গরমে যে কারণে বাড়ে বিষণ্নতা ও আত্মহত্যার প্রবণতা
বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই বিষণ্নতায় ভোগেন। তবে জানলে অবাক হবেন, ঋতুভেদেও কিন্তু বাড়তে পারে বিষণ্নতা।
শীতের পাশাপাশি গ্রীষ্মকালেও বাড়ে বিষণ্নতা। আর এই বিষণ্নতার থেকেই মানুষ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে ওঠেন, এমনটিই জানাচ্ছে সমীক্ষা।
আরও পড়ুন: মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কি না বুঝে নিন ৫ লক্ষণে
ওয়াশিংটন পোস্ট জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নর্মান রোজেনথাল, যিনি ১৯৮৪ সালে বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে এসএডি (স্যাড বা সিজনাল এফেক্টিভ ডিজঅর্ডার) এর বিষয়ে প্রথম বর্ণনা করেছিলেন।
স্যাড এর লক্ষণ কী?
শীত ও গ্রীষ্মে স্যাড এর উপসর্গগুলো গুরুতরভাবে প্রকাশ পায় অনেকের মধ্যেই। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলো- খিটখিটে মেজাজ, দুঃখবোধ ও আনন্দের অনুভূতি কমে যাওয়া। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ঋতুভেদে স্যাড এর লক্ষণও পরিবর্তিত হতে পারে।
যেমন- শীতকালীন বিষণ্নতার রোগীরা অতিরিক্ত ঘুম, অতিরিক্ত খাওয়া ও অলস বোধ করেন। আর গ্রীষ্মে দেখা যায়, স্যাড এর রোগীরা ক্ষুধার্ত কম হন ও অনিদ্রায় ভোগেন।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত রাগ না-কি মানসিক রোগ বুঝবেন যেভাবে
গ্রীষ্মের বিষণ্নতায় আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি কেন?
গ্রীষ্মকালীন বিষণ্নতা শীতকালীন বিষণ্নতার তুলনায় আরও গুরুতর বলে উল্লেখ করেছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নর্মান রোজেনথাল।
তার মতে, শীতকালীন বিষণ্নতায় রোগীরা অলসতার চেয়ে বেশি কষ্ট অনুভব করেন। অন্যদিকে গ্রীষ্মকালীন বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।
এ ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সব সময় দুঃখবোধ করেন। আর দুর্ভাগ্যবশত তারা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে নিজেদের ক্ষতি করার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন: মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ১০ উপায়
এর কারণ কী?
গ্রীষ্মকালীন এসএডি’র ঝুঁকি বেড়ে যায় মূলত তাপ, আর্দ্রতা ও পরাগের কারণে। জলবায়ু পরিবর্তন গ্রীষ্মের বিষণ্নতাকে আরও খারাপ করতে পারে বলে মত এই বিশেষজ্ঞের।
তিনি আরও জানান, গ্রীষ্মকালীন এসএডি একটি উষ্ণায়নের বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও পড়ুন: মানসিক শান্তি পেতেই ৯০ শতাংশ মানুষ পরকীয়া করেন, বলছে সমীক্ষা
কীভাবে গ্রীষ্মের এসএডি মোকাবেলা করবেন?
আপনি যদি এ সময় বিষণ্নতার মতো উপসর্গগুলো অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা নিন। বিশেষজ্ঞের মতে, প্রচণ্ড গরমে শীতল থাকার চেষ্টা করুন।
এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খান, মানসিক প্রশান্তির চর্চা করুন ও হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। আর একা একা না থেকে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/এএসএম