও মেলে চকলেট খেলে। এটি গ্রহণের পর নিমেষেই মন ভালো হয়ে যায়। চকলেটে থাকা পলিফেনল বিষণ্নতা ও দুশ্চিন্তা দূর করতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে চকলেট খেলে প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের শরীরে সেরাটনিনের মাত্রা বাড়ে। এই সেরাটনিনই আমাদের মস্তিষ্কে ভালো অনুভূতি জাগায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ডার্ক চকলেটে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী কর। ফলে বিভিন্ন সংক্রমণ রোধ হয়।
ত্বকের সানব্লক হিসেবে কাজ করে
চকলেট তৈরির মূল উপাদান হলো কোকোয়া। যা ফ্লাভিনয়েডে ভরপুর। এই উপাদানটি ত্বককে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে।
রক্তের প্রভাব বাড়ে
চকলেট খাওয়ার পরপরই শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের যোগান হয়। এতে করে সারা শরীরে রক্তের প্রভাব বাড়ে।
চুল ভালো থাকে
নিয়মিত ডার্ক চকলেট খেলে চুল মজবুত। একই সঙ্গে চুল পড়ার সমস্যাও কমতে শুরু করে।
আরও পড়ুন
মস্তিষ্ক ভালো থাকে
চকলেটে থাকা ফ্লেবোনয়েড ব্রেন ফাংশনের উন্নতি ঘটায়। এর ফলে স্মৃতিশক্তি ও মনযোগেরও বিকাশ ঘটে।
টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়
নিয়মিত ডার্ক চকলেট খাওয়া শুরু করে শরীরের অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়ে। এর ফলে দেহের টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়।
ক্যানসার প্রতিরোধ করে
ডার্ক চকলেটে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বিভিন্ন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। তেমনই জটিল রোগও ধারে কাছেও ঘেঁষতে দেয় না।
হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
চকলেটে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর একবার হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটলে, পুরো শরীরই সুস্থ থাকে। ডার্ক চকলেটে দুই ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। একটি হলো ফ্লেবোনয়েড ও অন্যটি, যা শরীরের গঠনে সাহায্য করে থাকে।
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে
এতে থাকা ফ্লেবোনয়েড রক্তের প্রবাহ এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয়, যে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকিও একেবারে কমে যায়। ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
রক্তে সুগারের মাত্রা কমে
গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ৮ সপ্তাহ ডার্ক চকলেট খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমতে শুরু করে। একই সঙ্গে রক্তচাপও স্বাভাবিক হয়ে যায়।
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
ডার্ক চকলেটের পলিফেনলস রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একই সঙ্গে উপকারি কোলেস্টেরল বা এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
আজ বিশ্ব চকলেট দিবস। ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছর ৭ জুলাই পালিত হয় বিশ্ব চকলেট দিবস। চকলেটের ইতিহাস ২,৫০০ বছর পুরোনো। অ্যাজটেকরা প্রথম চকলেট আবিষ্কার করেন।
১৬ শতাব্দীতে ইউরোপে চিকলেটের কদর বহুগুণ বেড়ে যায়। ১৮৬৮ সালে প্রথম ক্যাডবেরি চকলেট ইংল্যান্ডের বাজারে আসে। প্রতি বছর জুলাইয়ের ৭ তারিখ বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে চকলেট দিবস।
সূত্র: হেলথলাইন/ন্যাশনাল টুডে
জেএমএস/জেআইএম