ভিডিও EN
  1. Home/
  2. লাইফস্টাইল

রেগে গিয়ে চিৎকার করা যে কারণে হতে পারে বিপজ্জনক

লাইফস্টাইল ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:০২ পিএম, ০৯ মে ২০২৪

অনেকেই অতিরিক্ত রাগের সমস্যায় ভোগেন। তবে রাগ শরীরের জন্য মোটেও ভালো না। রাগ কখনো কখনো মানসিক রোগের কারণও হতে পারে। বেশিরভাগ মানুষই রেগে উত্তেজিত হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত কিংবা খারাপ কথা বা ব্যবহার করে ফেলেন অন্যদের সঙ্গে।

রাগ মানসিক চাপ বাড়ায়। এছাড়া রাগ শারীরিক বিভিন্ন সমস্যারও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ২০১৮ সালে গ্যালাপের (গ্লোবাল ইমোশনস রিপোর্ট) প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, গবেষণায় অংশ নেওয়া ১৪০টি দেশের ১ লাখ ৫১ হাজার অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২২ শতাংশই অতিরিক্ত রাগের সমস্যায় ভুগছিলেন। অন্যদিকে ৩৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী রাগের কারণে অত্যন্ত চিন্তিতবোধ ছিলেন।

আসলে রাগ এমন একটি মনের অবস্থা যা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয়। তবে আমাদের চাপের মাত্রা বেড়ে গেলে তা প্রায়শই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। যদিও একেকজনের রাগের কারণও ভিন্ন। তবে যে কোনো পরিস্থিতিতেই রাগ নিয়ন্ত্রণ করা বুদ্ধিমানের কাজ। জেনে নিন অতিরিক্ত রাগ ও চিৎকার কোন কোন রোগের ঝুঁকি বাড়ে-

হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়

রেগে চিৎকার করলে শরীরে ৫টি জিনিস ঘটে। তার মধ্যে একটি হলো হঠাৎ হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া। লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, রেগে কিছু বলতে গেলেই তর্কে জড়িয়ে পড়েন বেশিরভাগ মানুষ। তখন হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এর মানে হলো, রাগ রক্তচাপও বাড়ায়।

এ কারণে ত্বক ও মুখ লালচে হয়ে যায় ও শিরা বেরিয়ে আসে। রেগে গেলে দ্রুত শ্বাস নিতে হয় আবার হাত-পা সে সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। বুঝতেই পারছেন হঠাৎ রেগে উঠলে শরীরের সব ব্যবস্থারই পরিবর্তন ঘটে। যা কখনো কখনো বিপদ ডেকে আনতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়

গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন, অতীতের কোনো উত্তপ্ত তর্কের কথা স্মরণ করলে কিংবা রেগে চিৎকার করে উঠলে ৬ ঘণ্টার জন্য আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এভাবে অত্যধিক রাগী মানুষরা অজান্তে শারীরিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ান।

মেটাবলিজমে পরিবর্তন আনে

আমরা যখন রেগে যাই, তখন স্ট্রেস রাসায়নিক আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীরকে প্লাবিত করে। একই সঙ্গে মেটাবলিজমেও পরিবর্তন আনে। যারা অতিরিক্ত রাগের সমস্যা পুষিয়ে রাখেন তারা নিয়মিত মাথাব্যথা, উদ্বেগ, অনিদ্রা ও হজমের সমস্যায় ভুগতে পারেন।

এছাড়া ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- অ্যাকজিমা ও নানা ধরনের চর্মরোগও শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। এমন মানুষের স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের উচ্চ ঝুঁকি আছে।

মস্তিষ্কেও খারাপ প্রভাব পড়ে

রেগে কারও সঙ্গে তর্ক করা কিংবা উত্তপ্ত ও কঠোর শব্দ বিনিময় আপনার মস্তিষ্কেও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। এ কারণে অনেকেই রাগের মাথায় এটা সেটা বলে ফেললেও পরবর্তী সময়ে আবার সেসব কিছু মনে করতে পারেন না।

পরে অনেকেই বিষয়টি মিথ্য বলে ভাবলেও, আসলে বেশিরভাগ মানুষই রাগান্বিত হয়ে যেসব কথা বলে ফেলেন, তা খুব সহজেই পরে সম্পূর্ণভাবে ভুলে যান!

আরও পড়ুন

দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার ঝুঁকি বাড়ে

আপনি কি জানেন, রেগে চিৎকার করার কারণে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার সমস্যায় ভুগতে পারেন! কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামনে বাবা-মা চিৎকার করল শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ বাঁধাগ্রস্ত হয়।

তাদের মানসিক অবস্থারও পরিবর্তন ঘটে। এমন শিশুরা বড় হলে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় ভুগতে পারেন। এর মধ্যে পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা, মাথাব্যথা ও বাতের সমস্যা বেশি দেখা দেয়।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, তর্কের সময় নিজেকে জয়ী প্রমাণ করতে বেশিরভাগ মানুষই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। যা একেবারেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

এতে আশপাশের মানুষও আপনার প্রতি খারাপ মনোভাব পোষণ করতে পারেন। নিজেকে প্রমাণ করতে চাইলে চিৎকার করে নয় বরং যুক্তি দিয়ে ও নিজেকে শান্ত রেখে নিজের কথা বলার মাধ্যমে আপনি জয়ী হতে পারেন।

রাগ ও চিৎকার করা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন কীভাবে?

১. রেগে কাউকে কিছু বলার আগে তা নিয়ে চিন্তা করুন। কাউকে কিছু বলে ফেলা সহজ হলেও পরে অনুশোচনাবোধ আপনাকে ছাড়বে না।

২. রেগে গেলেই শান্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। সুস্থ ও যুক্তিসঙ্গত উপায়ে সমস্যার সমাধান করুন।

৩. তর্ক করে রাগ প্রকাশ করতে যাবেন না। তার চেয়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথা বলে সমাধান খুঁজে বের করুন।

৪. কারও প্রতি ক্ষোভ ধরে রাখবেন না। ক্ষমাশীল হলে আপনি রাগ ও চাপ থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।

৫. কারও কথায় রাগ না করে বরং তা মজা ও হাস্যকরভাবে দেখুন। হাস্যরসের অর্থ ব্যঙ্গাত্মকতা নয়। এই দুটো বিষয়ের মধ্যেও সতর্ক হওয়া উচিত।

৬. রাগ হলে গভীরভাবে শ্বাস নিন, গান শুনুন কিংবা শান্ত স্থানে কিছুক্ষণ একা সময় কাটান।

৭. অতিরিক্ত রাগের সমস্যা থেকে নিজেকে বাঁচাতে অবশ্যই মনরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। রাগের সমস্যা চেপে রাখলে আরও বিপদে পড়বেন।

সূত্র: ব্রাইট সাইড/ইউএস নিউজ

জেএমএস/এএসএম

আরও পড়ুন