ধূমপায়ীর ফুসফুসও পরিষ্কার হবে ঘরোয়া যে টোটকায়
বায়ু দূষণ ও ধূমপানের কারণে ফুসফুসে প্রতিনিয়ত জমেছে ময়লা। এ কারণে শ্বাসকষ্টসহ ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছেন অনেকেই। শ্বাসকষ্টের সমস্যায় এখন ছোট থেকে বড় অনেকেই ভোগেন।
আজ বিশ্ব ফুসফুস দিবস। প্রতিবছর ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় দিবসটি। ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আবার পরোক্ষ ধূমপানের কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।
তবে ঘরোয়া কিছু টোটকা মেনে ফুসফুস পরিষ্কার রাখা সম্ভব। এতে মারাত্মক বিভিন্ন ব্যাধির ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসবে।
আরও পড়ুন: ফুসফুসে ইনফেকশনের ৫ লক্ষণ
ভাঁপ নিন
নিয়মিত গরম পানির ভাঁপ নিতে শুরু করুন। যখন গরম ভাঁপ নেবেন; তখন ফুসফুসের ড্রেনে জমে থাকা শ্লেষ্মা গলে যাবে এবং ভালোভাবে নিশ্বাস নিতে পারবেন।
‘জার্নাল অব পালমোনারি অ্যান্ড রেসপিরেটরি মেডিসিনে’ প্রকাশিত এক গবেষণায় ফুসফুস ভালো রাখতে গরম পানির ভাঁপ কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে।
১৬ জন পুরুষের উপর গবেষণাটি করা হয়, যারা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে (সিওপিডি) আক্রান্ত ছিলেন। এ ব্যাধিতে আক্রান্তরা ঠিকভাবে নিশ্বাস নিতে পারেন না।
আরও পড়ুন: যে ৬ লক্ষণে বুঝবেন ফুসফুস অকেজো হতে চলেছে
গবেষকরা ১৬ জনের উপর পরীক্ষাটি করার আগে তাদের হার্ট রেট ও রেসপিরেটরি রেটের পরিমাণ অনেক কম দেখতে পান। গবেষণা চলাকালীন রোগীরা নিয়মিত গরম পানির ভাঁপ নিতে থাকেন।
পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, তাদের রেসপিরেটরি রেটের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। তাই ফুসফুস ভালো রাখতে নিয়মিত স্টিম নিতে পারেন।
গ্রিন টি
শারীরিক সুস্থতায় গ্রিন টি’র বিকল্প নেই। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ রয়েছে অনেক। যা ফুসফুস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ফুসফুসের টিস্যুগুলো ধূমপানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। গ্রিন টি’তে থাকা উপাদানগুলো ওই ক্ষতি থেকে আপনার ফুসফুসকে রক্ষা করবে।
আরও পড়ুন: গুড় খেলে কি সত্যিই পরিষ্কার হয় ফুসফুস?
দ্য জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় গ্রিন টি’র এমন সক্ষমতার কথা জানানো হয়েছে। এক হাজার কোরিয়ান প্রাপ্তবয়স্কের উপর গবেষণাটি চালানো হয়।
তারা নিয়মিতভাবে দিনে দুইবার গ্রিন টি পান করতেন। এরপর গবেষকরা দেখতে পান, গ্রিন টি না খাওয়া ব্যক্তিদের ফুসফুসের তুলনায় যারা নিয়মিত খেয়েছেন; তাদের ফুসফুস বেশি কার্যকর।
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি খাবার
শ্বাসকষ্ট বা বুকে চাপ অনুভব করলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি খাবার খাওয়া শুরু করুন। এতে অনেকটাই উপকৃত হবেন। এজন্য যেসব খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবেন, সেগুলো হলো- হলুদ, সবুজ শাক-সবজি, চেরি, ব্লুবেরি, জলপাই, আখরোট, মটরশুটি ও মসুর ডাল।
আরও পড়ুন: ধীরে ধীরে ফুসফুস নষ্ট করে দেয় ৩ জিনিস
শরীরচর্চা
ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে শারীরিক কসরতের বিকল্প নেই। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায়। ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের মতো কঠিন রোগের ঝুঁকি কমে।
ফুসফুসের সুস্থতায় নিশ্বাসের ব্যায়ামগুলো করার বিকল্প নেই। ব্রিদিং এক্সারসাইজের মাধ্যমে ফুসফুসের জটিলতা দূর করা সম্ভব। বুক ভরে শ্বাস নেওয়ায় শরীরে অক্সিজেনের সাপ্লাই বাড়ে।
যারা সিওপিডি, সিসটিক ফাইব্রোসিস বা অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য ব্রিদিং এক্সারসাইজ সবচেয়ে কার্যকরী।
আরও পড়ুন: ফুসফুসে সমস্যা হচ্ছে বুঝে নিন ৬ সংকেতে
মধু
কাশি কমাতে মধু খেতে পারেন। ফুসফুসে জমা শ্লেষ্মা দূর করতে মধু সাহায্য করে। কুসুম গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে কাশির প্রকোপ কমে। মধুতে রয়েছে জীবাণুনাশক উপাদানসমূহ, যা সংক্রমণ রোধ করে।
গাজর
গাজরের রস শুধু ফুসফুস নয়, শরীরের নানা দূষিত পদার্থকেও বাইরে বের করে দেয়। প্রতিদিন অল্প করে গাজরের রস খেলে শরীর অনেক চাঙা থাকে। গাজরের সঙ্গে আপেল বা আঙুরের রসও খেতে পারেন। এতেও উপকার পাবেন।
সূত্র: মেডিকেল নিউজ
জেএমএস/এমএস